
শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির আর্টিফিশিয়াল মাঠের যাত্রা শুরু, ফ্লাডলাইটের আলোয় শুরু হল কচিকাঁচাদের ট্রেনিং
বরাক উপত্যকা তো বটেই, গোটা রাজ্যে শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির নাম ডাক রয়েছে। জেলার অনেক খেলোয়াড়ই এই অ্যাকাডেমির হাত ধরে উঠে এসেছেন। গত কয়েক বছরে ফুটবলার তৈরির সঙ্গে নিজেদের পরিকাঠামো উন্নতির দিকেও বিশেষ নজর দিয়েছে শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমি। ক্ষুদে ফুটবলারদের জন্য একটা রোডম্যাপ অনুসারে এগোচ্ছে তারা। তবে বর্ষার মরশুমে মার খাচ্ছিল অ্যাকাডেমির ফুটবল প্রশিক্ষণ। বর্ষার মরশুমে খেলোয়াড়দের ট্রেনিং সম্ভব হচ্ছিল না। সেকথা মাথায় রেখেই এক আর্টিফিশিয়াল মাঠ তৈরি করার পরিকল্পনা নেন অ্যাকাডেমির কর্মকর্তারা। সবকিছু সুন্দরভাবে এগিয়ে যাওয়ায় বাস্তবায়িত হয়েছে সেই পরিকল্পনা। তৈরি হয়ে অ্যাকাডেমির আর্টিফিশিয়াল মাঠের ইতিমধ্যেই আনুষ্ঠানিক উদ্বোধনও হয়ে গেছে। এবার অ্যাকাডেমির এস্ট্রো টার্ফ-এ সোমবার থেকে কচিকাঁচাদের ট্রেনিংও শুরু হয়ে গেল।
শুরু থেকেই শিলচরের ফুটবলের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে অ্যাকাডেমি। সারাটা বছরই ভিন্ন এইজ গ্রুপের খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকেন অ্যাকাডেমির কোচেরা। গ্রামেগঞ্জেও সময় সময়ে বিভিন্ন ক্যাম্পের আয়োজন করেছে অ্যাকাডেমি। সাম্প্রতিককালে তারা বেবি লিগের আয়োজন করেছিল। যা দারুন জনপ্রিয়তা লাভ করে। শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির সিইও সুবিমল ধর জানান, বর্ষার মরশুমের কথা মাথায় রেখেই এই আর্টিফিসিয়াল মাঠ তৈরি করা হয়েছে। এতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩২ লক্ষ টাকা। তিনি বলেন, ‘বর্ষার মরশুমের কথা মাথায় রেখে আমরা এই আর্টিফিশিয়াল মাঠের পরিকল্পনা করেছিলাম। তবে কাজটা কঠিন ছিল। কারণ এটা তৈরি করতে অনেক টাকার দরকার ছিল। আমরা বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায় কে। তিনি আমাদের এই পরিকল্পনার কথা জানতেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেন। তার আনটাইড ফান্ড থেকে ২৫ লক্ষ টাকা আমাদের হাতে তুলে দেন। এটাই আমাদের কাজটা সহজ করে দেয়। বাকি অর্থ আমরা বিভিন্ন সোর্স থেকে সংগ্রহ করেছি।’
সুবিমল বাবু মনে করেন, এই আর্টিফিশিয়াল মাঠের ফলে এখন বর্ষার মরশুমেও প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে। তিনি বলেন, ‘প্র্যাকটিসের পাশাপাশি এই মাঠে ফাইভ এ সাইড ফুটবল এবং বেবি লীগের মতো টুর্নামেন্ট আয়োজন করা যাবে। আন্ডারগ্রাউন্ড ড্রেনেজ সিস্টেম থাকায় ভারী বর্ষণেও কোন সমস্যা হবে না।’ শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমির মাঠের একপাশেই করা হয়েছে এই আর্টিফিশিয়াল মাঠ। এর চারিদিকেই রয়েছে ফেন্সিং। মাটি থেকে দেড় ফুট উঁচুতে ৬৮২৫ স্কয়ার ফিট এর জায়গা জুড়ে রয়েছে এই আর্টিফিশিয়াল মাঠ। শুধু চারপাশে নয়, উপরেও রয়েছে ফেন্সিং। শুধু দিনের আলোতে নয়, রাতেও এই আর্টিফিশিয়াল মাঠে খেলার ব্যবস্থা রয়েছে। মোট ১৮ টি পোলে ২২টি একশো ওয়াটের এলইডি লাইট লাগানো রয়েছে। এই আর্টিফিশিয়াল মাঠের মাধ্যমে পরিকাঠামোর দিক থেকে আরো এগিয়ে গেল শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমি।
এখন থেকে গোটা বছরই অ্যাকাডেমি তে চলবে প্রশিক্ষণ। এজন্য একটা রোডম্যাপ তৈরি করে নিয়েছে শিলচর ফুটবল অ্যাকাডেমি। মোট দু ভাগে অ্যাকাডেমির ট্রেনিং সূচিকে ভাগ করা হয়েছে। মে থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ট্রেনিং হবে কৃত্রিম মাঠে। বর্ষার কথা মাথায় রেখেই এমনটা করা হয়েছে। অন্যদিকে, শীতের মরশুমে ডিসেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত চলবে প্রশিক্ষণ। সেটা হবে ন্যাচারাল গ্রাউন্ডে। তিনটি গ্রুপে হবে ট্রেনিং। প্রতিটি গ্রুপের এলিটদের আলাদা করে ট্রেনিং দেওয়া হবে। সকাল ও সন্ধ্যা রাতেও চলবে প্রশিক্ষণ।
Comments are closed.