উপাচার্য এলেন, তের দফা সহমতের ভিত্তিতে প্রত্যাহৃত হল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ধর্মঘট
বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের ধর্মঘট অবশেষে প্রত্যাহার হলো। আজ উপাচার্য জাপান থেকে ফিরে এসে ছাত্রবিক্ষোভের মুখোমুখি হন, তারপরই তৎপরতা তুঙ্গে ওঠে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের গেইটে উপাচার্যের সাথে আলোচনাক্রমে অবশেষে বিকেল সাড়ে পাঁচটা নাগাদ ১৩ দফা সহমতের ভিত্তিতে ধর্মঘট প্রত্যাহার করতে সম্মত হয় ছাত্র সংগঠনগুলো। মোটামুটি সবগুলো দাবিই লিখিত ভাবে মেনে নেওয়া হয়েছে, মূল দাবি রিসার্চ স্কলারদের স্কলারশিপের টাকা আগামী ১৫ এপ্রিলের মধ্যে দিয়ে দেওয়া হবে।
মেনে নেওয়া প্রস্তাব গুলোর মধ্যে আছে,
১) রিসার্চ স্কলারদের ফেলোশিপ বাবদ প্রাপ্য ২০১৭ এবং ২০১৮ সনের পুরো টাকা বকেয়াসহ আগামী ১৫ এপ্রিল, ২০১৯ এর ভিতর দেওয়া হবে।
২) ২০১৯ সালের যোগ্য স্কলারদের ফেলোশিপের আবেদনের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে। শর্ত অনুযায়ী ইউজিসি থেকে অনুদান প্রাপ্তির পর নতুন ভর্তিযোগ্য স্কলারদের ফেলোশিপ প্রদান করা হবে। ছয় মাসের মধ্যে ফাণ্ড পাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে উদ্যোগ নেওয়া হবে।
৩) পিএইচডি, এম ফিল কোর্সে ভর্তি হওয়ার পর ফেলোশিপের জন্য যে স্কলাররা আবেদন করতে পারেননি সেই স্কলাররাও ফেলোশিপের জন্য আবেদন করতে পারবেন। তারা আগামী ১২ মার্চের মধ্যে তাদের আবেদন পত্র জমা দিতে পারবেন।
৪) স্কলারদের যারা ইতিমধ্যেই ২০১৪,১৫ এবং ১৬ সালের জন্য আনুষঙ্গিক খরচের দাবি করেছেন, তাদের ৩১ মার্চের মধ্যে দাবি গুলো খতিয়ে দেখার পর তা প্রদান করা হবে।
৫) ইতিহাস বিভাগের স্কলারদের রেজিস্ট্রেশনের ব্যাপারটি এধরনের আরো অন্যান্য কেসগুলোর সঙ্গে সমাধান করা হবে।
৬) মুলতবি থাকা ২০১৯ সালে পিএইচডিতে ভর্তির জন্য বিজ্ঞাপনটি পর্যালোচনা করা হবে এবং নিয়ম মেনে এই ভর্তির কাজ ২০১৯ সালের মার্চ মাস নাগাদ সম্পূর্ণ করা হবে।
৭) স্কলারদের এম ফিল থিসিস সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ে ইভালুয়েশনের ব্যবস্থা করা হবে এবং ইভালুয়েশনের পর এমফিল ডিগ্রি প্রদানের ব্যবস্থা করা হবে।
৮) বর্তমান বি- ভক ছাত্ররা এই কোর্স সম্পূর্ণ করতে পারবে, যদি নতুন প্রবেশকারীদের ক্ষেত্রে ইউজিসি থেকে আর কোন অনুদান নাও পাওয়া যায়। নিজস্ব আর্থিক অনুদানের অধীনে কোর্স চালিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেবে।
বি-ভকের পঞ্চম সেমিস্টারের বাকি থাকা রেজাল্ট কনভোকেশনের আগেই ঘোষণা করা হবে। কনভোকেশনের পরই শুরু করা হবে বি-ভক এর ক্লাস। কোর্সের দায়িত্বপ্রাপ্ত ইনচার্জ এই বি-ভক কোর্সের ছাত্রদের জন্য ইন্টার্নশিপ এবং ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করবেন।
বি- ভক প্রোগ্রামের নোডাল অফিসারের দায়িত্ব থেকে ডঃ দেবাশীষ করকে রেহাই দেওয়া হবে।
৯) ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসের মধ্যে ফার্মেসিউটিক্যাল সাইন্স ডিপার্টমেন্টের নতুন ভবনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হবে। নতুন ভবন তৈরি এবং অন্যান্য পরিকাঠামো সম্পূর্ণ হওয়ার পরে এম ফার্ম কোর্স শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যেমন ফার্মাসিউটিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া (এ আই সি টি ই)র সঙ্গে যোগাযোগ করা হবে।
১০) কম্পিউটার সাইন্স ডিপার্টমেন্টে এপ্রিল মাসের মধ্যে ১০ টি কম্পিউটার প্রদান করা হবে।
১১) আগামী ১৮ মার্চ একটি আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হোষ্টেলে গ্যাস সরবরাহ,হোস্টেলে পাচক এবং তার সহকারির ব্যবস্থা করা ইত্যাদি বিষয় স্থান পাবে।
এ ধরনের অনেকগুলো দাবি কাগজে কলমে মেনে নেওয়া হয়েছে। এখন দেখার বিষয় তার মধ্যে কতটা দাবি বাস্তবে পূরণ করা হয়।
Comments are closed.