ভ্যাকসিন নিলেন ডিসি, এসপি সহ সরকারি আধিকারিকরা, "ভয় নেই, কোন পার্শপ্রতিক্রিয়া হয়নি," বললেন জেলাশাসক
সারাদেশের সঙ্গে কাছাড় জেলায় শুরু হয়েছিল কোভিড ভ্যাকসিন প্রদান প্রক্রিয়া। প্রথম এবং দ্বিতীয় পর্যায়ে স্বাস্থ্যকর্মী এবং সুরক্ষাকর্মীদের ভ্যাকসিন দেওয়া হয়েছিল। এবার তৃতীয় পর্যায়ে নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন দেওয়া হচ্ছে। বৃহস্পতিবার দুপুরে জেলাশাসক কীর্তি জাল্লি, পুলিশসুপার বিএল মিনা সহ অন্যান্য আধিকারিকরা কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন গ্রহণ করেন। এদিন বিকেল তিনটে নাগাদ শিলচর সিভিল হাসপাতালে উপস্থিত হন তারা এবং একে একে ভ্যাকসিন নেন। স্বাস্থ্যকর্মীরা তাদের কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে অনুরোধ করেন, কিন্তু জেলাশাসক এবং পুলিশসুপার বলেন নির্বাচনের কাজে একেবারেই সময় নেই। তবে তাদের কোনও পার্শপ্রতিক্রিয়া হয়নি অত্যন্ত স্বাভাবিক এবং সুস্থ অবস্থায় নিজের কাজে যোগ দিয়েছেন দুজনেই।
ভ্যাকসিন-কক্ষ থেকে বেরিয়ে দুজনেই বলেন একেবারে অসুবিধে হচ্ছেনা। পাশাপাশি প্রত্যেক সরকারী কর্মচারী এবং পুলিশ আধিকারিককে এগিয়ে এসে ভ্যাকসিন নিতে আহ্বান জানান তারা। জেলাশাসক বলেন, “স্বাস্থ্য বিভাগ তাদের অ্যাপের মাধ্যমে আজ আমার ভ্যাকসিন নেওয়ার দিন নির্ধারণ করেছিলেন। এর আগে বরিষ্ঠ চিকিৎসক থেকে শুরু করে জেলার বিভিন্ন স্তরের মানুষ ভ্যাকসিন নিয়েছেন এবং প্রত্যেকেই সুস্থ আছেন। আজ যখন নিজে ভ্যাকসিন নিয়েছি এবং উপলব্ধি করেছি, সেখান থেকে বলতে পারি, এর কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই। নির্বাচনে অংশ নেওয়া প্রত্যেক ব্যক্তিকে ভ্যাকসিন নিতে অনুরোধ করা হয়েছে। আজ এখানে দাঁড়িয়ে আমিও তাদের উদ্দেশ্যে আবার একই অনুরোধ রাখছি, নির্বাচনের প্রায় এক মাস বাকি এবং আপনারা ভ্যাকসিন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব নিয়ে নিন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে নতুন করে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করেছে আমরা আগে থেকে যতটা তৈরি থাকবো, ততই মঙ্গল।”
পুলিশসুপার বলেন, “আমাদের বিভিন্ন আধিকারিকরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিলেন এবং সুস্থ হয়েছেন। এবার নির্বাচনে পুলিশের আধিকারিকরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন ফলে তাদের সুরক্ষা আমাদের কাছে অত্যন্ত জরুরী একটি বিষয়। আজ আমি ভ্যাকসিন নিয়েছি এবং প্রত্যেক পুলিস আধিকারিকের কাছে অনুরোধ রাখছি আপনারাও ভ্যাকসিন গ্রহণ করুন। আগামীতে বিভাগের অন্যান্য আধিকারিকরাও এই প্রক্রিয়ায় যোগ দেবেন।”
কাছাড় জেলায় প্রথম কোভিড ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন সিভিল হাসপাতালে ইএনটি বিভাগের চিকিৎসক ডাঃ জুড়ি শর্মা। তার সঙ্গে হাসপাতালে আরও নয় জন ডাক্তার এবং নার্স ভ্যাকসিন নিয়ে ঐতিহাসিক মুহূর্তের সাক্ষী হয়েছিলেন। পরবর্তীতে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া, পদ্মশ্রী পুরস্কার প্রাপ্ত চিকিৎসক ডাঃ রবি কান্নান থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর্মী প্রথম পর্যায়ে ভ্যাকসিন নিয়েছেন। পরবর্তীতে সমাজের বিভিন্ন বরিষ্ঠ ব্যক্তিরা এই তালিকায় নাম লিখিয়েছেন। এবার কাছাড়ের জেলাশাসক এবং পুলিশ সুপার একসঙ্গে ভ্যাকসিন গ্রহণ করে জনগণের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা দিয়েছেন।
কাছাড় জেলায় কোভিশিল্ড ভ্যাকসিন ব্যবহার করা হচ্ছে। যারাই ভ্যাকসিন নেন, তাদের আধঘন্টা অবজারভেশনে রাখা হয়, এরপর তারা বেরিয়ে আসেন। এখনও কোনও ব্যক্তির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা যায়নি।
এদিকে হাইলাকান্দির জেলাশাসক মেঘ নিধি দাহাল কিছুদিন আগে ভ্যাকসিন গ্রহণ করেছেন এবং জনগণের উদ্দেশ্যে বার্তা দিয়েছেন প্রত্যেকেই যেন এগিয়ে এসে নিজেদের করোনা ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত করার দিকে একধাপ এগিয়ে রাখেন।
Comments are closed.