Also read in

পাওয়ার লিফটিংয়ে ভারতের জার্সি গায়ে নিউজিল্যান্ড যাচ্ছেন শিলচরের মেয়ে দেবশ্রী

কিছুটা দেরিতে হলেও ‘ক্রিকেটের দেশ’ তকমা থেকে বেরিয়ে আসছে ভারত। ‌ গত এক দশকে অলিম্পিক থেকে শুরু করে কমনওয়েলথ গেমস এর মত মঞ্চে দারুন সাফল্য পেয়েছেন ভারতীয় অ্যাথলিটরা। ছোট ছোট শহর থেকে উঠে এসে বিভিন্ন বাধা টপকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করছে ছেলে মেয়েরা। আন্তর্জাতিক সার্কিটে পাওয়ার লিফটিং এর মঞ্চেও নজর কাড়া সাফল্য পাচ্ছে ভারত। এ রাজ্যে এখনো পাওয়ার লিফটিং তেমন সাড়া ফেলতে পারেনি। তবে এর মধ্যেই জাতীয় দলে সুযোগ করে নিয়েছেন শিলচরের মেয়ে দেবশ্রী সরকার। অসমের একমাত্র পাওয়ারলিফটার হিসেবে এ বছরের শেষে নিউজিল্যান্ডে পাওয়ার লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপে দেশের প্রতিনিধিত্ব করতে যাচ্ছেন শিলচরের এই মেয়ে।

পাঁচ বছর আগে দেবশ্রীর পাওয়ার লিফটিং এর যাত্রা শুরু। শিলচর ব্যায়াম বিদ্যালয়ের হাত ধরে। গত তিন বছর থেকে তিনি গুয়াহাটিতে প্র্যাকটিস করছেন। খুবই সাধারণ পরিবার থেকে উঠে এসেছেন দেবশ্রী। ফলে প্রতিটা মুহূর্তে তাকে লড়াই করতে হয়েছে। এ বছর জুলাইয়ে তেলেঙ্গানায় ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপে ভালো পারফর্ম করেন দেবশ্রী। জেতেন ব্রোঞ্জ পদক। সেটাই তাকে জাতীয় দলের টিকিট এনে দেয়। আন্তর্জাতিক মঞ্চে জাতীয় দলের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে এবার আর পেছনে ফিরে তাকাতে রাজি নন তিনি।

আগামী ২৮ নভেম্বর থেকে নিউজিল্যান্ডের শহর অকল্যান্ডে শুরু হবে পাওয়ার লিফটিং চ্যাম্পিয়নশিপ। এতে জুনিয়র মেয়েদের ৫২ কেজি ক্যাটাগরিতে অংশ নেবেন দেবশ্রী। দেশের প্রায় ১০০-র মতো পাওয়ার লিফটার অকল্যান্ডের চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেবেন। তবে অসম থেকে একমাত্র দেবশ্রী সেই প্রতিযোগিতায় দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন। যা নিশ্চিতভাবে শিলচরের জন্য এক গর্বের বিষয়। তবে জাতীয় দলে সুযোগ পেলেও আর্থিক সমস্যা সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে বিলপার পুন্যপাল রোডের এই পাওয়ার লিফ্টারের জন্য।

আন্তর্জাতিক সার্কিটে দেশের জার্সি গায়ে নামার এই প্রথম সুযোগ পেয়েছেন দেবশ্রী। তবে চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার জন্য যাবতীয় খরচ তাকেই জোগাড় করতে হচ্ছে। আসলে এই ধরনের ইভেন্টে অংশ নিতে হলে প্রতিযোগীকেই খরচ বহন করতে হয়। এটাই নিয়ম। তবে ভালো খবর হচ্ছে, চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেওয়ার জন্য প্রথম হার্ডলটা টপকে গেছেন দেবশ্রী। চ্যাম্পিয়নশিপে অংশ নেবার জন্য ১১ সেপ্টেম্বরের আগেই অসম পাওয়ার লিফটিং সংস্থার কাছে দেড় লক্ষ টাকা জমা করার কথা ছিল দেবশ্রীর। সেটা তিনি ৯ সেপ্টেম্বর জমা দিয়ে দিয়েছেন। এবার সেই টাকা রাজ্য সংস্থা পাঠিয়ে দেবে সর্বভারতীয় পাওয়ার লিফটিং ফেডারেশন এর কাছে। এবার তার ভিসার জন্য আবেদন করবে ফেডারেশন।

দেড় লক্ষ টাকার প্রথম হার্ডল টপকে গেলেও এখনো দেবশ্রীর প্রয়োজন আরো এক থেকে দেড় লক্ষ টাকা। ইতিমধ্যে দেবশ্রীর জন্য আর্থিক সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন শিলচরের বিধায়ক দ্বীপায়ন চক্রবর্তী। তিনি ৬০ হাজার টাকা দিয়েছেন। এছাড়াও শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা এবং শিলচর ভেটেরন ক্রিকেটার্স ক্লাব ও সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে। তবে এখনো অনেক টাকার দরকার। দেবশ্রী নিজে প্রায় ৪৫ হাজার টাকা ঋণ করেছেন। তার স্বপ্ন, দেশের জার্সি গায়ে প্রতিনিধিত্ব করার।

Comments are closed.

error: Content is protected !!