উন্নয়নের ক্ষেত্রে বরাক-ব্রহ্মপুত্র সমান গুরুত্বপূর্ণ: রাজদীপ রায়ের হাসপাতাল উদ্বোধন করে বললেন মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়াল
আজ শিলচরে দশ তল বিশিষ্ট মাল্টি-স্পেশিয়ালিটি হসপিটাল জীবন জ্যোতি ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্স এর উদ্বোধন হলো মেহেরপুরে। উদ্বোধন করলেন মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা এবং স্থানীয় বিভিন্ন দলের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ। এই হাসপাতালটি প্রয়াত এম এলএ বিমলাংশু রায়ের পুত্র রাজদীপ রায়ের স্বপ্ন-প্রকল্প। বহুচর্চিত এই হাসপাতালটি কিছুদিন ধরেই আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে । দশ তল উচ্চতা বিশিষ্ট হাসপাতাল এর ভবনের অনুমোদন থেকে শুরু করে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সহ অন্যান্য মন্ত্রীদের যোগদানের বিষয়ও অনেকের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল, রাজ্যের স্বাস্থ্য এবং পূর্তমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা, বন ও পরিবেশ, আবগারি ও মৎস্য বিভাগের মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য এবং বিজেপির অন্যান্য নেতৃবৃন্দ ছাড়াও কংগ্রেস দলের প্রাক্তন মন্ত্রী গৌতম রায়, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জের সব বিধায়ক এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন দলের নেতাদের একই মঞ্চে এই ধরনের সমাগম সত্যি খুব কম দেখা যায়।
হাসপাতালের সভাপতি রাজদীপ রায় বলেন যে এতদিনে তার স্বপ্ন সাকার হল। তিনি আশ্বস্ত করেন যে এই হাসপাতালে উন্নতমানের ডাক্তার এবং চিকিৎসা সেবার ব্যবস্থা থাকবে। বরাক উপত্যকার জনগণকে চিকিৎসার জন্য চেন্নাই, দিল্লি, মুম্বাই বা দেশের অন্যান্য স্থানে ছুটে যেতে হবে না। এই হাসপাতাল সব ধরনের রোগীর চিকিৎসা এবং সেবা করতে সমর্থ হবে।
মুখ্যমন্ত্রী বরাক উপত্যকার জনগণের উদ্দেশ্যে বলেন যে বরাক উপত্যকার আর্থসামাজিক উন্নয়নে আসাম সরকার ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার সাথে কোন ভেদাভেদ রাখেনা। সরকার বরাক উপত্যকার চিকিৎসা পরিষেবার উন্নতির জন্য সব ধরনের প্রয়াস নেবে। তিনি আরও বলেন যে স্বাস্থ্যই সম্পদ। সরকারি হাসপাতালগুলোর পক্ষে একা সব ধরনের স্বাস্থ্য-পরিষেবা দেওয়া সম্ভব নয়। তাই ব্যক্তিগত উদ্যোগেও এই ধরনের প্রয়াস অব্যাহত রাখতে হবে । মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন যে নাগরিক পঞ্জীর চূড়ান্ত তালিকা থেকে যাদের নাম বাদ পড়বে সেই প্রকৃত ভারতীয় নাগরিকদের প্রতি সরকার সব সময়ই সহায়তার হাত বাড়াবে।
হিমন্ত বিশ্ব শর্মা একই সুরে জানালেন যে বরাক উপত্যকার উন্নয়নের ব্যাপারটি সরকারের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পাবে। তিনি তার মতামত ব্যক্ত করে বলেন যে ব্যক্তিগত উদ্যোগের এই হাসপাতাল দক্ষিণ আসাম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অন্যান্য রাজ্যগুলির স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন সাধন করবে। শর্মা আরও জানালেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের অটল অমৃত প্রকল্পের অধীনে বিভিন্ন জটিল রোগের জন্য ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তা বিভিন্ন অনুমোদিত হাসপাতালে দেওয়া হচ্ছে। এই হাসপাতালগুলোর তালিকায় আজকের উদ্বোধন করা হাসপাতালটিকেও যাতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বর্তমানে আসামে প্রায় ১২০০ রোগী এই প্রকল্পের অধীনে সুবিধা উপভোগ করছেন সরকারি হাসপাতালগুলোতে এবং প্রায় ৮০০ রোগী ব্যক্তিগত উদ্যোগের হাসপাতালগুলোতে এই সুবিধা গ্রহণ করছেন। শর্মা আয়ুষ্মান প্রকল্পের উল্লেখ করে জানান যে এই প্রকল্পের অধীনে প্রতিটি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমা প্রদান করা হয় অনুমোদিত হাসপাতালগুলোতে। অর্থমন্ত্রী আরও জানান যে বরাক উপত্যকায় কিছুদিনের মধ্যেই গভর্ণমেন্ট ডেন্টাল কলেজ চালু হতে চলেছে। করিমগঞ্জেও ১৫০ কোটি টাকা ব্যয়বহুল একটি মেডিক্যাল কলেজের প্রকল্প শিগগিরই শুরু হবে।
Comments are closed.