শিলচর শহরের রাজ্য সরকারি অফিস আশেপাশে সরিয়ে নেওয়া হবে, ভীড় কমাতে এবং স্থান সংকুলানে গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর
২০ সেপ্টেম্বর : রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে এর আগেও একবার কাছাড় সফরে এসেছিলেন। তবে সেটা ছিল জরুরী কালীন ভিত্তিতে। আসাম মিজোরাম সীমান্তে সংঘর্ষের জেরে জরুরী কালীন ভিত্তিতে ছুটে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ডা: হিমন্ত বিশ্ব শর্মা। তবে এবার তিনি এলেন পূর্ণাঙ্গ কাছাড় সফরে। দু দিনের এই সফরে কাছাড়ের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। খতিয়ে দেখেন বেশ কিছু প্রকল্প।
সেই সঙ্গে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন। এই অঞ্চলের জন্য বেশ কিছু উপহার ও দিলেন। একাধিক স্থান পরিদর্শনের সময় জনতার সঙ্গে যোগাযোগ ও করলেন। সোমবার সকালে শিলচরের সার্কিট হাউস থেকে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওয়ানা হওয়ার ঠিক আগে মুখ্যমন্ত্রী একটি প্রেস ব্রিফিংয়ে বক্তব্য রাখেন। যেখানে তিনি তার পুরো সফরের খাতিয়ান তুলে ধরেন। সেই সঙ্গে সফর শেষ করার আগে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাও করে গেলেন।
তিনি ঘোষণা করেন, একটি নতুন সমন্বিত ডিসি অফিসের উদ্দেশ্যে ৫০ কোটি আলাদা করে রেখেছেন। এই নতুন ডিসি অফিস অন্য একটি স্থানে তৈরি করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী আরও ঘোষণা করেন, একবার নতুন ডিসি অফিস চালু হয়ে গেলে রাজ্য সরকারের অন্যান্য সমস্ত সংশ্লিষ্ট বিভাগ একই চত্বরে স্থানান্তরিত করা হবে। তিনি বলেন, ‘সার্কিট হাউস এবং শিলচর কেন্দ্রীয় কারাগার নতুন জায়গায় স্থানান্তরিত করা হবে। শিলচরের মাঝখানে জমি খালি করা হবে, যেখানে গুয়াহাটির মতো অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পও নেওয়া যেতে পারে। শিলচরে কোনো অতিরিক্ত জায়গা নেই। এরফলে শহরাঞ্চলকে তার উপকণ্ঠে প্রসারিত করতে হবে। স্থানান্তর সম্পন্ন হওয়ার পর পুরানো অবশিষ্ট জমি শহরে জনতার অন্যান্য বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করা যেতে পারে।’
কাছাড়ের জেলাশাসক কীর্তি জল্লীকে মুখ্যমন্ত্রী নতুন ডি সি অফিসের জন্য দ্রুততম সময়ে জমি বরাদ্দ সম্পন্ন করতে বলেছেন। যাতে পিডব্লুডি বিভাগ নতুন ডিসি অফিসের নির্মাণ কাজ শীঘ্রই শুরু করতে পারে। এদিনের সাংবাদিক সম্মেলনে আরও বেশ কিছু বিষয় নিয়ে কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই সঙ্গে নানা ঘোষণাও করেন। নিচে মুখ্যমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা গুলি তুলে ধরা হলো-
১. ভুবন পাহাড়ের সামগ্রিক উন্নয়ন। সেই সঙ্গে সব ধরনের আবহাওয়ায় ভুবন তীর্থে সফর করার মত একটি রাস্তা আগামী দু বছরের মধ্যে সম্পন্ন হবে। এর জন্য তৈরি করা এস্টিমেট অনুযায়ী ফান্ড দেওয়া হবে।
২. খাসপুর অঞ্চলের কাছাড়ি রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ আমাদের ইতিহাসে বড় তাৎপর্যপূর্ণ । সেখানে পর্যটন আকর্ষণের একটি বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে। সেখানে একটি কলাক্ষেত্র তৈরি করা হবে। এবং পুরো এলাকাটিকে একটি মেগা পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে।
৩. শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিকাঠামোগত উন্নতি সবসময়ই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের মধ্যে থাকবে। খুব শীঘ্রই একটি ক্যাথ-ল্যাব আসছে। সেই সঙ্গে একটি ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও পরিকল্পনায় রয়েছে।
৪. ক্যান্সার হাসপাতাল তার সমস্ত আধুনিক এবং অত্যাধুনিক সুযোগ -সুবিধা সহ এক বছরের মধ্যে কাজ শুরু করবে এবং জনসাধারণের সেবার জন্য উপলব্ধ হবে।
৫. শিলচরের রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট থেকে একটি প্রস্তাবিত ফ্লাইওভার পরিকল্পনায় রয়েছে। চিফ ইঞ্জিনিয়ার শীঘ্রই প্রস্তাবটির কার্যকারিতা পরীক্ষা করবেন।
৬. শিলচরে মিনি সচিবালয়, যার জন্য ১১৬ কোটি মঞ্জুর করা হয়েছে, দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর এর নির্মাণ কাজ পুরোদমে শুরু হবে।
৭. শিলচর রিং রোড (বাইপাস) যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পন্ন করা হবে। সেইসঙ্গে পূর্বনির্ধারিত রাস্তা নির্মাণ ও মেরামতের কাজ সম্পন্ন করা হবে। মুখ্যমন্ত্রী মহাসপ্তমীতে শিলচর পরিদর্শনে এসে কাজের অবস্থা পরীক্ষা করবেন।
৮. অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী দুদিনের করিমগঞ্জ সফরে আসবেন। সেই সফরকালে তিনি করিমগঞ্জ মেডিকেল কলেজ ইস্যুর সমাধান করবেন।
৯. রাজ্যের দুটি কাগজ কল নিয়ে মুখ্য মন্ত্রীর বক্তব্য ছিল, ‘আমি আত্মবিশ্বাসী খুব শীঘ্রই কাগজ কলের সমস্যার সমাধান করতে পারব।’
১০. যদি কোনো ব্যবসা বৈধভাবে সরকারকে ট্যাক্স দিয়ে করা হয়ে থাকে তাহলে সেগুলিকে সরকার অবশ্যই প্রমোট করবে। যদি সেগুলো ব্যবসা থেকে সরকার রেভিনিউ পায় তাহলে তাতে সরকারের কোন সমস্যা নেই।
Comments are closed.