পরিবারের তিনজন কোভিড পজিটিভ, নরসিংপুরের শান্তিবালা নাথের অন্তিম সৎকার করলো আপদ-মিত্ররা
কাছাড় জেলার নরসিংপুর দ্বিতীয় খন্ড এলাকার ঘটনা। বিগত ৯ জুলাই, বৃহস্পতিবার কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়ায় একই পরিবারের তিনজন সদস্য-সদস্যা দেবাশীষ নাথ (৩৫), সঞ্জীব কান্তি নাথ (৫২) এবং দেবাংশি নাথ (৩৪) কে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ইতিমধ্যে এক মর্মস্পর্শী ঘটনা ঘটে এদের পরিবারে। প্রয়াত সুর মোহন নাথের ধর্মপত্নী বয়োজ্যেষ্ঠা শান্তিবালা নাথ (৮৫) পরলোক গমন করেন গতকাল সন্ধ্যা ৬ টা ৩০ মিনিটে । একে তো কনটেইনমেন্ট জোন তার উপর ঘরের তিনজন কোভিড সংক্রমিত । স্বাভাবিকভাবেই আশেপাশের লোকজন শান্তি বালার অন্তিম সংস্কার এগিয়ে আসতে পিছুপা হলেন।
আজ সকাল পর্যন্ত মৃতদেহ ঘরের মধ্যে পরিত্যাক্ত অবস্থায় থাকার পর প্রশাসনের তরফ থেকে শেষমেষ ডাকা হয় আপদ-মিত্রদেরকে, যারা ইতিমধ্যেই এ সব ব্যাপারে প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন। স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসেন সোনাই এলাকার তিনজন যুবক নাজম উদ্দিন চৌধুরী, শহীদ আহমেদ চৌধুরি এবং রশিদ আহমেদ চৌধুরী। সোনাই রাজস্ব চক্রের ফিল্ড অফিসার বিপ্রজিত পাল চৌধুরী আমাদেরকে জানান, “ওরা সবাই প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এবং কিভাবে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর মেনে অন্তিম সংস্কার করতে হয় তা ওদের জানা আছে। আমাদের কাছ থেকে সংবাদ পেয়ে ওরা সাথে সাথেই রাজি হয়ে যায় এবং শান্তি বালা নাথের অন্তিম সংস্কার করা হয়।”
কোভিড প্রটোকল মেনে পিপিই কিট পরে অন্তিম সৎকারে এগিয়ে আসেন এই তিন সাহসী যুবক। নাথ যোগী সম্প্রদায়ের প্রথা মেনে শান্তি বলাকে বাড়ির পাশেই একটি স্থানে মাটির নিচে সমাধিস্থ করা হয়।
বিপ্রজিত পাল চৌধুরী বরাক বুলেটিনকে আরো বলেন, ” উনার অন্তিম সংস্কার সম্পন্ন হয়েছে, বিদেহী আত্মার চিরশান্তি কামনা করছি”।
এখানে উল্লেখ্য, ‘আপদ মিত্র’ একটি বিশেষ ধরনের প্রকল্প যাতে ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট অথরিটি দ্বারা যুবকদেরকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় যাতে বিপদে-আপদে এরা যেকোনো ধরনের উদ্ধার কার্য সম্পন্ন করতে পারেন।
Comments are closed.