কোভিড কেড়ে নিল প্রাক্তন রনজি ক্রিকেটার সুবীর দত্তরায় কে
আরো এক প্রাক্তন তারকাকে কেড়ে নিল মহামারী করোনা ভাইরাস। এবার কোভিড ১৯ এর শিকার হলেন শিলচরের প্রাক্তন রনজি ক্রিকেটার সুবীর দত্তরায়। শুক্রবার সন্ধে ৭:০৫ মিনিটে না ফেরার দেশে পাড়ি দেন প্রাক্তন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিলচর মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৬৫। এদিন সকালে তাকে ভর্তি করানো হয়েছিল। তার আগে নিউরো সমস্যায় আক্রান্ত সুবীর দত্তরায় কে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। সেখানে ছয় মাইলের রহমান হাসপাতলে তার চিকিৎসা চলছিল। চিকিৎসায় ভালো সাড়াও দিচ্ছিলেন। তবে গতকাল তার কোভিড রিপোর্ট পজিটিভ আসে। যার ফলে তাকে শিলচরে ফিরিয়ে আনা হয়। এবং ভর্তি করানো হয় মেডিকেল কলেজে। তবে শেষ রক্ষা হয়নি।
তার মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়তেই স্থানীয় ক্রীড়া মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। শোক জানিয়েছে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা। সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং জানিয়েছেন, আগামীকাল সংস্থার পতাকা অর্ধনমিত রাখা হবে। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আজীবন সদস্য ছিলেন সুবীর দত্তরায়। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, ভ্যাকসিন এর দুটি ডোজ নিয়েছিলেন তিনি। গত ২৩ মে শিলচরে তার করোনা টেস্ট হয়। সেখানে তার রিপোর্ট আসে নেগেটিভ। তবে গুয়াহাটি তে গিয়ে করোনা আক্রান্ত হন প্রাক্তন তারকা।
১৯৭২ সালে টাউন ক্লাবের জার্সিতে সুবীর দত্ত রায়ের ঘরোয়া লিগে অভিষেক ঘটে। এরপর সিনিয়র জেলা দলে অভিষেক ঘটে ১৯৭৪ সালে। এরপর থেকেই টানা সিনিয়র জেলা দলের প্রতিনিধিত্ব করেছেন। নব্বইয়ের দশক পর্যন্ত আন্তঃজেলা সিনিয়র ক্রিকেটে খেলেছেন। ১৯৮৭ সালে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় ব্রেক পান। সেবার তিনি ডাক পান রনজি দলে। শিলচরের সতীন্দ্রমোহন দেব স্টেডিয়ামে ১৯৮৭ সালের ৮ জানুয়ারি থেকে বসেছিল ত্রিপুরার বিরুদ্ধে রনজি ম্যাচ এর আসর। শিলচরের মাটিতে সেটাই ছিল প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ম্যাচ। তবে স্কোয়াডে থাকলেও প্রথম একাদশের বাইরেই থাকতে হয়েছিল শিলচরের উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান কে। এ নিয়ে সারাটা জীবন তার দুঃখ ছিল। অনেক বারই বলেছিলেন, ‘এত কাছে এসেও রনজি খেলতে পারলাম না।’ সেই এক বারই রাজ্য দলে ডাক পেয়েছেন তিনি। এরপর আর কখনও রনজি স্কোয়াডে ডাক পাননি। তবে অনূর্ধ্ব ২২ রাজ্য দলে একবার খেলেছিলেন। ঘরোয়া লিগ সহ সিনিয়র জেলা দলে চুটিয়ে খেলেছেন। স্থানীয় ক্রিকেটের অন্যতম তারকা ছিলেন প্রাক্তন উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান। ঘরোয়া ক্রিকেটে টাউন ক্লাব, তরুণ সংঘ, তারাপুর এসি এবং পাড়ার ক্লাব যোগাযোগ সংঘের হয়ে সুনামের সঙ্গে খেলেছেন। অনূর্ধ্ব ১৫ রাজ্য দলের নির্বাচকও ছিলেন একবার।
১৯৭৪ সালে আন্তঃজেলা ক্রিকেটে সুবীর দত্তরায় ও তার ভাই সুজয় দত্তরায় একই সঙ্গে শিলচর দলের প্রতিনিধিত্ব করেছিলেন। নব্বইয়ের দশকে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন সুবীর দত্তরায়। এরপর তিনি যোগ দেন কোচিংয়ে। শিলচর সিনিয়র দলকে কোচিংও করিয়েছেন। তাই এমন একজনের মৃত্যুতে শোকাহত স্থানীয় ক্রীড়ামহল।
Comments are closed.