Also read in

ঘুঙ্গুর সহ আরও দুটো আউটপোস্টকে পূর্ণাঙ্গ থানা করতে আবেদন জানিয়েছেন এসপি, "মেডিক্যালের সুরক্ষা দ্বিগুণ করা হবে, হতে পারে আরও গ্রেফতার"

সম্প্রতি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে বেশ কয়েকটি অপ্রীতিকর মুহূর্ত চোখে পড়েছে। ব্লাড ব্যাঙ্ককে ঘিরে কিছু লোক বারবার অশান্তি সৃষ্টি করার প্রয়াস নিয়েছে। শেষমেষ স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে সুরক্ষার আবেদন জানিয়ে একটি চিঠি লিখেন অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া। পাশাপাশি ঘুঙ্গুর আউটপোস্টকে পূর্ণাঙ্গ থানা বানিয়ে এলাকায় সুরক্ষা ব্যবস্থা উন্নত করার আবেদন জানিয়েছিলেন তিনি।

পুলিশসুপার বিএল মিনা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে ঘুঙ্গুর সহ জেলার আরও দুটো আউটপোস্টকে পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে রূপান্তরিত করার আবেদন তিনি পাঠিয়েছেন। শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল গুরুত্বপূর্ণ পরিষেবার আওতায় পড়ে, তাই এর সুরক্ষা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

বৃহস্পতিবার দুপুরে নিজের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে কথাগুলো জানান পুলিশ সুপার। সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশসুপার জগদীশ দাস। তারা বলেন, “গত সপ্তাহে রাঙ্গিরখাড়ি আউটপোস্টকে পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে রূপান্তরিত করতে আবেদন পাঠানো হয়েছে। সম্প্রতি শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যেসব ঘটনা হয়েছে, তারপর আমরা চাইছি ঘুঙ্গুর আউটপোস্টকে পূর্ণাঙ্গ থানা করতে। এখানে সেখানে আমাদের পর্যাপ্ত জমি রয়েছে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় নিযুক্তি হয়ে গেছে, শুধুমাত্র পূর্ণাঙ্গ থানা হিসেবে ঘোষণা করা বাকি। একইভাবে তারাপুর আউটপোস্ট তালিকায় স্থান পাবে।”

মঙ্গলবার শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ডাক্তারদের হুমকি দেওয়া এবং পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে তোলার দায়ে কালা নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে গত বছর একটি মামলা হয়েছিল সেই সূত্র ধরেই গ্রেফতার করা হয়। এই প্রসঙ্গ টেনে পুলিশ সুপার বলেন, “শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ইমার্জেন্সি সার্ভিসেস, অর্থাৎ অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবার আওতায় পড়ে। যদিও হাসপাতালের তরফে যে এজাহার দায়ের করা হয়েছে তাতে কড়া ভাষায় কিছু বলা নেই, তবে পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে আমরা বিষয়টি একটু কড়া ভাবেই নিচ্ছি। আগামীতে হাসপাতাল চত্বরে সুরক্ষা আরেকটু কঠোর করা হবে। পাশাপাশি তদন্ত করে দেখা হবে এই সূত্রে আর কে কে জড়িত রয়েছে।”

করোনাকালে গোটা বরাক উপত্যকার সবথেকে বেশি ভরসাযোগ্য প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাজ করেছে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল। এজন্য হাসপাতালের অধ্যক্ষ সহ প্রত্যেক ব্যক্তিকে বারবার সাধুবাদ জানিয়েছে রাজ্য সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগ। তবে সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনায় অত্যন্ত হতাশ হয়েছেন হাসপাতালে অধ্যক্ষ সহ এখানে কর্মরত চিকিৎসকরা। তারা মেডিক্যাল ক্যাম্পাসে নিজেদের সুরক্ষিত মনে করছেন না। এই প্রসঙ্গে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মার কাছে বৃহস্পতিবার এক চিঠি পাঠিয়েছেন অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া।

হতাশা এবং ক্ষোভের সুরে অধ্যক্ষ ডাঃ বাবুল বেজবরুয়া বলেন, “করোনা পরিস্থিতিতে আমরা প্রত্যেকে কঠোর পরিশ্রম করেছি, এমনকি জীবনের ঝুঁকি নিয়েছেন চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা। এর স্বীকৃতি সরকার আমাদের দিয়েছে। হাসপাতালে অনেক খামতিগুলো পূরণ করে পর্যাপ্ত পরিষেবা দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমাদের চিকিৎসকরা বাড়তি পরিশ্রম করেছেন। অথচ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার পর থেকেই কিছু দুষ্টচক্র বারবার আমাদের হাসপাতালের পরিবেশ নষ্ট করতে চেষ্টা করছে। নানান বাহানায় ক্যাম্পাসে ঢুকে অশান্তি ছড়ায় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে গেলে আমরা পুলিশকে খবর দিই, কিন্তু এখানে পূর্ণাঙ্গ থানা না থাকায় পুলিশের সংখ্যা কম রয়েছে।”

Comments are closed.

error: Content is protected !!