ক্রিস্টাল অলংকার সজ্জিত প্রতিমা ১০২ বছরের অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড দূর্গা পূজা কমিটির, রয়েছে আরও নানা চমক
সালে শহর শিলচরের প্রথম বারোয়ারি পুজো হিসেবে গৌরব ও ঐতিহ্যের ১০০ বছর সম্পূর্ণ করেছিল অম্বিকাপুর পূর্বপাড়া ও হাসপাতাল রোড দূর্গা পূজা কমিটি। সেবার শুধু মন্ডপসজ্জায় নয়, মা দুর্গার প্রতিমা তেও দারুন নজর কেড়েছিল এই পুজো কমিটি। অবশ্য, শাস্ত্রীয় ঘরানার প্রতিমার জন্য অনেক আগে থেকেই পূর্বপাড়া পুজো কমিটির নামডাক রয়েছে। এবারও শহরের সবচেয়ে পুরনো পুজো কমিটি তাদের ঐতিহ্য ধরে রেখেছে। করোনাকালেও মা দুর্গার প্রতিমায় বিশেষ চমক নিয়ে তৈরি পূর্বপাড়া।
রাস্তার পাশে একেবারে সীমিত পরিসরে পুজোর আয়োজন করতে হয় পূর্বপাড়া কে। তবে এই সমস্যাটা কোনোকালেই পুজো কমিটির উদ্যোমে কোনো ধরনের বাধার সৃষ্টি করতে পারেনি। ১০০ বছরের বর্ষপূর্তিতে থিম সং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাজিমাত করেছিল পূর্বপাড়া। সামাজিক ক্ষেত্রেও দায়বদ্ধতার পরিচয় দিয়েছিল তারা। আয়োজন করেছিল বিনামূল্যে বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা শিবির। বস্ত্র বিতরণ সহ নানা কার্যসূচি সাফল্যের সঙ্গে পালন করেছিল। তবে গত দু’বছর করোনার জন্য তেমন ভাবে আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। এবারও কিন্তু করোনা আতঙ্ক রয়েছে। শেষ হয়ে যায়নি। এজন্য ইতিমধ্যেই জারি করা হয়েছে এস ও পি। সেটা মেনেই এবারের পুজো আয়োজন করছেন পূর্ব পাড়ার কর্মকর্তারা। কোনো অবস্থাতেই যাতে কোভিড প্রটোকল ভঙ্গ না হয়, সেদিকে বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে।
১০০ বছরের বর্ষপূর্তিতে পূর্বপাড়া যে ধরনের আয়োজন করেছিল তারপর থেকে এই পুজো কমিটির প্রতি প্রত্যাশা অনেকটাই বেড়ে গেছে। তবে করোনাকাল বলে কথা। তাই ইচ্ছে থাকলেও সে রকম আয়োজন করা যাচ্ছে না। তবে এর মধ্যেও পূর্ব পাড়ার পুজোর বাজেট চার লক্ষ। এরমধ্যে সোয়া এক লক্ষেরও বেশি খরচ হচ্ছে প্রতিমায়। এর নির্মাণের দায়িত্বে রয়েছেন নবেন্দু শেখর চক্রবর্তী। প্রতিবারের মতোই এবারও পূর্ব পাড়ার মা দুর্গার প্রতিমায় রয়েছে চমক। এবার মায়ের মূর্তি হয়েছে রুপোর মধ্যে ক্রিষ্টাল অলংকার সজ্জিত। প্রতিমা ছাড়া আরও চমক রয়েছে।
পশ্চিমবঙ্গের বীরভূম থেকে ৯ জনের একটা ঢাকির ঢোল এসেছে। শতবর্ষের পুজোয় কুমারী পুজোর আয়োজন করেছিল পূর্বপাড়া। এবারো থাকছে কুমারী পুজো। মহাষ্টমীর দিনে পালকিতে করে ছোট্ট মা দুর্গা কে বয়ে এনে অধিষ্ঠিত করা হবে পুজো মণ্ডপে। পুজোর তিনদিন থাকছে প্রসাদ বিতরণের ব্যবস্থা। বিশ্বশান্তি কামনায় পূজোর পাঁচ দিন দর্শনার্থীদের জন্য কমিটির পক্ষ থেকে প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের ব্যবস্থা থাকবে।
প্রতিবছর যেখানে মন্ডপ হয়ে থাকে এবারও সেই জায়গায় পুজো আয়োজন করার অনুমতি পেয়েছিল পূর্বপাড়া। তবে করোনাকালে ভিড় এড়াতে রাস্তার ঠিক উল্টোদিকে সিনহা বাড়িতে মণ্ডপ তৈরি করা হয়েছে। পঞ্চমীর সন্ধ্যায় কাছাড়ের পুলিশ সুপার রমনদীপ কৌর ফিতে কেটে এবং প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করে মন্ডপের উদ্বোধন করেন। সঙ্গে ছিলেন পাড়ার বিশিষ্ট জনের মধ্যে নন্দিতা দত্তরায়। এবার পুজো কমিটির সভাপতি তমাল কান্তি বণিক ও সাধারণ সম্পাদক আকাশদীপ পাল। এই পুজো কমিটির বিশেষত্ব হচ্ছে, পুজোর কটা দিন পাড়ার সবাই একটা পরিবারের মত কাজ করে থাকেন। পাড়ার সব বয়সের মহিলারাও দারুন উদ্যোমে পুজোয় অংশগ্রহণ করেন। আর এটাই এই পুজো কমিটির অন্যতম বিশেষত্ব।
Comments are closed.