মাঝরাতে এনআইটিতে আক্রান্ত ভেনগার্ড সিকিউরিটির এমডি ও তার পরিবার, গ্রেফতার ৩
শিলচর এনআইটির সুরক্ষার দায়িত্বে থাকা ভেনগার্ড সিকিউরিটি সার্ভিসের এমডি রঞ্জিত কুমার দাস এবং তার পরিবারের সদস্যদের উপর মঙ্গলবার গভীর রাতে হামলা চালিয়েছে একদল দুষ্কৃতি। রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ তাদের কোয়াটারের সামনে একদল দুষ্কৃতি প্রথমে রঞ্জিত কুমার দাসের উপর হামলা চালায়। তাকে বাঁচাতে গিয়ে শিকার হন তার দুই ছেলে এবং শেষমেষ স্ত্রী এবং পুত্রবধূ। সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূর তলপেটে লাথি মারে এক দুষ্কৃতি। তাদের কাপড় চোপড় টেনে ছিঁড়ে ফেলার চেষ্টা করে। ঘটনার পর পরিবারের বয়ানের উপর নির্ভর করে তিন ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ।
হামলার শিকার হওয়ার পর রাতেই তারা ঘুঙ্গুর থানায় উপস্থিত হন এবং পুলিশের কাছে পুরো ঘটনা তুলে ধরেন। রঞ্জিত কুমার দাসের স্ত্রী বলেন, “রাত সাড়ে এগারোটা নাগাদ যখন আমার স্বামী বাড়ি ফিরছিলেন, গেটের সামনে ৮-১০ জন যুবক তাকে আটকায়। তারা অত্যন্ত নোংরা ভাষায় গালাগাল দিতে থাকে এবং একসময় ধাক্কাধাক্কি শুরু করে। আমি ফ্ল্যাট থেকে সেটা দেখতে পাই এবং দৌড়ে সেখানে যাই। ততক্ষণে আমার বড় ছেলেও সেখানে পৌঁছে গেছে এবং তাকেও মারতে শুরু করে দিয়েছে স্থানীয় কিছু যুবক। আমি যাওয়ার পর তারা আমার ওপর চড়াও হয়। আমি একজন মহিলা এবং তাদের থেকে বয়সে বড়, তবু অত্যন্ত অশ্রাব্য ভাষায় গালাগাল দেওয়ার পাশাপাশি আমার পরনের কাপড়ের একটা অংশ ছিড়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না দেখে আমার সন্তানসম্ভবা পুত্রবধূও দৌঁড়ে এগিয়ে যায়, এক যুবক তার তলপেটে লাথি মারে। এতটা হিংস্র কি করে হতে পারে মানুষ, আমি ভাবতেই পারছিলাম না। শেষমেষ হাতজোড় করে ক্ষমা চেয়ে তাদের কাছ থেকে আমরা রক্ষা পাই। তবে এমন ঘটনা আর ঘটবে না এটাতো বলতে পারছি না, তাই সুরক্ষার জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছি।”
তাদের বয়ানের উপর ভিত্তি করে রাজেন গোয়ালা, ছোটলাল দুষাদ এবং জাকির মোহাম্মদ নামের তিন ব্যক্তিকে রাতেই আটক করেছে পুলিশ। তবে পরিবারের তরফে আরো কিছু মানুষের নাম এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। এরা হলেন রাজ রবিদাস, রাহুল তেওয়ারিয়া, পাপ্পু গোয়ালা সহ অন্যান্যরা। পুলিশের তরফে জানানো হয়েছে ঘটনার তদন্ত হবে। ফ্ল্যাটের সামনে সিসিটিভি ক্যামেরা ছিল, সেটার ভিডিও সংগ্রহ করে সেখান থেকে পুরো ঘটনার বৃত্তান্ত দেখা হবে এবং যারা হামলা চালিয়েছে তাদের শনাক্ত করে গ্রেফতার করা হবে।
ঘটনার পেছনে মূল কারণ কি সেটাও খতিয়ে দেখছে পুলিশ। তবে গভীর রাতে দলবল নিয়ে এভাবে হামলা চালানো এবং সন্তানসম্ভবা মহিলার পেটে লাথি মারা, বয়স্ক মহিলার কাপড় ছিড়ে দেওয়া, এগুলো অত্যন্ত গর্হিত অপরাধ। দোষীদের বিরুদ্ধে বেশ কিছু ধারায় মামলা গ্রহণ করেছে পুলিশ।
Comments are closed.