স্কুল চত্বরে ধর্মান্ধ যুবকের হাতে আক্রান্ত ৭ বছরের শিশু, ব্লেড দিয়ে যননাঙ্গ কেটে সুন্নত দেওয়ার চেষ্টা
হাইলাকান্দি জেলায় বিদ্যালয় চ্ত্বরে ৭ বছর বয়সের ছাত্র শ্রী সানু দাস রহস্যজনক ভাবে আহত হয়েছে। পরিবারের অভিযোগ অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবক শিশুটিকে জোর করে ব্লেইড দিয়ে গুপ্তাঙ্গ কেটে সুন্নত দেওয়ার চেষ্টা করেছে। ঘটনাটি ঘটেছে ঘাড়মুরার শিশুমঙ্গল বিদ্যাপীঠে। দ্বিতীয় শ্রেণীর ছাত্রটি এতে গুরুতর ভাবে আহত হয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
পরিবারের তরফে হাইলাকান্দি থানায় এক এজাহার দেওয়া হয়েছে। পরিবারের বয়ান, সোমবার দুপুরে বিদ্যালয় থেকে ফেরার পর থেকে তাঁদের ছেলেটির ব্যবহারে অস্বাভাবিক ভাব লক্ষ্য করেন তাঁরা। মঙ্গলবার থেকে অসুস্থ হতে থাকে শিশুটি, এতে স্থানীয় চিকিৎসকের সাহায্যে প্রাথমিক চিকিৎসার পর বুধবার হাইলাকান্দির সরকারী চিকিৎসালয়ে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। সেখান থেকে শিলচর মেডিক্যাল কলেজে পাঠানো হয়।
প্রথমে ভীত অবস্থায় কিছু না জানালেও চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটি তাঁর মাকে আসল ঘটনাটি জানায়।
শিশুর বয়ান, শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে অন্য ক্লাসের দুই ছাত্র তাঁকে বিদ্যালয়ের শৌচাগারের দিকে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে কাপড় দিয়ে মুখ ঢাকা এক অজ্ঞাত পরিচয় যুবক তাকে বলে ‘চল তোকে সুন্নত দেবো, এতে পুণ্য হবে’। সাত বছরের শিশু সুন্নত বা পুণ্য, দুই ব্যাপারেই অজ্ঞ, সে কৌতুহলের বশে যুবকের সঙ্গে শৌচাগারে চলে যায়। তবে যুবকটি তার গুপ্তাঙ্গে আঘাত করায় সে বাধা দেয় এবং চিৎকার করে এতে যুবকটি তাকে আহত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। সবাই জানলে কি বলবে এই ভয়ে কাউকে জানায়নি সে।
পরে বিষয়টি নিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের দ্বারস্থ হয়ে পালটা হুমকির মুখে পড়েছেন বলে শিশুটির মা পারমিতা দাস রামনাথপুর পুলিশের কাছে দেওয়া অভিযোগে জানান।অন্যদিকে স্কুলের মালিক পক্ষের স্কুলে কর্মরত শিক্ষক আশক উদ্দিন বড়ভুইয়া,এসব উত্থাপিত অভিযোগ খণ্ডন করে জানান এটি একটি পরিকল্পিত চক্রান্ত। স্কুলটি বনধ করা সহ,দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে ঝগড়া সৃষ্টি করার অপচেষ্টা। শিক্ষক আশক উদ্দিন জানান ঐ স্কুলে সর্বমোট ১৪ জন শিক্ষক শিক্ষিকা আছেন,তার মধ্যে ৮ জন হিন্দু ধর্মের।স্কুলে বাউণ্ডারি রয়েছে,বাউণ্ডারির ভিতরে অভিবাবকদের বসার সুবিধা রয়েছে।প্রতিটি সম্প্রদায়ের অভিবাবকরা স্কুল চলাকালিন সময়ে বসে থাকেন।এই অবস্থায় বাইরের কারো পক্ষে স্কুলে ঢুকে এমন কিছু করা অবাস্তব।
এদিকে, কি করে এক বেসরকারী স্কুলে ধর্মান্ধ যুবক দিনের আলোয় ঢুকে ছোট্ট শিশুর উপর অত্যাচার করার সুযোগ পেলো এব্যাপারে পরিবারের তরফে বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা কোনও সদুত্তর দেননি
এই অভিযোগ করেন বজরং দল, হিন্দু সংহতি মঞ্চ, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা সহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্যরা। তাঁদের দাবি, সত্বর ঘটনার তদন্ত করে দোষীদের ধরা না হলে বৃহত্তর আন্দোলন করবেন তাঁরা।
শনিবার দুপুরে হাইলাকান্দি জেলার ডিএসপি নির্মল ঘোষ সহ পুলিশের এক দল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে এসে আহত ছাত্রটির বয়ান গ্রহণ করেন। নির্মল ঘোষ বলেন অভিযোগের ভিত্তিতে ঘটনার তদন্ত চলছে, তবে শিশুটির মেডিক্যাল পরিক্ষার পরই আসল ঘটনা সামনে আসবে। ঘটনায় দোষীদের কাউকে ছাড়া হবেনা।
Comments are closed.