Also read in

ফাইনালে সমীকের আগুনে ঝলসে গেল যোগাযোগ, শিলচরে ক্লাব কাপ চ্যাম্পিয়ন ইন্ডিয়া ক্লাব

শীতের পারদ একটু কমতেই শহরের ক্রিকেটপ্রেমীরা এস এম দেব স্টেডিয়াম মুখো হয়েছিলেন। কুয়াশায় ঢাকা সকালের হ্যাঙ্গওভার কাটিয়ে ক্রিকেটের আমেজ নিতে প্রস্তুত ছিলেন তারা। সবাই আশা করেছিলেন, শিলচরে অসম প্রিমিয়ার ক্লাব কাপের ফাইনাল ম্যাচ টা খুব জমবে। তবে যারা মাঠ মুখো হলেন, তারা নিরাশ হয়ে বাড়ি ফিরলেন। অধিকাংশ তো মাঠে প্রবেশ করার আগেই যোগাযোগের ইনিংস শেষ হয়ে গিয়েছিল। আর বাকি যারা এলেন তখন তো ফাইনালই খতম! সোজা কথায় যেমনটা প্রত্যাশা ছিল, তেমন কিছুই হলো না ইন্ডিয়া ক্লাব বনাম যোগাযোগ সংঘের ফাইনালে। ‌

এদিন, চরম একপেশে ম্যাচ জিতে ক্লাব কাপের জোনাল রাউন্ড এর ছাড়পত্র আদায় করে নিল শতাব্দীপ্রাচীন ইন্ডিয়া ক্লাব। আজ ফাইনালে তারা ৮ উইকেটে উড়িয়ে দেয় যোগাযোগ সংঘ কে। তাদের এই জয়ে প্রধান কারিগর ছিলেন ডানহাতি অলরাউন্ডার সমীক দাস। সকালে তার আগুনে বোলিংয়ে ঝলসে যায় যোগাযোগ সংঘের ব্যাটিং ইউনিট। ক্লাব কাপের প্রথম রাউন্ডে চ্যাম্পিয়ন হবার সুবাদে এক লক্ষ টাকা পেল ইন্ডিয়া ক্লাব।

 

Team India Club

বৃহস্পতিবার এস এম দেব স্টেডিয়ামে ফাইনালের চাপেই নুইয়ে পড়ে যোগাযোগ। সকালে কুয়াশাচ্ছন্ন আবহাওয়ায় টস জিতেন ইন্ডিয়া ক্লাব অধিনায়ক রেহান জমিল মজুমদার। যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কন্ডিশনের কথা মাথায় রেখে রেহান প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন। ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে বড় একটা স্কোরের আশায় ছিল যোগাযোগ। তবে সমীকের আগুনে বোলিংয়ে শুরুতেই চাপে পড়ে যায় তারা। কন্ডিশনকে কাজে লাগিয়ে দুদিকেই বল সুইং করালেন সমীক।

 

 

ফাইনালের আগে পর্যন্ত দুরন্ত ফর্মে ছিলেন যোগাযোগের ওপেনার জয়দীপ সিং। তবে ফাইনালে তিনি কোনো কামাল করতে পারলেন না। ১৩ রান করে সমীকের সুইংয়ে লেগ বিফোর হয়ে সাজঘরে ফেরেন তিনি। এর আগে যোগাযোগের অধিনায়ক ফজলুর রহমানকেও (১) প্যাভিলিয়নের ফিরিয়ে দেন ডানহাতি তারকা পেসার। ব্যর্থ হন সমীর সিনহা (১০) ও টুনামেন্টে ভালো ছন্দে থাকা বিকিরন দাসও (৭)। এটা যোগাযোগের বড় স্কোরের আশাও শেষ করে দেয়। খাতা খুলতে বাধ্য হন সাদেক ইমরান। ক্লাব হাউজ এন্ড থেকে প্রথম ছয় ওভারের স্পেলে তিন উইকেট শিকার করেন সমীক। এরপর দ্বিতীয় স্পেলে কাছাড় কলেজ প্রান্ত থেকে দুওভার হাত ঘুরিয়ে আরও তিন উইকেট তুলে নেন এই ডানহাতি পেসার। ম্যাচের তার মোট শিকার ৬ উইকেট। সমীকের বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ৮-১-৩০-৬। মরশুমে এই প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেট শিকার করলেন তিনি। তাকে যোগ্য সহায়তা করেন আরও এক পেসার প্রদীপ সরকার। তিনি তুলে নেন তিন উইকেট। যার ফলে ১৬.১ ওভারে কেবল ৬০ রানেই গুটিয়ে যায় যোগাযোগ।

একটা শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ থাকা ইন্ডিয়া ক্লাবের কাছে এই রান তাড়া করা মোটেও কঠিন ছিল না। হলও তাই। ১১.১ ওভারে দু উইকেট হারিয়ে লক্ষ্যে পৌঁছে যায় তারা। গত মরশুমে দুরন্ত ফর্মে থাকা ডানহাতি ওপেনার প্রদীপ সরকার করেন ২৬। এছাড়া প্রশান্ত কুমার অপরাজিত থাকেন ২২ রানে। দুটি উইকেটই নেন চন্দ্রদ্বীপ দাস।
দুরন্ত বোলিং এর জন্য ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন সমীক দাস। যৌথভাবে টুর্নামেন্টের সেরা বোলারের পুরস্কার পান সমীক ও শেখর জ্যোতি বর্মন। সেরা ব্যাটসম্যান নির্বাচিত হয়েছেন জয়দীপ সিং। প্রতিযোগিতার সেরা ক্রিকেটার বিকিরণ দাস। এদিন চ্যাম্পিয়ন ও রানার্সআপ দলের হাতে ট্রফি তুলে দেন শিলচর মেডিকেল কলেজের প্রিন্সিপাল বাবুল বেজবরুয়া। তার সঙ্গে ছিলেন সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়, অন্যতম সহ-সভাপতি ডা সিদ্ধার্থ শংকর ভট্টাচার্য্য ও সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং।

Comments are closed.