সাতদিন পর কাটাখাল নদী থেকে হাইলাকান্দির নিখোঁজ শিক্ষকের মৃতদেহ উদ্ধার
সাতদিন পর কাটাখাল নদীতে ভেসে উঠল নিখোঁজ শিক্ষকের লাশ। লালা শিক্ষা ব্লকের সর্বোদয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক দিগেন্দ্র সিনহার মৃতদেহ সোমবার কাটাখাল নদী থেকে উদ্ধার করে ময়না তদন্তে প্রেরণ করেছে পুলিশ। গত পাঁচ আগস্ট কাটাখাল নদীতে স্নান করতে গিয়ে নিখোঁজ হন তিনি। এস ডি আর এফ বাহিনী নদীতে তল্লাশি চালিয়েও কোন সন্ধান পায় নি। এদিকে সোমবার সকালে নিমাইচান্দপুর এলাকায় কাটাখাল নদীর জলে শিক্ষক দীগেন্দ্র সিংহের লাশ দেখতে পান স্থানীয় নাগরিকরা। এরপর খবর দেওয়া হয় পুলিশে।
কালাছড়া ফাঁড়ি পুলিশ ছুটে গিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তে প্রেরণ করে। এদিকে নিহত শিক্ষকের স্ত্রী অভিয়োগ করে বলেন, সরকারি শিক্ষকতার চাকরি থেকে অবসর গ্রহনের দীর্ঘ প্রায় দেড় বছর পর ও অবসরকালীন প্রাপ্য অর্থ না পেয়ে কাটাখাল নদীতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন তাঁর স্বামী দিগেন্দ্র সিনহা। বয়স – ৬২, বাড়ি হাইলাকান্দির নিত্যানন্দপুর দ্বিতীয় খন্ড এলাকায়। হতভাগা শিক্ষকের স্ত্রী ইন্দ্রকৈনা সিনহা ও কন্যা দেবশ্রী সিনহা সরাসরি অভি্যোগ করে বলেন, শিক্ষা বিভাগের উদাসীনতা সময়মত পেনশনের টাকা না পেয়ে অভাব অনটন সহ্য না করতে পেরে দীগেন্দ্র সিনহা কঠোর সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছেন।
মেয়ের পরীক্ষার ফি জোগাতে পর্যন্ত পারছিলেন না। দীগেন্দ্র সিনহা লালা শিক্ষা ব্লকের ৫৬২ নং সর্বোদয় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের পদ থেকে ২০১৭ সালের ৩১ জানুয়ারি অবসরগ্রহণ করেন। কিন্ত দীর্ঘ দেড় বছর পর ও তাঁর অবসরকালীন অর্থ না পাওয়ায় পরিবারে চরম আর্থিক সংকট দেখা দেয়। অন্যদিকে মেয়ের ডি এল এড পরীক্ষার রেজিস্ট্রেশন সহ ভর্তি ফি হিসেবে বার হাজার টাকা প্রয়োজন পড়ে। তখন মেয়ে বাবার কাছে ওই টাকা চায়। দীগেন্দ্র বাবুর হাতে টাকা না থাকায় তিনি অসহায় হয়ে পড়েন বলে জানান দেবশ্রী দেবী। বলেন, অনেক কস্টে দুই হাজার টাকা জোগাড় করে বিছানার বালিশের নীচে সেই টাকা রেখে নদীতে স্নান করতে যাচ্ছেন বলে গিয়ে কাটাখাল নদীতে ঝাঁপ দেন। এরপর থেকে ই রিনি নিখোঁজ হয়ে আছেন। স্ত্রীর অভিয়োগ, অর্থসংকটে দিশেহারা হয়ে নদীর জলে আত্মহত্যা করেছেন তার স্বামী।
Comments are closed.