শিলচর মেডিক্যালের পাশে আবর্জনার স্তুপ থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় উদ্ধার অজ্ঞাতপরিচয় নবজাতকের মৃতদেহ
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পাশে আবর্জনার স্তূপে সোমবার সকালবেলা এক নবজাতক শিশুর মৃতদেহ দেখতে পান এলাকাবাসীরা। এতে এলাকায় চাঞ্চল্য দেখা দেয়, কারণ এলাকাবাসীর মতে শিশুটির সঙ্গে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিল লাগানো কার্ড রয়েছে। অর্থাৎ তার জন্ম হাসপাতালেই হয়েছিল বলে ধারণা করছেন এলাকাবাসীরা। তারা সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং স্থানীয় পুলিশ স্টেশনে খবর দেন। পুলিশের একটি দল এসে শিশুর মৃতদেহ উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। তবে এর পরবর্তী তথ্য এখনও জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়নি পুলিশ বিভাগের পক্ষ থেকে।
এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, তারা শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মেন গেট থেকে ৫০ মিটার দূরত্বে বাজারের পাশে আবর্জনার স্তূপে নবজাতকের মৃতদেহ দেখতে পান। একটি কাপড় দিয়ে মৃতদেহ ভালো করে বেঁধে প্যাকেটে ঢুকিয়ে সেটা ডাস্টবিনে ফেলে দেওয়া হয়েছিল। রাস্তায় ঘোরাফেরা করা কুকুর হঠাৎ করে একটি প্যাকেটের আশে পাশে জড়ো হওয়ায় এলাকাবাসীর সন্দেহ হয় এবং তারা সামনে গিয়ে দেখেন একটি শিশুর মৃতদেহ রয়েছে। এর সঙ্গেই রয়েছে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সিল লাগানো একটি কার্ড। এভাবে রাস্তার পাশে নবজাতকের মৃতদেহ পাওয়া য়াওয়ায় এলাকার মানুষ আঁতকে ওঠেন।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের গেটের আশেপাশে একেবারে ভোর রাত থেকেই চা এবং অন্যান্য খাবার সামগ্রীর দোকান খুলে যায়। এর একটু দূরেই বসে সব্জির বাজার। এছাড়া ওষুধের দোকান গুলো প্রায় ২৪ ঘন্টাই খোলা থাকে। এত জনবহুল এলাকার মধ্যে এভাবে প্যাকেটে বেঁধে অত্যন্ত সাবধানে একটি শিশুর মৃতদেহ কে ফেলে গেল, এটা নিয়ে প্রশ্ন জাগতে শুরু করেছে। পুলিশের তরফে বলা হয়েছে তারা ঘটনার তদন্ত করছেন এবং সময়মতো পর্যাপ্ত তথ্য জনসমক্ষে তুলে ধরা হবে।
শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এখনো এব্যাপারে খবর পাননি। তবে এলাকার লোকেরা এই ঘটনার পর্যাপ্ত তদন্ত চাইছেন। শিশুটি জন্মের আগেই মারা গেছিলো না কেউ জন্মের পর তাকে মেরে এখানে ফেলে দিয়ে গেছে? যদি কেউ শিশুকে মেরে এভাবে ফেলে যায় তাহলে এর পেছনে কি শিশুটির মা-বাবা রয়েছেন না কোনও বাইরের লোক সেই কাজ করেছে? এমন প্রশ্ন করছেন এলাকাবাসীরা। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বরাক উপত্যকার বিভিন্ন এলাকা থেকে অত্যন্ত কঠিন অবস্থায় চিকিৎসার জন্য মায়েদের নিয়ে আসা হয়। হাসপাতালে শিশু এবং মায়েদের চিকিৎসার জন্য আলাদা বিল্ডিং গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ এখানে এসে আদৌ কি মানুষ সুরক্ষিত? এমন প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
উল্লেখ্য, গতবছর শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সীমানার দেওয়াল থেকে অদূরে শিবালিক পার্ক এলাকায় একটি নবজাতকের পায়ের অংশ কুকুরের মুখে দেখতে পেয়েছিলেন স্থানীয় লোকেরা। পরবর্তীতে এব্যাপারে আর কোনও তথ্য পাওয়া যায়নি। শিশুটি আদৌ হাসপাতালে ছিল, না বাইরে ছিল, কিছুই জানা সম্ভব হয়নি। এবার একইভাবে পরিত্যক্ত অবস্থায় এক নবজাতকের মৃতদেহ রাস্তার পাশে পাওয়ায় নানান প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
কাছাড় জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পার্থপ্রতিম শইকিয়া জানিয়েছেন, তারা এব্যাপারে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করছেন এবং জিজ্ঞাসাবাদের পর এই শিশুটির মৃত্যুর পিছনে কি কারণ, সেটা বেরিয়ে আসবে বলে মনে করছেন।
Comments are closed.