কোভিড প্রটোকল মেনেই শুরু টিডিসি অড-সেমিস্টারের পরীক্ষা, প্রথমদিনে উপস্থিতি ৯৮ শতাংশ
বরাক উপত্যকার বিভিন্ন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা লাগাতার তিনদিন আন্দোলন করার পরও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অনলাইনে পরীক্ষা নিতে রাজি হননি। বুধবার স্নাতক স্তরের অড-সেমিস্টারের পরীক্ষা শুরু হয় এবং এতে ছাত্রছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের সূত্রে প্রাপ্ত খবর অনুযায়ী ৯৮ শতাংশের বেশি উপস্থিতি পরীক্ষায় লক্ষ্য করা গেছে। অর্থাৎ পরীক্ষার প্রতি পড়ুয়াদের আস্থা চোখে পড়েছে।
প্রথম দিন অনার্স বিষয়ের পরীক্ষা ছিল এবং ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে কম ছিল। বৃহস্পতিবার থেকে পাস কোর্সের পরীক্ষাও শুরু হচ্ছে। এতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা তুলনামূলকভাবে বেশি থাকবে। উপত্যকার বিভিন্ন কলেজের কর্তৃপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, তারা আগে থেকেই ক্লাসরুম গুলো স্যানিটাইজ করেছিলেন এবং প্রত্যেক ছাত্রের জন্য পরীক্ষার কক্ষে যাওয়ার আগে মাস্ক রাখা হয়েছিল। প্রত্যেকদিন পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সেই কক্ষটি স্যানিটাইজ করা হবে, এরপরেই পরবর্তী পরীক্ষার জন্য ছাত্র-ছাত্রীদের সেখানে বসতে দেওয়া হবে।
কাছাড় কলেজের অধ্যক্ষ সিদ্ধার্থ শংকর নাথ বলেন, “সাধারণত পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের বসার জায়গায় একটা নির্দিষ্ট দূরত্ব থাকে, ফলে সামাজিক দূরত্বের নিয়ম পরীক্ষার ক্ষেত্রে বজায় থাকে। আমরা প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীর জন্য মাস্ক এবং স্যানিটাইজারের ব্যবস্থা করেছি। প্রথম দিন ছাত্রছাত্রীরা অত্যন্ত উৎসাহ নিয়ে পরীক্ষায় এসেছে এবং আমাদের কলেজে উপস্থিতি ছিল প্রায় ৯৯ শতাংশ। সাধারণ ক্ষেত্রে পরীক্ষায় এমনটাই উপস্থিতি থাকে, ফলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে বলেই মনে করছি আমরা।”
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদোষ কিরণ নাথ বলেন, “ছাত্র-ছাত্রীদের মনে যে আশঙ্কা ছিল, সেটা দূর করতে আমরা পর্যাপ্ত পদক্ষেপ নিয়েছি। ৬ এপ্রিল থেকেই বিভিন্ন পরীক্ষা শুরু হয়েছে এবং যারাই পরীক্ষা দিতে গেছে প্রত্যেকে আশ্বস্ত হয়ে বাড়ি ফিরেছে। পরীক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের উপস্থিতি বুঝিয়ে দিয়েছে তারা আমাদের উপর আস্থা রাখছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা প্রত্যেক কলেজ অত্যন্ত সুন্দরভাবে পরীক্ষা আয়োজন করেছে এবং পুরো প্রক্রিয়া এভাবেই সম্পন্ন হবে বলে আমরা আশাবাদী।”
তবে এরই মধ্যে একটি উড়ো খবর বেরিয়েছিল, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ নাকি প্রত্যেক ছাত্র-ছাত্রীকে বলেছেন, যেহেতু করোনা পরিস্থিতিতে পরীক্ষা হচ্ছে, কারো সংক্রমণ হলে সেই দায় নিজেই নেবেন, এমনটা লিখিতভাবে দেওয়ার জন্য। তবে ছাত্র-ছাত্রী এবং শিক্ষকরা জানান এটা একেবারেই ভুল তথ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে কন্ট্রোলার অফ এক্সামিনেশন সুপ্রতীক দত্তরায় বলেন, “এটা একেবারেই মিথ্যা প্রচার, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কখনই এমনটা নির্দেশ দেয়নি। প্রথম দিনের পরীক্ষা অত্যন্ত সুন্দরভাবে সম্পন্ন হয়েছে এবং ছাত্র ছাত্রীরা স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে যোগ দিয়ে প্রমাণ করেছে তারা আমাদের সঙ্গে আছে। আমি প্রত্যেক কলেজের কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ দিতে চাই এত সুন্দর ভাবে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য।”
Comments are closed.