করোনা আতঙ্কের মাঝেই এক জমজমাট মহিলা ফুটবল প্রতিযোগিতা আয়োজন করল শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। এজন্য স্পনসর হিসেবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছিল সাময়িক প্রসঙ্গ পত্রিকা গোষ্ঠী। মহিলা ফুটবলের উন্নতি ও প্রসারের জন্য গত কয়েক বছর থেকেই ডি এস এর সঙ্গে একযোগে কাজ করছে সাময়িক প্রসঙ্গ। ২০০৬ সালে প্রথমবার অনুষ্ঠিত হয়েছিল এই মহিলা ফুটবল। গতবছর করোনার জন্য এই প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়নি। এছাড়াও বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কারণে এই প্রতিযোগিতা স্থগিত অথবা বাতিল হয়েছে। তা সত্ত্বেও কিন্তু এই অঞ্চলে মহিলা ফুটবল টুর্নামেন্টের ভালো জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে সত্যিকারের অর্থে মহিলা ফুটবলের জনপ্রিয়তাকে সঠিক ভাবে কাজে লাগাতে পারছে না ডি এস এ।
এবার সাময়িক প্রসঙ্গ কাপ মহিলা লিগ কাম নকআউট ফুটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে কালাইন স্পোটস ক্লাব। ফাইনালে তারা হারায় ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন শিলচরের গ্রিন হর্নেট ক্লাবকে। টাইব্রেকারে ৫-৪ গোলের ব্যবধানে। সেই সুবাদে এবারের আসরে অপরাজিত থাকল কালাইনের দলটি। লিগ সহ ফাইনালে তারা এবার অপ্রতিরোধ্য দল। শেষ বার এই গ্রিন হনেট দলের কাছে ফাইনালে হেরে গিয়েছিল কালাইন। ফলে দুই বছর আগে সেই হারের বদলা নিয়েছে বলা যায়।
সদ্যসমাপ্ত মহিলা ফুটবলের আসরে পাঁচটি দল অংশ নিয়েছিল। ২০০৬ সাল থেকে মহিলা ফুটবল শুরু হলেও এখন পর্যন্ত দলের সংখ্যা ৪-৫ এর মধ্যেই সীমিত রয়েছে। যা স্থানীয় মহিলা ফুটবল এর জন্য মোটেও ভালো সংকেত নয়। অথচ এই অঞ্চলে মহিলা ফুটবলের ভালো জনপ্রিয়তা রয়েছে। তবে আসল সমস্যাটা হলো সেই ২০০৬ সাল থেকে বছরে শুধু একটি টুনামেন্ট হচ্ছে। আজ অবদি এই সংখ্যাটা বাড়েনি। এটা কিন্তু শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার এক ব্যর্থতা।
ভালো প্রতিভা থাকে সত্ত্বেও এখানকার মহিলা ফুটবলাররা তেমন এক্সপোজার পান না। গোটা বছরে শুধু একটি টুনামেন্ট তাদের কপালে জোটে। অথচ শিলচর থেকে একাধিক মহিলা ফুটবলার রাজ্য দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। বরাক উপত্যকায় কালাইন ও লক্ষ্মীপুরে মহিলা ফুটবলার ভালো চর্চা রয়েছে। কালাইনে তো দু’তিনটে মহিলা ফুটবল দল রয়েছে। প্রতিবছরই সেখানে একাধিক টুর্নামেন্ট হয়ে থাকে। সীমিত পরিধির মধ্যেও নিয়মিত মহিলা ফুটবলের আয়োজন হচ্ছে কালাইনে। সে তুলনায় শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা অনেকটাই পিছিয়ে।
গ্রামাঞ্চলের খেলোয়াড়রা শহরে এসে খেললেও বাড়তি প্রেরণা পেয়ে থাকেন। এটা তাদের মোটিভেট করে থাকে। তবে এই মুহূর্তে তারা কোনো প্রেরণা পাচ্ছেন না। দুটো ম্যাচ খেলেই তাদের সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে। গ্রামাঞ্চলের এমন অনেক খেলোয়াড় রয়েছেন যারা পর্যাপ্ত সুযোগই পান না। আর যারা পাচ্ছেন, তারা সীমিত সুযোগে নিজেদের প্রতিভা তুলে ধরতে পারছেন না। একজন খেলোয়াড় যত সুযোগ পাবেন ততই তার প্রতিভার বিকাশ ঘটবে।
এবার সময় এসে গেছে এ নিয়ে নতুন করে ভাবনা চিন্তা করার। গোটা বছরে শুধু একটা টুর্নামেন্ট আয়োজন করলে সেই তিমিরেই থেকে যাবে মহিলা ফুটবল। এক্ষেত্রে গ্রামীণ ফুটবলারদের বাছাই করে বছরে দুটি তিনটি ক্যাম্প অবশ্যই আয়োজন করতে পারে ডি এস এ। এমনটা করলেও স্থানীয় মহিলা ফুটবল লাভবান হবে। খেলোয়াড়রা ভাল অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবে। তাই এবারে এনিয়ে নতুন করে ভাবা উচিত সংস্থার।
Comments are closed.