পরীক্ষা অফলাইনেই হচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ অধ্যক্ষদের যৌথ সিদ্ধান্ত; অব্যাহত ছাত্র-প্রতিবাদ
বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্ডারগ্রাজুয়েট কোর্সের পরীক্ষা শুরু হচ্ছে ৬ এপ্রিল থেকে যেটা হবে অফলাইন মোডে। এর বিরুদ্ধে প্রায় তিন দিন ধরে ছাত্র-ছাত্রীরা শিলচর শহরে প্রতিবাদ করছে এবং শেষমেষ জেলা প্রশাসনের মধ্যস্থতায় সোমবার বিকেলে একটি বৈঠক হয়। বৈঠকে অংশ নেন উপত্যকার প্রত্যেকটি কলেজের অধ্যক্ষ, বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার ও কন্ট্রোলার অব এক্সামিনেশন এবং ছাত্র-ছাত্রীদের প্রতিনিধিরা। প্রায় দেড় ঘণ্টা চলা বৈঠকে শেষমেষ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় পরীক্ষা বাতিল হবে না এবং সেটা অফলাইন মোডেই সম্পন্ন হবে। এতে ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত ক্ষুব্ধ হয় এবং জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে ধর্নায় বসে, এতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে।
অতিরিক্ত জেলাশাসক দীপক জিডুং প্রশাসনের তরফে বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজ কর্তৃপক্ষের বৈঠকে আমরা শুধুমাত্র মধ্যস্থতা করেছি। তারা জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে পরীক্ষার পদ্ধতি বদলানোর প্রয়োজনীয়তা
নেই এবং সেটা সম্ভব নয়। করোনা পরিস্থিতির জন্য পরীক্ষা পিছিয়ে নেওয়ার মতো কোনও নির্দেশ আমাদেরকে দেওয়া হয়নি, ফলে আমরা এক্ষেত্রে তাদের কিছু বলতে পারিনা।”
শেষমেষ দাবি উঠেছিল, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়া হোক, তবে এই সিদ্ধান্ত মানছেন না বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। রেজিস্ট্রার পিকে নাথ জানিয়েছেন, পরীক্ষা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি, প্রত্যেক কলেজের অধ্যক্ষ একসঙ্গে রাজি হয়েছেন পরীক্ষা অফলাইন মোডে নেওয়ার জন্য। আমরা তাদেরকেই সিদ্ধান্ত নিতে বলেছিলাম এবং তাদের সিদ্ধান্তের উপর ভিত্তি করে পরীক্ষা হবে।”
তবে পড়ুয়ারা এবিষয়ে কিছুতেই নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসতে রাজি হচ্ছেন না। তারা জেলাশাসক কার্যালয়ের সামনে মাটিতে বসে ধর্ণা দিচ্ছেন। তাদের বয়ান, “বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব পরীক্ষা হচ্ছে সেখানে অনলাইন পদ্ধতি রাখা হয়েছে। এমনকি শিলচর এনআইটির মত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনলাইনে পরীক্ষা নিচ্ছে। তাহলে আমাদের সঙ্গে এই ব্যবহার কেন? কাল পরীক্ষা দিতে গিয়ে যদি কোনও ছাত্র-ছাত্রী করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হয় এবং তার কোনও বড় ক্ষতি হয়ে যায়, সেই দায় কে নেবে? আমরা এইসব প্রশ্ন করেছিলাম কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসন আমাদের কথা এড়িয়ে গেছেন। আমরা এই ব্যবহার মেনে নিতে পারছি না এবং আন্দোলন চলবে।”
পুলিশের তরফে অতিরিক্ত পুলিশসুপার জগদীশ দাস জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয় এবং ছাত্রদের মধ্যে সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তারা কোনো কথা বলছেন না। তবে জেলায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বজায় রাখা তাদের দায়িত্ব, ফলে বাহিনীরা এখানে রয়েছেন। কিছু ছাত্র পুলিশ আধিকারিকদের ধাক্কা দিয়েছিল, তবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া গেছে।
এদিন বৈঠকে গুরুচরণ কলেজ, মহিলা কলেজ সহ অন্যান্য কলেজের অধ্যক্ষরা অংশ নিয়েছিলেন, তবে তারা কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি। কেউ কেউ ছাত্রদের সামনে দিয়েই বেরিয়ে গেছেন, কিন্তু ছাত্ররা তাদের আটকায়নি, বরং জেলা প্রশাসন আধিকারিকদের আটকে রাখা হয়েছে।
Comments are closed.