Also read in

করিমগঞ্জে দোকানদারের দায়ের কোপে আহত দুই পুলিশ কর্মী, পাল্টা আক্রমণে আহত দোকানদারও

করিমগঞ্জ জেলার ভাঙ্গা বাজার এলাকায় এক দোকানদারের দায়ের কোপে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন দুই পুলিশ কনস্টেবল। তাদের নাম আমিন উদ্দিন লস্কর ও বদরুল হোসেন লস্কর। আহত দুই পুলিশ কর্মী করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। ভাঙ্গা মালুয়া থানার আধিকারিক নবজ্যোতি বরা জানিয়েছেন, ঘটনার সূত্রপাত হয় কোভিড প্রটোকল অনুযায়ী দোকান পাঠ বন্ধ করা নিয়ে। সোমবার বেলা দুটোর পরেও ভাঙ্গা বাজার রোডের আব্দুল মন্নান নামের ব্যবসায়ী দোকান বন্ধ করেননি। কর্তব্যরত দুই পুলিশ কনস্টেবল আব্দুল মান্নানকে দোকান বন্ধ করতে বললে তিনি রাজি হননি। উল্টো নানান অশালীন মন্তব্য করতে থাকেন। দুই পক্ষের মধ্যে তর্কবিতর্কের পর ধারালো অস্ত্র নিয়ে পুলিশের উপর ঝাঁপিয়ে পড়েন এলাকাবাসীরা।

পুলিশের অভিযোগ, দোকানদার আব্দুল মান্নান ধারালো দায়ের কোপে দুই কনস্টেবলকে আহত করেছেন। এছাড়া কাচের টুকরো দিয়ে তাদের উপর আঘাত করা হয়েছে। আত্মরক্ষায় তারা আব্দুল মান্নানকে লাঠি দিয়ে মারধর করেন এতে দোকানদার আহত হয়েছেন। তাদের সবাইকে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যাওয়া হয়েছে। পাশাপাশি দোকানদারের বিরুদ্ধে কঠোর মামলা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন পুলিশ সুপার পদ্মনাভ বড়ুয়া।

পুলিশসুপার পদ্মনাভ বড়ুয়া এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন। বরাক বুলেটিনের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে তিনি জানিয়েছেন, দোকানদারের বিরুদ্ধে এটেম্পট টু মার্ডার সহ বেশ কিছু কঠিন ধারায় মামলা গ্রহণ করা হবে। তিনি বলেন, “এই কঠিন পরিস্থিতিতে পুলিশের জওয়ানরা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে কঠোর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। রাজ্য সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করছি এবং এর উদ্দেশ্য জনগণের মঙ্গল। অথচ জনগণ যদি আমাদের উপর ধারাল অস্ত্র দিয়ে আঘাত করেন তাহলে আমরা কেন মেনে নেব? দোকানদারের বিরুদ্ধে কঠোর ধারায় মামলা গ্রহণ করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে যাতে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির বিধান দেওয়া হয়, এব্যাপারে আদালতকে অনুরোধ জানানো হবে। তবে আপাতত পুলিশ কনস্টেবলের পাশাপাশি অভিযুক্ত দোকানদার নিজেও আহত অবস্থায় চিকিৎসাধীন।”

এদিকে ভাঙ্গা চৌমাথা ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে পুলিশের বিরুদ্ধে অযথা জনগণের উপর অত্যাচারের অভিযোগ করা হয়েছে। সমিতির সভাপতি কমরুল ইসলাম এবং সম্পাদক মঞ্জুর আহমদ বলেন, “পুলিশের এধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না। সাধারণ মানুষ সচেতন আছেন বলেই পরিস্থিতি এতটা নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এদিন দুপুরে আব্দুল মান্নান তার দোকানে কিছু বিক্রি করছিলেন না, কিছু একটা কাজে দোকানের একটা অংশ খানিকটা খোলা ছিল। পুলিশ আসার পর তিনি তাদের বলেন অল্প সময়ের মধ্যেই দোকান বন্ধ করে দেবেন। কিন্তু পুলিশের কর্মীরা অত্যন্ত বাজে ভাষায় তাকে গালাগাল দেন এবং লাগাতার হুমকি দিতে থাকেন। কথা বলতে বলতেই তারা লাঠি দিয়ে তাকে পেটাতে শুরু করেন এবং একসময় গুলি করার হুমকি দেন। এরপর পুলিশ তাকে দোকান থেকে টেনে-হেঁচড়ে বের করে এমন ভাবে মারপিট করে, যেন আব্দুল মান্নান কোনো উগ্রপন্থী। এই ঘটনার পর্যাপ্ত তদন্ত হোক এবং অভিযুক্ত পুলিশের বিরুদ্ধে শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। না হলে এলাকার ব্যবসায়ীরা আইনের দ্বারস্থ হবেন।”

Comments are closed.