চলে গেলেন মহাসড়কের স্বপ্নদ্রষ্টা, ভারতীয় রাজনীতির মহীরুহ, অজাতশত্রু অটল বিহারী বাজপেয়ী
আজ অপরাহ্ন ৫-০৫ মিনিটে অমৃতলোকে যাত্রা করলেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী, এইমসের মেডিকেল বুলেটিনে এই দুঃখজনক খবর সারা দেশে ছড়িয়ে পড়ল। চিরকুমার অটলজীর মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯৩ বছর।গত ৯ সপ্তাহ ধরে এইমস-এ ভর্তি রয়েছেন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী। গত ২৪ ঘণ্টায় তাঁর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি হয়। বুধবার সন্ধ্যায় এইমস-এর তরফে একটি মেডিক্যাল বুলেটিনে জানানো হয়, বাজপেয়ীকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে। অগ্রজের শারীরিক পরিস্থিতির অবনতির খবর শুনেই আজ দ্বিপ্রহরে এইমস-এ ছুটে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় মিনিট ৪০ হাসপাতালে থাকেন তিনি।
অটল বিহারীজী ১৯২৪ ইংরেজির ২৫ ডিসেম্বর মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়রে জন্মগ্রহণ করেন। চার দশকেরও অধিক সময় ধরে তিনি সংসদে এক সফল ব্যক্তিত্ব হিসেবে প্রতিনিধিত্ব করে গেছেন। সংসদীয় রাজনীতিতে তার মত বলিষ্ঠ বক্তা খুব কমই ছিল।সাংসদ হিসাবে তাঁর রাজনৈতিক পটভূমিতে অনেক অবদান রয়েছে। বাজপেয়ী লোকসভায় নয় বার নির্বাচিত হন এবং রাজ্যসভায় দু’বার নির্বাচিত হন। এটি একটি রেকর্ড।তিনি তিনবার ভারতের প্রধানমন্ত্রীর আসন অলংকৃত করেছিলেন। প্রথম দফায় তিনি মাত্র তের দিনের জন্য (১৬মে, ১৯৯৬ থেকে ১লা জুন ১৯৯৬ পর্যন্ত) ভারতবর্ষের প্রধানমন্ত্রীর পদে বসে ছিলেন। পরবর্তীতে দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফায় ভারতীয় জনতা পার্টির সংখ্যাগরিষ্ঠতায় অটল বিহারি বাজপেয়ি ১৯৯৮ ইংরেজির ১৯শে মার্চ ২২শে মে ২০০৪ ভারতবর্ষের প্রধান মন্ত্রীর পদে আসীন ছিলেন। ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেসের বাইরে তিনিই একমাত্র পূর্ণ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ভারতের হাল ধরেছিলেন। ২০০৫ সালে তিনি রাজনীতির অঙ্গন থেকে নিজেকে সরিয়ে নেন । ২০১৫ সালে তাকে ভারতরত্ন উপাধিতে ভূষিত করা হয়।
ভারতকে একটি সম্পূর্ণ পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার নেতৃত্বের অবদান অনস্বীকার্য। রাজনৈতিক অঙ্গনের বাইরেও তিনি একাধারে কবি, সাহিত্যিক ও বিশিষ্ট বাগ্মী ছিলেন । শিলচর সৌরাষ্ট্র মহাসড়কের স্থপতি (যা বিভিন্ন কারণে এখনো সম্পূর্ণ রূপ পায়নি) হিসেবে বরাক উপত্যকা তাঁকে চিরকাল স্মরণ করবে। তৎকালীন অসম সরকারের অনেক বিরোধিতা, প্রতিকূলতা সত্বেও তিনি শিলচরকে মহাসড়কের উৎপত্তিস্থল হিসেবে ঘোষণায় অনড় ছিলেন।
এই খবরে বরাক উপত্যকা সহ সমগ্র দেশে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এক ট্যুইটে মন্তব্য করেছেন ‘আমি শোকস্তব্ধ’। আমরা তার বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি।
Comments are closed.