Also read in

উধারবন্ধের পর সোনাইয়ে প্রকাশ্যে সুস্মিতা বিরোধিতা কংগ্রেসে, "এটি বিজেপি করিয়েছে," বললেন দলের শীর্ষ নেতারা

দুইদিনের বরাক উপত্যকা সফরে শনিবার শিলচর আসেন এআইসিসির সাধারণ সম্পাদক জিতেন্দ্র সিং। তার উপস্থিতিতে উধারবন্দে ‘সুস্মিতা দেব মুর্দাবাদ’ স্লোগান দিয়েছিলেন কিছু কংগ্রেস কর্মীরা। রবিবার একইভাবে সোনাই অঞ্চলে সুস্মিতা দেব বিরোধিতা করেন কিছু দলকর্মী। তবে শুধুমাত্র দলের একজন নেতার বিরুদ্ধে স্লোগান ওঠায় স্বভাবতই প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, এটি আদৌ আদর্শগত বিরোধিতা না ব্যক্তিগত। প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দেক আহমেদ মনে করেন, উদারবন্দে রাজদীপ গোয়ালা এবং সোনাই অঞ্চলে স্থানীয় বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের চক্রান্তে কাজটি করা হয়েছে। একই কথা বলেন মহিলা কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভানেত্রী সুস্মিতা দেবও। তিনি সরাসরি না বললেও ইঙ্গিতে বুঝিয়ে দিয়েছেন এটি হিমন্ত বিশ্ব শর্মা নির্দেশেই হয়েছে।

শনিবার শিলচর-উধারবন্দ সড়কে কলারতল এলাকায় কংগ্রেসের অনুষ্ঠান চলাকালীন কিছু দলীয় কর্মী সুস্মিতা দেব মুর্দাবাদ বলে স্লোগান দেন। দলের পক্ষ থেকে কেউ কেউ বলছেন যারা স্লোগান দিয়েছে তারা আগেই দল ছেড়ে বেরিয়ে গেছিল। তবে উধারবন্দে শুধুমাত্র স্লোগান দিলেও রবিবার দুপুরে সোনাইয়ে অনুষ্ঠিত সভায় পরিস্থিতি বেশ উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দলের অন্যান্য নেতারা যখন ভাষণ দিচ্ছিলেন সে সময় গন্ডগোল হয়নি, সুস্মিতা দেব মাইক হাতে নেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একাংশ কংগ্রেস কর্মী উষ্মা প্রকাশ করেন। তাদের বিরুদ্ধে পাল্টা স্লোগান দিতে শুরু করেন সুস্মিতা-সর্মথকরা। এর মধ্যেই তার ভাষণ চালিয়ে যান সুস্মিতা। পরিস্থিতি সামাল দিতে দলের অন্যান্য নেতারা এগিয়ে আসেন।

দলের বরিষ্ঠ নেতা তথা প্রাক্তন মন্ত্রী সিদ্দিক আহমেদ এই ঘটনার জন্য সরাসরি রাজদীপ গোয়ালা এবং আমিনুল হক লস্করকে দায়ী করেন। ফোনে বরাক বুলেটিনের সঙ্গে আলাপচারিতায় তিনি বলেন, “গতকাল উধারবন্দে যে ঘটনা হয়েছিল, তার পিছনে সরাসরি মদত যুগিয়েছে ছিলেন কংগ্রেস থেকে বহিস্কৃত নেতা বিধায়ক রাজদীপ গোয়ালা। দল থেকে বেরিয়ে যাওয়ার পর তিনি এভাবে কংগ্রেসের ক্ষতি করার চেষ্টা করছেন। সোনাইয়ে অনুষ্ঠিত সভায় একইভাবে শুধুমাত্র সুস্মিতা দেবের বিরুদ্ধে স্লোগান দিয়েছেন একাংশ ব্যক্তি। তাদের আসল উদ্দেশ্য কি এবং তারা কার সাহায্যে কাজগুলো করছেন এটা আমরা যাচাই করে দেখব। তবে আমি দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি, এর পেছনে স্থানীয় বিধায়ক আমিনুল হক লস্করের হাত রয়েছে। তারা অত্যন্ত নিম্ন স্তরের রাজনীতি করছেন, কংগ্রেসের সঙ্গে লড়াইয়ে হেরে যাওয়ার ভয়ে রয়েছে, তাই আগে থেকেই এধরনের বিষাক্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।”

সুস্মিতা দেব সরাসরি না বললেও এই ঘটনার জন্য বিজেপি নেতা হিমন্ত বিশ্ব শর্মাকে দায়ী করেছেন। তিনি বলেন, “প্রকাশ্য সভায় প্রায় পাঁচ হাজার কংগ্রেস কর্মী আমার সমর্থনে স্লোগান দিয়েছেন, আমার কাছে সেই মুহূর্ত বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যদি দলের কেউ আমার কাজে সত্যি সত্যিই অসন্তুষ্ট থাকে, তার সঙ্গে বসে আলোচনা করতে পারি। তবে গতকাল এবং আজ যে ঘটনাগুলো হয়েছে সেটা বিজেপির চক্রান্ত। তারা ইচ্ছাকৃতভাবে আমাদের মধ্যে নিজেদের মানুষ ঢুকিয়ে দিয়েছে এবং সভা পন্ড করার চেষ্টা করেছে। এতে একটা জিনিস স্পষ্ট হয়ে গেছে, বিজেপি আমাদের সমীহ করছে এবং ভয় পাচ্ছে। আমরা আবার নিজেদের পুরনো ছন্দ ফিরে পাচ্ছি, সাধারণ মানুষ আমাদের কথা শুনতে শুরু করেছেন। এই ধারা আগামীতে আরও বৃদ্ধি পাবে, আমরা জনগণের সামনে বিজেপির ব্যর্থতার ছবি তুলে ধরব। তারা জানেন নিজেদের দুর্বলতা কোথায়, তাই অত্যন্ত নিম্ন স্তরের রাজনীতি করতে শুরু করেছেন। আমরা এতে ভয় পাইনা, আগামীতে আবারও জনগণের কাছাকাছি পৌঁছে যাব, তাদের হয়ে জোড়ালো আওয়াজ তুলব, আপাতত এটাই আমাদের লক্ষ্য।”

Comments are closed.

error: Content is protected !!