লখিমপুরকে ইনিংসের ব্যবধানে উড়িয়ে নুরুদ্দিনের ফাইনালের শিলচর, সেমিতে রাহুলের ১০ উইকেট
নুরুদ্দিন ট্রফি সিনিয়র আন্ত:জেলা ক্রিকেটের ফাইনালে স্থান করে নিল শিলচর। প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সেমিফাইনালে লখিমপুরকে রীতিমত উড়িয়ে দিলেন প্রীতম দাসরা। ইনিংস ও ১০ রানের বিশাল জয় দিয়ে ফাইনালের টিকিট অর্জন করে নিল শিলচর দল। এবার খেতাবি লড়াইয়ে তারা খেলতে নামবে ডিব্রুগড়ের বিরুদ্ধে। আগামী ৩০ জুন থেকে শুরু হবে ফাইনাল ম্যাচ। গুয়াহাটির আমিন গাঁও স্টেডিয়ামে চারদিবসীয় ফাইনাল ম্যাচে থাকবে রিজার্ভ ডেও।
গুয়াহাটির আমিন গাঁও স্টেডিয়ামে প্রথম ইনিংসের বিশাল লিড নিয়ে জয়ের মঞ্চটা গতকালই তৈরি করে নিয়েছিল শিলচর। আজ ম্যাচের তৃতীয় দিন বাকি ছিল শুধু আনুষ্ঠানিকতা। সেই কাজটুকু খুব সুন্দর ভাবে সেরে নিল রাজীব দাসের ছেলেরা। দ্বিতীয় দিনের স্ট্যাম্পসে শিলচরের স্কোর ছিল চার উইকেটে ৩২৪। আজ লাঞ্চের এক ঘণ্টা আগে তারা ইনিংস ঘোষণা করে ৯ উইকেটে ৩৮৪ রানে। আসলে ইনিংস- ডিক্লেয়ার করতে এক রকম বাধ্য ছিল শিলচর। কারণ ম্যাচের প্রথম দিন শুধু চার ওভার বোলিং করেই চোটের কারণে মাঠ ছেড়েছিলেন পেসার দিবাকর জহরি। চোটের কারণে দীর্ঘ সময় ফিল্ডিং করেননি। ফলে চোটগ্রস্ত জহরি কে নিয়ে আর ঝুঁকি নিতে চায়নি টিম ম্যানেজমেন্ট। রাহুল সিং আউট হতেই ইনিংস ঘোষণা করে দেয় তারা।
গতকাল ১১০ রান করে অবসর নিয়েছিলেন সঞ্জু ব্রহ্ম। আজ তিনি আউট হন ১২১ রানে। এছাড়া লোয়ার মিডল অর্ডারে অমিত যাদব (৫০) খেলেন অর্ধশতরনের ইনিংস। রাজ্য দলের তারকা অভিষেক ঠাকুরী খাতা খুলতে ব্যর্থ হন। শমীক দাস ও (১৬) বিশেষ কিছু করতে পারলেন না। উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, শিলচরের ইনিংসে দুই সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ মোশারফ ও সঞ্জু ব্রহ্ম একই স্কোর করলেন। টপ অর্ডারে এই দুজনের শতরানেই বড় স্কোরে পৌঁছে গিয়েছিল শিলচর। কাজেই লোয়ার মিডিল অর্ডার প্রত্যাশা অনুসারে পারফর্ম না করলেও প্রায় চারশর কাছাকাছি পৌঁছে যায় তারা। এর ফলে প্রথম ইনিংসে লিড পায় ২২২ রানের। লখিমপুরের জিতুমনি কলিতা চার উইকেট শিকার করেন।
২২২ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস খেলতে নামে লখিমপুর। তবে এবারও শিলচরের স্পিন ভেলকিতে আটকে যায় তারা। প্রথম ইনিংসের তুলনায় কিছুটা উন্নতি করলেও ২১২ রানে ফুরিয়ে যায় তাদের দ্বিতীয় ইনিংস। মিডল অর্ডারে লড়াকু শতরান করেন রুহীনাথ পেগু (১০০)। এছাড়া জিতুমণি কলিতা (৬১) খেলেন হাফ সেঞ্চুরির ইনিংস। মূলত এ দুজনের ব্যাটিংয়েই সম্মানজনক করে পৌঁছাতে পেরেছে লখিমপুর। তবে ইনিংসের ব্যবধানে হার এড়াতে পারেনি। প্রথম ইনিংসের পর দ্বিতীয় বারও পাঁচ উইকেট শিকার করেন শিলচরের বা হাতি স্পিনার রাহুল সিং। ফলে ম্যাচে তার শিকার দশ উইকেট। দ্বিতীয় ইনিংসে তার বোলিং বিশ্লেষণ ছিল ২২-৩-৭২-৫। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন অমিত যাদব। তিনি নেন তিন উইকেট। দুটি পান শমীক দাস।
ফাইনালে টিকিট অর্জন করায় দারুন খুশি শিলচরের কোচ রাজীব দাস। তিনি জানান, অলরাউন্ড ক্রিকেট খেলেই ফাইনালের ছাড়পত্র আদায় করেছে দল। আলাদা করে প্রশংসা করেন দুই সেঞ্চুরিয়ান পারভেজ মোশারফ ও সঞ্জু ব্রক্ষর। সেইসঙ্গে তরুণ লখিমপুর দলের ও প্রশংসা করলেন শিলচরের কোচ। বললেন, ‘লখিমপুর দলটা তরুণ। দলটাতে ভালো প্রতিভা রয়েছে। অভিজ্ঞতার সঙ্গে ওরা আরো উন্নতি করবে।’ সেমিফাইনাল ম্যাচে চোটের কারণে শুধু চার ওভার বোলিং করতে পেরেছেন পেসার দিবাকর জহরি। সম্ভবত ফাইনালে তাকে পাচ্ছে না শিলচর। দলের কোচ জানান, ফাইনালে বিশাল নাগ একাদশে আসতে পারেন। তবে এখনো এ নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
সংক্ষিপ্ত স্কোর লখিমপুর প্রথম ইনিংস ১৬২/১০, দ্বিতীয় ইনিংস ২১২/১০, শিলচর প্রথম ইনিংস ৩৮৪/৯ ঘোষিত। শিলচর ইনিংস ও দশ রানে জয়ী।
Comments are closed.