Also read in

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়: দাবি মেনে নেওয়ায় অনশন প্রত্যাহার করল ছাত্র সংগঠন, স্বস্তি

চার দফা দাবিতে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদের অনশন ধর্মঘটের কাছে কার্যত নতি স্বীকার করতে বাধ্য হলো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অভ্যন্তরীণ সড়ক সংস্কার, সেন্ট্রাল ক‍্যান্টিন নির্মাণ, সিআইএল ল্যাবরেটরির কাজ শুরু করা এবং সর্বোপরি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে বরাক উপত্যকার ছাত্র-ছাত্রীদের অতিরিক্ত ৬০ শতাংশ নম্বর যোগ করা – এই চার দফা দাবি নিয়ে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথকে স্মারকপত্র দিয়ে দাবি পূরণে ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল। নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে দাবি পূরণ না হওয়ায় বৃহস্পতিবার থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য অনশন ধর্মঘটে বসে ছাত্রসংসদ। অনশন শুরু হয় সকাল সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল প্রবেশ দ্বারের সামনে। সমস্ত দিন অনশন চলার পর সন্ধ্যা সাড়ে ছটা নাগাদ দাবি পূরণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে আন্দোলনকারীদের আলোচনায় বসার আমন্ত্রণ জানানো হয় ।

উপাচার্য অধ্যাপক দিলীপ চন্দ্র নাথ এর সঙ্গে ছাত্র সংসদের বৈঠকে সবগুলো দাবি কার্যত মেনে নেওয়া হয়। কলেজ স্তরে সেমিস্টার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশে দেরি হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ক্ষেত্রে ৮০ নম্বর যোগ করার মূল দাবির ক্ষেত্রে ৬০ নম্বরে রফা হয় । তাছাড়া ক্যান্টিন নির্মাণের কাজের ওয়ার্ক ওর্ডার বৃহস্পতিবারই দিয়ে দেওয়া হয় এবং আগামী বুধবার ক্যান্টিনের শিলান্যাস করারও প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ল্যাবরেটরির কাজ আগস্ট মাসের প্রথম সপ্তাহে শুরু হবে, এমন আশ্বাসও প্রদান করা হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেতরের সড়কগুলোর সংস্কার কাজ খুব শিগগিরই শুরু হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় ।
সবগুলো দাবি-দাওয়া মেনে নেওয়ায় ছাত্র সংসদের অনশনকারীরা অনশন প্রত্যাহারে সম্মতি প্রদান করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফ থেকে নিবন্ধক ডঃ সঞ্জীব ভট্টাচার্য, অধ্যাপক মানবেন্দ্র দত্ত চৌধুরী, অধ্যাপক প্রণব বিহারী মজুমদার প্রমুখ অনুসরণকারীদের ফলের রস পান করান। এইভাবেই ছাত্রসংসদের আন্দোলনের ‘মধুরেণ সমাপয়েৎ’ হয়।

এখানে উল্লেখ করা যায়, প্রত্যেক বছর কলেজ স্তরে ফাইনাল সেমিস্টারের ফল প্রকাশে দেরি হওয়ায় বরাক উপত্যকা, ডিমা হাছাও এবং কার্বি আংলং জেলার ছাত্র ছাত্রীদের দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ছাত্রছাত্রীরা উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য দেশের অন্য প্রান্তের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির আবেদন করতে পারছেন না । গত বছর আকসার দাবি মেনে নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ স্থানীয় পড়ুয়াদের ভর্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৩০ নম্বর যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন । কিন্তু চলতি বছরেও ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে, দেশের অন্যান্য প্রান্তে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির প্রক্রিয়া ইতিমধ্যে শেষ হয়েছে। এতে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীন পড়ুয়াদের উচ্চশিক্ষা লাভের জন্য এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উপরই নির্ভর হয়ে থাকতে হবে। ফলে অতিরিক্ত ৮০ নম্বর যোগ করার দাবি করা হয়েছিল, তবে কর্তৃপক্ষ আলোচনা সাপেক্ষে অতিরিক্ত ৬০ নম্বর স্থানীয়দের ভর্তির ক্ষেত্রে যোগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন । এই সিদ্ধান্তে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে।

Comments are closed.