মেঘালয়ে দুষ্কৃতীরা হত্যা করল পাথারকান্দির ট্রাক ড্রাইভার অলক দাসকে
অশান্ত মেঘালয়ের জয়ন্তিয়া হিলসের পশ্চিমে মৃতদেহ উদ্ধার হল পাথারকান্দির ট্রাক ড্রাইভার অলক দাসের।
জানা গেছে, গতকাল অনুমানিক রাত ২টায় পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বিজয় ছেত্রি খবর পান জোয়াইয়ে এক ট্রাক ড্রাইভারকে মারধর করা হচ্ছে। দেরি না করে দ্রুত ঘটনাস্থলে একটা টিম পাঠিয়ে দেন তিনি। ঘটনাস্থলে পৌঁছার পর ট্রাকের সন্ধান পেলেও ড্রাইভারের খোঁজ পাননি পুলিশ কর্মীরা।
জোয়াইয়ে এফ সি আই এফ এস ডির সামনে দাঁড়িয়ে ছিল চাল ভর্তি ট্রাকটি। অনুপ ট্রেড ট্রান্সপোট প্রাইভেট লিমিটেড এর পক্ষ থেকে এনিয়ে এজাহার দায়ের করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়েছে, একটি গাড়িতে আসা দুই দুস্কৃতি ট্রাকে আক্রমন করে ও ট্রাক হাইজ্যাক করে নেয়। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছেত্রি বলেন, ‘আমরা ট্রাক উদ্ধার করেছি। একজনকে আটক ও করেছি। এনিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।’
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, যখন পুলিশ দল ঘটনাস্থলে ট্রাক ড্রাইভার এর উদ্ধারের জন্য তল্লাশি শুরু করে তখন রাস্তায় রক্তের ছাপ দেখতে পান। এর সূত্র ধরেই কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে যাওয়ার পর পুলিশ দল ট্রাক ড্রাইভার এর রক্তাক্ত লাশ উদ্ধার করে। এ নিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার বলেন, ‘প্রাথমিক তদন্তে এটাকে খুন বলেই মনে করা হচ্ছে। ধারালো কিছু একটা দিয়ে ট্রাক ড্রাইভার কে একাধিকবার আঘাত করা হয়েছে। যার ফলে তার মৃত্যু হয়েছে। তবে নিশ্চিতভাবে এখনই কিছু বলা যাবে না। পোস্টমর্টেম হবার পর আমরা নিশ্চিত করে কিছু বলতে পারব।’
ট্রাক ড্রাইভার কে সনাক্ত করা গেছে। মৃত অলক দাস করিমগঞ্জের পাথারকান্দি জেলার ধীরেন্দ্র দাসের পুত্র। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ছেত্রী জানান, মৃতের পরিবার কে এই ঘটনার সম্পর্কে জানানো হয়েছে। তারা ইতিমধ্যেই মেঘালয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন। এই মুহূর্তে শিলংয়ে এক অশান্ত পরিবেশ বিরাজ করছে। শুধু রাজধানী শহরে নয়, মেঘালয়ের বেশ কয়েকটি জেলাতে হিংসার খবর পাওয়া গেছে। তবে পুলিশ সন্দেহ করছে, এই ট্রাক ড্রাইভার এর মৃত্যুর ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের চলতি হিংসার কোন সম্পর্ক নেই। পশ্চিম জয়ন্তিয়া হিলসের পুলিশ সুপার বিক্রম ডি মরাক বলেন, ‘এখন পর্যন্ত যতোটুকু তদন্ত হয়েছে তাতে মনে হচ্ছে এই ঘটনার সঙ্গে রাজ্যের চলতি হিংসার কোন সম্পর্ক নেই। চালভর্তি ট্রাক কে লুট করার জন্যই এর ড্রাইভার কে হত্যা করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত আমরা একজনকে আটক করেছি। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ রিপোর্ট জমা পড়ার পরই কিছু একটা নিশ্চিতভাবে বলা যাবে।’
এই মুহূর্তে মেঘালয় রাজ্যে ব্যাপক হিংসা চলছে। ইতিমধ্যেই আসাম পুলিশ এক নির্দেশিকা জারি করেছে। তাতে আসামের বাসিন্দাদের মেঘালয় যেতে না করা হয়েছে। মেঘালয় চলতি কারফিউ প্রত্যাহার না করা পর্যন্ত ভায়া মেঘালয় হয়ে সফর না করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এই মুহূর্তে আসামের অনেক বাসিন্দাই মেঘালয় আটকা পড়ে আছেন। তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। মেঘালয় সরকারের পক্ষ থেকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে থাকার দাবি করা হলেও আসামের এই ট্রাক ড্রাইভার এর হত্যার ঘটনা সেটাকে ভুল প্রমাণিত করেছে।
Comments are closed.