Also read in

২০ লক্ষ টাকার ইয়াবা ট্যাবলেট সহ শিলচরে আটক ২ পাচারকারী

শিলচর শহরে দিনদুপুরে ২০ হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার করতে যাচ্ছিল দুই যুবক। তবে গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পুলিশ এদের খুব সাবধানে ধরে ফেলে এবং ট্যাবলেট বাজেয়াপ্ত করার পাশাপাশি দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়। আটক হওয়া দুই ব্যক্তি হচ্ছে শিলচর শহরের শিব কলোনি এলাকার বাপন রায় এবং তপোবন নগর এলাকার বাসিন্দা নৃপেশ দাস। পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী বাজেয়াপ্ত ইয়াবা ট্যাবলেট গুলোর আন্তর্জাতিক বাজার মূল্য প্রায় ২০ লক্ষ টাকা হবে।

রাজ্যে নতুন সরকার গঠন হওয়ার পর থেকে ড্রাগস বিরোধী অভিযান লাগাতার চলছে এবং প্রায় প্রতিদিন বরাক উপত্যকায় অন্তত একজন ব্যক্তি ইয়াবা ট্যাবলেট, হিরোইন, অথবা গাঁজা সহ আটক হচ্ছে। কিছু কিছু ক্ষেত্রে রাস্তার পাশে সিগারেট-গুটকার পাশাপাশি অনেকে ড্রাগসের ট্যাবলেট বিক্রি করছে এবং কেউ কেউ পুলিশের জালে ধরাও পড়েছে। এবার শিলচর শহরের এক ব্যস্ততম রাস্তায় দিনদুপুরে ড্রাগস পাচারকারী আটক হওয়ায় পরিস্থিতি আরও সন্দেহজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে। তাহলে কি পাচারকারীরা এখন এতটাই বেপরোয়া যে তারা সাধারণ স্কুটিতে করে দিনের আলোয় ড্রাগস নিয়ে রাস্তায় বেরোচ্ছে এবং তাদের মনে এতোটুকু ভয় থাকছে না!

পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, গোপন তথ্যের উপর ভিত্তি করে সোনাই পুলিশ এবং স্পেশাল টাস্কফোর্স যৌথ অভিযানে নামে। বৃহস্পতিবার দিনের আলোয় তারা সন্দেহজনক স্কুটি আটক করে এবং তার ডিকি থেকে উদ্ধার হয় কুড়ি হাজার ইয়াবা ট্যাবলেট। তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে এই পাচারে জড়িত থাকা আরেক ব্যক্তির নাম উঠে আসে। রাঙ্গিরখাড়ি এলাকার অজয় দেবনাথ নামের ওই ব্যক্তির বাড়িতে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ হানা দেয়, কিন্তু এর আগেই সে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। পুলিশের হানায় বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য এবং অনেকের সঙ্গে যোগাযোগের তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে হয়তো আগামীতে আরও অনেক তথ্য বেরিয়ে আসবে, যার মাধ্যমে আগামীতে পুলিশ বিভিন্ন অভিযান চালাতে সক্ষম হবে।

মনোযোগ রাজবংশী বলেন, “দুই ব্যক্তির পক্ষ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী অজয় দেবনাথের বাড়িতে আমরা হানা দেই এবং সেখানে ঝান্ডি মুন্ডা সহ বিভিন্ন জুয়ার সামগ্রী পাওয়া গেছে। এছাড়া যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তার বৃত্তান্ত জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে না, কিন্তু এগুলো আমাদের আগামীতে অন্যান্য অভিযান চালাতে সাহায্য করবে। এদিন যে দুই ব্যক্তি আটক হয়েছে এরা শিলচরের বাসিন্দা। তাদের সূত্রে যে লোকটির বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে সেও শিলচরের। তবে এতগুলো ড্রাগসের ট্যাবলেট কোথা থেকে কি করে এল, সেই সূত্র খুঁজে বের করতে হবে। আমাদের দল সেদিকেও নজর রাখছে।”

সম্প্রতি কাছাড় জেলার পুলিশসুপার বৈভব চন্দ্রকান্ত নিম্বালকর জানিয়েছিলেন, গত দুই মাসে জেলায় প্রায় আট কোটি টাকার ড্রাগস ধরা হয়েছে এবং বিভিন্ন অভিযানে প্রায় ৫০ জন লোক আটক হয়েছেন। তবে যারা আটক হন তাদের অনেকেই হয়তো জামিনের জন্য আবেদন করেন এবং জামিন পাওয়ার পর আবার নতুন পরিকল্পনা বানিয়ে ড্রাগস পাচারে লিপ্ত হন। এই ধারা ভেঙে দিতে পুলিশের তরফে বিশেষ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া হয়, এমনটাই জানান পুলিশ সুপার।

তিনি বলেন, “ড্রাগস পাচারকারীদের আটক করার পর আমরা তাদের বিরুদ্ধে কঠিন সেকশনে মামলা গ্রহণ করি এবং খুব তাড়াতাড়ি চার্জশিট পেশ করা হয়। এতে পাচারকারীরা সহজে জামিনের জন্য আবেদন করতে পারেনা। এছাড়া আমাদের বিশেষ নম্বরে অনেকেই ফোন করে বিভিন্ন খবর দিয়ে থাকেন যার সূত্রে সাফল্য আসতে শুরু করেছে। যারা আমাদের সাহায্য করছেন তাদের গোপনীয়তা এবং সুরক্ষার দায়িত্ব আমরা নিয়েছি। এভাবে পুলিশ এবং জনগণ একসাথে মিলে ড্রাগসের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে যেতে পারলে ভবিষ্যতে জেলার যুব সমাজ অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে পারবে।”

Comments are closed.