আবার হ্যাক হল রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের স্টাডি অ্যাপ, অতিরিক্ত ফি নিয়ে অদ্ভুত বার্তা হ্যাকারের
মাসখানেকের মধ্যে দ্বিতীয়বার হ্যাক হল রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজের স্টাডি অ্যাপ। সোমবার ভোরে অ্যাপ ব্যবহারকারী পড়ুয়াদের কাছে একটি নোটিফিকেশন আসে এবং সেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি নিয়ে অদ্ভুত মন্তব্য করা হয়েছে। বলা হয়েছে, “তোমাদের মত ব্যবসায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে বলতে চাইছি, এত টাকা মাশুল নেওয়া বন্ধ করো, প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী এত টাকা দিতে সমর্থ নয় কিন্তু তাদের শিক্ষার অধিকার রয়েছে। এটা অনুরোধ নয় নির্দেশ, মনে থাকে যেন!”
আগেরবার যখন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির অ্যাপ হ্যাক হয়েছিল সেখানে লেখা ছিল, “আমরা বাংলাদেশের খান সাইবার আর্মি, তোরা বোকা ভারতীয়।” এবার বিদ্যালয়ের ফি নিয়ে বার্তা দেওয়া হয়েছে। কলেজের কর্ণধার রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত মনে করেন এগুলো করা হচ্ছে বিভ্রান্তি ছড়ানোর উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন, “প্রথমত আমি এটাকে পুরোপুরিভাবে হ্যাকিং হিসেবে গণ্য করছি না। আমাদের সাইবার এক্সপার্টরা বলছেন কেউ হয়তো অ্যাপের পাসওয়ার্ড সংগ্রহ করে ইচ্ছাকৃতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করছে। আগেরবার যখন ঘটনাটি ঘটে আমরা পুলিশের কাছে আবেদন জানিয়েছিলাম কিন্তু তারা এক্ষেত্রে কি অ্যাকশন নিয়েছেন আমরা জানি না। এবার যখন দ্বিতীয় ঘটনা ঘটে গেছে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতিষ্ঠান অ্যাপের সুরক্ষা আরেকটু বৃদ্ধি করব। আগেরবার তারা লিখেছিল বাংলাদেশ থেকে কাজটি করেছে কিন্তু আমরা আইপি অ্যাড্রেস ট্রেক করে দেখেছি সেটা ভারতের। অর্থাৎ এটা শিলচর হতে পারে অথবা দেশের অন্যান্য কোনও এলাকায় কিন্তু বিদেশের নয়।”
অতিরিক্ত ফি সংগ্রহের যে মন্তব্য করা হয়েছে এই প্রসঙ্গে রুদ্র নারায়ণ গুপ্ত বলেন, “সরকারের ধার্য করা অনুপাত থেকে কম মাশুল সংগ্রহ করি আমরা। এব্যাপারে ছাত্র-ছাত্রী এবং অভিবাবকরা আমাদের সঙ্গে কথা বলতেই পারেন। তবে যারা কাজটি করেছে, অযথা বিভ্রান্তিমূলক বার্তা দেওয়াই তাদের উদ্দেশ্য। এতে আমাদের ছাত্র-ছাত্রী বা তাদের অভিভাবকদের উপর কোনও প্রভাব পড়বে না। আমরা ধীরে ধীরে অফলাইন ক্লাস জোরদার করতে চাইছি কেননা অনলাইন ক্লাসে কিছু খামতি থেকেই যায়। শিক্ষকরা লক্ষ্য করেছেন অনেক সময় প্রয়োজনীয় ক্লাসে অনলাইন পদ্ধতিতে ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি কম থাকছে। যেহেতু এখনও করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়নি, আমরা ছাত্র-ছাত্রীদের জোর করে ক্লাসে আসতে বলতে পারছি না। কিন্তু সুরক্ষা ব্যবস্থা সঠিক রেখে পুরনো গতিতে অফলাইন ক্লাসে আমাদের ফিরতে হবে।”
শুধুমাত্র রামানুজ গুপ্ত কলেজ নয়, পরবর্তীতে ঐতিহ্যবাহী গুরুচরণ কলেজ সহ অন্যান্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অ্যাপ হ্যাক হয়েছিল। কিছু কিছু ক্ষেত্রে একই বার্তা আলাদা আলাদা প্রতিষ্ঠান উদ্দেশ্যে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে ছিল অসমীয়া-বাঙালি প্রসঙ্গ টেনে বিদ্বেষমূলক কিছু কথাবার্তাও। বলাই বাহুল্য সবগুলোই ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে বিভ্রান্তি ছড়ানোর প্রচেষ্টা। পুলিশের আধিকারিকরা জানিয়েছেন, তারা খবর পাওয়ার পর সাইবার এক্সপার্ট দলকে এগুলো দেখার কাজে লাগিয়েছেন। তবে এর থেকে বেশি তথ্য তারা জনসমক্ষে তুলে ধরেননি।
Comments are closed.