শিলচরে পৌরসভার নির্বাচন কখন ! "সিদ্ধান্ত নেবেন বিধায়ক, সাংসদ," অশোক সিংঘল; "কর্পোরেশন হওয়ার পরে," ইঙ্গিত রাজদীপ, দীপায়নের
গতকাল আসামের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ হিমন্ত বিশ্ব শর্মা ঘোষণা করেছেন যে ফেব্রুয়ারি মাসে গুয়াহাটি পৌরসভা কর্পোরেশন এবং দুটি স্বায়ত্তশাসিত পরিষদ সহ সমগ্র আসাম রাজ্যে পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
তবে শিলচর পৌরসভার বোর্ড গঠন নিয়ে বিরাট প্রশ্ন চিহ্ন দেখা দিয়েছে। সেপ্টেম্বর মাসে আসাম মন্ত্রিসভা শিলচর পৌরসভাকে শিলচর কর্পোরেশনে উন্নীত করার প্রস্তাব অনুমোদন করে। তাই বোর্ডের নির্বাচন হবে, না কি কর্পোরেশনে উন্নীত হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা হবে তা এখনও অনিশ্চিত।
কাছাড় জেলার অভিভাবক মন্ত্রী তথা আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রী অশোক সিংঘল বরাক বুলেটিনের সাথে কথা বলতে গিয়ে বলেছেন যে, শিলচর পৌরসভা বোর্ডকে কর্পোরেশনে উন্নীত করার বিল বিধানসভায় উত্থাপন করা হবে এবং তার পরই তা জানানো হবে।
“এদিকে আমরা পৌরসভা বোর্ড না কি কর্পোরেশন হিসাবে নির্বাচন করব, স্থানীয় বিধায়ক এবং সাংসদের পরামর্শ অনুসারে তা সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এখন তারা নির্বাচনে যেতে চান কিনা এটি স্থানীয় বিধায়ক এবং সাংসদের উপর নির্ভর করবে। কাজেই এটিকে কর্পোরেশনে রূপান্তর করা হবে বা কর্পোরেশনে আপগ্রেড করা হবে এবং তারপর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে কি না, এটি একটি স্থানীয় বিষয় এবং আমাদের অবশ্যই বিধায়ক এবং সাংসদের উপর এ বিষয়ে আস্থা রাখতে হবে” মন্ত্রী অশোক সিংঘল জোর দিয়ে বলেন৷
পয়লা এপ্রিল, ২০২০ তারিখে নীহারেন্দ্র নারায়ণ ঠাকুর শিলচর পুরবোর্ডের দায়িত্ব সুমিত সত্তাভানের কাছে হস্তান্তর করেছিলেন। সুমিত সত্তাভান এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। বর্তমানে বোর্ডের নির্বাহী কর্মকর্তা জে আর লালসিম। প্রায় দুই বছরের ব্যবধানে যখন নির্বাচন হবে তখন শিলচরের পুরবোর্ড গঠনের জন্য নির্বাচন হাতছাড়া হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে অনুমান করা হচ্ছে।
সূত্র অনুসারে, সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, শিলচরের সাংসদ ডাঃ রাজদীপ রায়, ডিব্রুগড়ের বিধায়ক প্রশান্ত ফুকন এবং শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী সংশ্লিষ্ট শিলচর এবং ডিব্রুগড় পৌরসভা নির্বাচনের বিষয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। “আমরা ইতিমধ্যে প্রাথমিক আলোচনা করেছি এবং আমরা মনে করি,যেহেতু পৌর বোর্ডগুলিকে কর্পোরেশনে উন্নীত করা আমাদের নির্বাচনী ইস্তাহারের একটি অংশ ছিল, তাই প্রথমে আপগ্রেডেশন সম্পন্ন করা এবং তারপর নির্বাচনে যাওয়া ভাল। সমস্ত সম্ভাবনায় আমরা প্রথমে আপগ্রেডেশন এবং পরে নির্বাচনের দিকে যাচ্ছি। এটি যত তাড়াতাড়ি সম্ভব করা হবে, কারণ অনেক সময় বিলম্বিত নির্বাচন উন্নয়নে বিলম্ব ঘটায়,” বরাক বুলেটিনের সাথে কথা বলার সময় সাংসদ রাজদীপ রায় বলেন।
এই প্রসঙ্গে শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী বলেন, তিনি অভিভাবক মন্ত্রী অশোক সিংঘলের সাথে দেখা করতে চলেছেন এবং সেখানে তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে পারেন। “যখন মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীকে শিলচরের পৌরসভা নির্বাচন সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয়েছিল এবং এটি কর্পোরেশনে উন্নীত করার পরে তা করা উচিত কিনা জানতে চাওয়া হয়েছিল , তখন তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট বিধায়কদের সাথে আলোচনা করার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত,” চক্রবর্তী বলেন।
এই বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি কী জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, “শিলচর পুরবোর্ডকে একটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা আমাদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল। যখন আমাকে আমার মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল, তখন মাননীয় সাংসদ এবং দলের অন্যান্যদের সাথে আলোচনা করার পর আমি বলেছিলাম যে আমাদের প্রথমে বোর্ডকে একটি কর্পোরেশনে উন্নীত করা উচিত এবং তারপরই নির্বাচন করা উচিত। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত এখনও নেওয়া হয়নি।”
বিজেপির কাছাড় জেলা সভাপতি বিমলেন্দু রায়ও বিধায়কের সুরে কথা বলেছেন। বরাক বুলেটিনের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “শিলচর পুরবোর্ড কর্পোরেশনে রূপান্তরিত হওয়ার পরই আমরা নির্বাচনে যাব, এটাই দলের অবস্থান।
এসব থেকে এটা স্পষ্ট হয়ে গেছে যে ফেব্রুয়ারিতে শিলচরে পৌরসভা নির্বাচন হবে না। তবে কবে নির্বাচন হবে তা নিয়ে ধোঁয়াশা রয়েছে। একজন প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার বলেছেন যে, কর্পোরেশনে রূপান্তরের সাথে সীমাবদ্ধতা জড়িত। কিছু ক্ষেত্রে জিপি এলাকার কিছু অংশ কর্পোরেশনের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে। সেক্ষেত্রে ঐসব জিপি এলাকার নির্বাচিত প্রতিনিধিরা আপত্তি জানাতে পারেন যাতে অনিশ্চয়তা বাড়বে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রাক্তন ওয়ার্ড কমিশনার বলেন, “সেক্ষেত্রে সরকার কি জিপির মেয়াদ শেষ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করবে? যার মানে নির্বাচন ছাড়াই ২০২৩ সাল পর্যন্ত কেটে যাবে।
Comments are closed.