বদরপুরে বাইক দুর্ঘটনায় নিহত ৩, উত্তেজিত জনতার রোষে পুলিশ, লাঠিচার্জ, গ্রেফতার ৬
রবিবার রাতে বদরপুরে দুই বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় এক অল্প বয়সী বাইক আরোহীর। সঙ্গে আরও দুই আরোহী গুরুতরভাবে আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন।
ঘটনাটি ঘটেছে রবিবার রাত এগারোটা নাগাদ। বদরপুর মেইন রোডের এসবিআইয়ের পুরনো ভবনের সামনের জাতীয় সড়কে এই দূর্ঘটনাটি সংঘটিত হয়। দুর্ঘটনার পরে এলাকা জুড়ে স্থানীয় জনগণের মধ্যে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে উত্তেজিত জনতার রোষের শিকার হয়েছেন এক পুলিশ কর্মী। তিনি খানিকটা আহত হয়েছেন এবং স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশকে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে। এতে কিছু মানুষ আহত হয়েছেন বলেও খবর পাওয়া গেছে। পুলিশের ওপর হামলার দায়ে ছয়জন স্থানীয়কে আটক করেছে পুলিশ।
জানা গেছে এদিন রাত ১১টা নাগাদ এএস-১০-ডি-৪৯১২ নম্বরের বাইকের সঙ্গে এএস-১০-ই-৭৭৩০ নম্বরের বাইকের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। স্থানীয়দের মতে দুটি বাইকই অত্যন্ত দ্রুতগতিতে আসছিল এবং দুর্ঘটনায় অনেক জোরে শব্দ হয়। এতে দুই বাইকের আরোহীরা ছিটকে পড়েন এবং অত্যন্ত গুরুতরভাবে আহত হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় বিশাল নাথ নামের ২৫-বছর বয়সের এক বাইক আরোহীর। তার বাড়ি বদরপুরের জঙলা কালীবাড়ি রোড এলাকায়। গুরুতর আহত অবস্থায় ২৪-বছর বয়সের আরেক বাইক আরোহী দীপাঞ্জন ঘোষকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়, কিন্তু কিছুক্ষণের মধ্যেই তার মৃত্যু হয়। বিপ্রজিৎ ঘোষে নামের আরেক বাইক আরোহীকে প্রথমে শ্রীগৌরী প্রাথমিক চিকিৎসা কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়, সেখান থেকে করিমগঞ্জ সিভিল হাসপাতালে এবং মাঝরাতে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। মেডিক্যালে রাত দুটো নাগাদ তারও মৃত্যু হয়। তিনজনেই বদরপুর এলাকার বাসিন্দা, তাদের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
দুর্ঘটনার পর পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশের একটি দল তৎক্ষণাৎ এলাকায় উপস্থিত হয়; কিন্তু উত্তেজিত জনতার মধ্য থেকে কিছু যুবক সাজি উদ্দিন নামের এক পুলিশ কনস্টেবলকে আঘাত করে। এতে তিনি কিছুটা আহত হয়েছেন। এরপর বদরপুর থানার ওসি দীপক কুমার শইকীয়া দলবল নিয়ে সেখানে উপস্থিত হন। পরিস্থিতি সামাল দিতে উত্তেজিত জনতার উপর লাঠিচার্জ করা হয়। জানা গেছে, শ্রীগৌরী হাসপাতালের ভিতরেও অনেক ভিড় দেখতে পেয়েছিলেন পুলিশের আধিকারিকরা। করোনা পরিস্থিতিতে এমন ভিড় মেনে নিতে পারেননি তারা এবং লাঠিচার্জ করে উত্তেজিত যুবকদের তাড়িয়ে দিতে বাধ্য হন। যদিও এতে জনমনে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অনেকেই পুলিশের লাঠিচার্জকে অমানবিক বলে আখ্যা দিয়েছেন।
পুলিশের গায়ে হাত তোলার দায়ে ছয়জন স্থানীয়কে আটক করা হয়েছে বলে জানা গেছে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, তাজা দুই যুবকের মৃত্যুর পর পরিবার এবং বন্ধু-বান্ধবেরা যখন কান্নাকাটি করছিলেন, হঠাৎ করে পুলিশের আধিকারিকরা এসে সবাইকে মারতে শুরু করেন; তাদের এলোপাথাড়ি আঘাতে অনেকেই আহত হয়েছেন।
Comments are closed.