শ্মশান জলমগ্ন, জাতীয় সড়কের পাশে শেষকৃত্য, মৃতকে কাঁধ দিলেন কমলাক্ষ
চারদিকে জল থৈ থৈ ! ঘর থেকে বের হওয়ার কোনো ব্যবস্থাই নেই, নেই সরকারি ত্রাণ ও উদ্ধারের ব্যবস্থা। বন্যার এই করুণ রূপ প্রায় পুরো বরাক উপত্যকার গ্রামেগঞ্জে। শহরাঞ্চলে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে বিভিন্ন সংস্থা, ব্যক্তির ছবি তোলার বাহার। গ্রামের চিত্রটা কিন্তু খুবই করুণ।
এমনি এক করুণ দৃশ্য দেখা গেল করিমগঞ্জ জেলার কানিশাইল গ্রামের শরিফ নগরে। শনিবার রাতে ঐ গ্রামের নিশি নমশুদ্র(৩৫) এবং কুলেন্দু নমশুদ্র (৬১) নামের দুইজন যারা সম্পর্কে কাকা ভাতিজা দুর্যোগের মধ্যে উৎকন্ঠায় প্রাণ ত্যাগ করেন। এই অবস্থায় নিকটাত্মীয় এবং পাড়া-প্রতিবেশিরা অসহায় বোধ করেন। রবিবার সকালে এই খবর পেয়ে করিমগঞ্জের বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ এমন পরিস্থিতিতে ভোট রাজনীতিকে পিছনে ফেলে ত্রাণকর্তারূপে অবতীর্ণ হন। পরিবারের লোকেরা তাকে কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন এবং শেষকৃত্য কিভাবে করবেন এটা নিয়ে অসহায়তা ব্যক্ত করেন।
বিধায়কের উদ্যোগে নৌকা করে মৃতদেহ নিয়ে আসা হয় অসম ত্রিপুরা ৮ নম্বর জাতীয় সড়কের পাশে। বিধায়ক নিজে কাঁধে করে মৃত দেহকে শেষকৃত্যের জন্য সড়ক পর্যন্ত নিয়ে আসেন। শ্মশান জলের নিচে, তাই দাহ কার্যের জন্য জাতীয় সড়কের পাশেই অস্থায়ী শ্মশান তৈরি করা হয়। এখানে সব কিছুর ব্যবস্থা করে কাকা ভাতিজা কে পাশাপাশি চিতায় দাহ করা হয়।
বিধায়কের এমন মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে স্তম্ভিত হয়ে যান সড়কের উপরে আশ্রয় নেওয়া বিভিন্ন সম্প্রদায়ের লোক এবং পরিত্রাতারূপে গণ্য করেন।
বরাক বুলেটিনের সাথে এক সাক্ষাৎকারে বিধায়ক কমলাক্ষ দে পুরকায়স্থ বলেন “এই বন্যার সুযোগে বিভিন্ন সরকারি সংস্থাগুলোর টাকা নয়ছয় হচ্ছে, কিন্তু গ্রামের জনসাধারণের কাছে কেউ পৌঁছাচ্ছে না। সবাই পরিস্থিতির সুযোগে পয়সা কামাতে চাইছে। আমি বলতে চাইছি না যে এই দুর্যোগে এদের দুজনকে বাঁচানো যেত; কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সচেতন থাকলে এই ধরনের অনভিপ্রেত ঘটনা নিশ্চয়ই কমানো সম্ভব।”
Comments are closed.