শিলচরে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে গুজব ছড়ালেন স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র, অস্বীকার ডিসি ও মেডিক্যালের অধ্যক্ষের
শনিবার সন্ধ্যেবেলা হঠাৎ করেই স্বাস্থ্য বিভাগের তরফে দায়িত্বপ্রাপ্ত এক কর্মচারি জেলা প্রশাসনের মিডিয়া গ্রুপে লিখলেন, শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের একটি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস কেস পাওয়া গেছে। কর্মচারিটি করোনা পরিস্থিতিতে মুখপাত্রের ভূমিকা পালন করছেন, তিনি একটি ভিডিওর মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির নাম সহ যাবতীয় বৃত্তান্ত তুলে ধরেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই খবরটি দাবানলের মত নিউজ চ্যানেল এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে। তবে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়, এমন কোনও খবর তারা স্বাস্থ্য বিভাগের কোনও আধিকারিককে জানাননি। জেলাশাসক কীর্তি জল্লিও খবরের সত্যতা স্বীকার করেননি। তিনি স্পষ্ট বলেন, “এত বড় খবর জেলাশাসক বা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ ছাড়া অন্য কেউ তুলে ধরতে পারবেনা। স্বাস্থ্যবিভাগের আধিকারিক হয়তো ক্লান্ত ছিলেন, তাই ভুল তথ্য তুলে ধরেছেন।”
করোনাকালে বরাক উপত্যকায় এখন পর্যন্ত ব্ল্যাক ফাঙ্গাসে আক্রান্ত হওয়ার কোনও ঘটনা সামনে আসেনি। এছাড়া জনমনে ব্ল্যাক ফাঙ্গাস বিষয়টি নিয়ে আগে থেকেই আতঙ্ক রয়েছে। স্বাস্থ্যবিভাগের আধিকারিকটি যে বার্তা ভিডিওর মাধ্যমে তুলে ধরেছেন সেটা হু হু করে শেয়ার হতে থাকে। শেষমেষ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের তরফ থেকে সহকারি অধ্যক্ষ ডাঃ ভাস্কর গুপ্ত একটি ভিডিও পাঠিয়ে জানিয়েছেন, “এমন কোনও তথ্য শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হয়নি। যেহেতু বিষয়টি আমাদের হাসপাতালের সঙ্গে জড়িত তাই জনগণকে স্পষ্ট ভাষায় বলে দিচ্ছি আপনারা ভুল তথ্যের উপর বিশ্বাস করবেন না। যদি এমন কোন ঘটনা হয় তাহলে আমরা দায়িত্ব নিয়ে বলছি, পর্যাপ্ত তথ্য জনসমক্ষে আসবে।”
জেলাশাসক সংবাদমাধ্যমের উদ্দেশ্যে একটি বার্তা তুলে ধরেছেন। “আমরা জানতে পেরেছি ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নিয়ে কিছু ভুল তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। জনগণের প্রতি আমার অনুরোধ, আপনারা এসব ভিত্তিহীন তথ্যের উপর বিশ্বাস করবেন না। আমি দায়িত্ব নিয়ে বলছি আজ শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোন ব্ল্যাক ফাঙ্গাশ কেস পাওয়া যায়নি।”
তিনি আরও বলেন, “আমাদের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিক হয়তো কাজের চাপে ভুল করে এ তথ্য তুলে ধরেছেন। আমরা এই বিষয়ে পর্যালোচনা করব। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ল্যাব রিপোর্ট আসার পর যদি দেখা যায় ফাঙ্গাস কেস রয়েছে আমরা জনসমক্ষে তুলে ধরবো। এই সময় আগে থেকেই জনমনে আতঙ্ক রয়েছে আমরা আর অতিরিক্ত আতঙ্ক ছড়াতে দিতে পারিনা।”
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ বলেন, ‘একজন ব্যক্তি পোস্ট কোভিড সমস্যা নিয়ে ভর্তি হয়েছেন এবং তার কিছু লক্ষণ রয়েছে যেগুলো সন্দেহজনক। আমরা কিছু প্রাথমিক পরীক্ষা করেছি এবং অন্যান্য পরীক্ষার জন্য তাকে তৈরি করা হচ্ছে। ব্ল্যাক ফাঙ্গাস নির্ধারণের জন্য যে পরীক্ষা প্রয়োজন সেটা হওয়ার পর রিপোর্ট আসতে অন্তত তিন দিন সময় লাগে। এখনও তার পরীক্ষাই হয়নি তাহলে কিভাবে বলা যাবে লোকটি ব্ল্যাক ফাঙ্গাসের কবলে রয়েছেন। আমরা জনগণকে বলব, আপনারা অযথা আতঙ্কিত হবেন না।”
Comments are closed.