
পড়ুয়াদের একঘেয়েমি কাটিয়ে মাঠে নিয়ে আসার জন্যই এই ইভেন্টর আয়োজন : রুদ্রনারায়ণ শুরু হলো রামানুজ গুপ্ত ট্রাস্টের ইন্ট্রা ইনস্টিটিউশন স্পোর্টস মিট
শুধু গোটা উপত্যকায় নয়, গোটা রাজ্যের শিক্ষা ব্যবস্থায় এক বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে রামানুজ বিদ্যামন্দির, রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজ এবং রামানুজ গুপ্ত ডিগ্রী কলেজ। তবে এবার শুধু শিক্ষার জগতে নয়, খেলাধুলার মাঠেও অবদান রাখতে বিশেষ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে রামানুজ গুপ্ত ট্রাস্ট। প্ৰিয় পুত্রের স্মৃতিতে প্রয়াত ড. রাহুল গুপ্তের স্বপ্নের রামানুজ গুপ্ত ট্রাস্ট। কলেজের ২৫ বছর অর্থাৎ সিলভার জুবিলী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে তিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে নিয়ে স্পোর্টস মিটের আয়োজন করা হয়েছে ট্রাস্টের পক্ষ থেকে। বুধবার ইন্ডোর গেমসের মাধ্যমে খেলাধুলার এই উৎসবের সূচনা হল।
কোভিড পরবর্তী যুগে পড়ুয়ারা যেন একঘেয়েমি কাটিয়ে উঠতে পারছে না। করোনা আতঙ্কে টানা দু’বছর বন্দি থাকায় মোবাইলে আসক্ত হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা। খেলার মাঠ থেকে অনেকটাই দূরে সরে গেছে। অনলাইন অফলাইনের গেরোয় আজ বন্দি গোটা সিস্টেমটাই। একঘেয়েমির এই মত্ত আবহ থেকে বের হতে ‘অন্য কিছু একটাই ‘ শেষ পন্থা। আপাতত সেই পথেই হাঁটলো রামানুজ বিদ্যামন্দির, রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজ, রামানুজ গুপ্ত ডিগ্রী কলেজ – একসাথে বললে রামানুজ গুপ্ত ট্রাস্ট।
গত ১৪ নভেম্বর রামানুজ গুপ্ত জুনিয়র কলেজ স্থাপনার ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে একবছর ব্যাপী সিলভার জুবিলী উদযাপনের সূচনা হয়। তা চলবে ২০২৩-র ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত। বুধবার সিলভার জুবিলী সেলিব্রেশন এর দ্বিতীয় ধাপ হিসেবে শুরু হয়েছে তিনদিনের এই স্পোর্টস মিট।
ইন্ডোর – আউটডোর মিলিয়ে মোট ১০ ইভেন্টে শীর্ষে থাকার জন্য প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে স্কুল কলেজের পড়ুয়ারা। কলেজ প্রাঙ্গনেই ২৮-৩০ ডিসেম্বর হবে দাবা, ক্যারম এবং টেবিল টেনিসের আসর। ব্যাডমিন্টন হবে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার ইনডোরে। অপরদিকে ট্রাক এন্ড ফিল্ডের আসর বসছে শিলচর টাউন ক্লাবের মাঠে। আর ক্রিকেট এবং ফুটবলের ম্যাচগুলি হবে শিলচর স্পোর্টিংয়ে। প্রত্যেক ইভেন্টে অংশগ্রহণ করা সব প্রতিযোগীকে শংসাপত্র দিয়ে সম্মানিত করা হবে। আর বিজয়ীদের শংসাপত্রের পাশাপাশি ট্রফি দিয়েও পুরস্কৃত করা হবে। ক্রিকেট এবং ফুটবলে ফাইনাল খেলা দলগুলির হাতে তুলে দেওয়া হবে ট্রাস্টের নামাঙ্কিত জার্সি। কলেজে অবাধ থাকলেও রামানুজ বিদ্যামন্দিরের নবম এবং দশম শ্রেণীর প্রতিযোগীরাই এই ক্রীড়া ইভেন্টে অংশ নিতে পারবেন। মূলত প্রতিযোগিতা যাতে সেয়ানে সেয়ানে হয় সেজন্যই আয়োজকরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রায় ৩৫০ প্রতিযোগী এই স্পোর্টস মিটে অংশ নিচ্ছেন।
বুধবার ট্রাস্টের পক্ষ থেকে রাহুল গুপ্তের ছেলে রুদ্রনারায়ণ গুপ্ত বলেন,’ করোনা পিরিয়ড আর কিছু করুক না করুক শিক্ষাব্যবস্থার বারোটা বাজিয়ে দিয়েছে। অনলাইন অফলাইনের ধাঁধায় চেপে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েছে পড়ুয়ারা। এর জন্য ‘হটকে ‘ কিছু একটা জরুরি ছিল। তাই খেলাধুলার পসরা নিয়ে হাজির হলাম আমরা। আশা করি এই স্পোর্টস মিটের মাধ্যমে একঘেয়েমির লাইফস্টাইল থেকে কিছুটা হলেও বেরিয়ে আসতে পারবে তারা।’ স্টুডেন্টদের এক্সট্রা কারিকুলামের দিকেও কলেজ কিংবা রামানুজ ট্রাস্টের স্কুল কতৃপক্ষের কড়া নজর রয়েছে। এজন্য কিছু প্রকল্পও হাতে নেওয়া হয়েছে বলে জানান রুদ্রনারায়ণ।
তিনি আরও বলেন, মেহেরপুর বেলতলায় মিনি স্পোর্টস কমপ্লেক্স তৈরির পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সেখানে টার্ফ, মিনি ইন্ডোর এবং জিম থাকবে। খেলাধুলার পাশাপাশি রামানুজের ছাত্ররা যাতে শরীরচৰ্চাও করতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। কেরিয়ার ওড়িয়েন্টেড এই যুগে সব কিছু কেমন যেন একটা যান্ত্রিক হয়ে গেছে। আমাদের এই ছেলেমেয়েরা যাতে সেই খোলস থেকে বেরিয়ে আসতে পারে এজন্য সক্রিয় ভূমিকাটা আমাদেরই নিতে হবে।সফর তো শুরু হয়েছে, গন্তব্যে পৌছতে পারি কিনা সেটাই দেখার। ‘ সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যান্যদের পাশাপাশি উপস্থিত ছিলেন ড. দীপঙ্কর কর, শরদিন্দু ধর (বাদল ), পূর্ণদীপ চন্দ, দীপ্তমান বিশ্বাস প্রমুখ।
Comments are closed.