Also read in

২২ ঘন্টা পর নিয়ন্ত্রণে পানপট্টির আগুন, "ওল ক্লিয়ার", বললেন এসডিআরএফ জওয়ানরা, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হচ্ছে, জানালেন এসপি

প্রায় ২২ ঘণ্টা পর নিয়ন্ত্রণে এলো পানপট্টির জুতোর গুদামের আগুন। সুরক্ষা বাহিনী এসডিআরএফের আধিকারিকরা এখন গোদামের ভেতরে ঢুকতে পেরেছেন এবং সেখানে জল ছিটিয়ে আগুনের ধ্বংসাবশেষ নিভিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারা জানিয়েছেন, আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে এবং কিছুক্ষণের মধ্যেই জল, ফোম এবং অন্যান্য কেমিক্যালের মাধ্যমে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া হবে। এসডিআরএফ জওয়ানরা মুখে মাস্ক পরে বিশেষ পাইপ নিয়ে একেবারে বিল্ডিংয়ের ভেতর পর্যন্ত ঢুকে গেছেন। তারা ভেতর থেকেই আমাদের বলেছেন, “ওল ক্লিয়ার, আমরা ভিতরে ঢুকে পড়েছি, যেটুকু জ্বলার ছিল, সেটা ভস্ম হয়ে গেছে, বাকিটা আমরা পরিস্কার করে দিচ্ছি।”

পুলিশসুপার বিএল মিনা জানিয়েছেন, তিনি বিকেলে এলাকা পরিদর্শন করেছেন এবং সুরক্ষা বাহিনীরা জানিয়েছেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে, এখন ধীরে ধীরে কাজ এগিয়ে যাবে, আর ভয় নেই।

সন্ধ্যে হওয়ার আগেই বিল্ডিংয়ের বিভিন্ন ছোট ছোট জানালার ফাঁক দিয়ে দেখা যাচ্ছে এসডিআরএফ জওয়ানরা ভিতরে রয়েছেন। তবে বিষাক্ত ধোঁয়া কিছুটা রয়েছে। পাশাপাশি গোদাম ঘরের বিল্ডিংটিতে হাজার হাজার ফাটল দেখা যাচ্ছে। সামনের দিকের কিছু অংশ ইতিমধ্যে ভেঙেও গেছে। দেয়ালগুলো এখনো অত্যন্ত উত্তপ্ত। আগুন নিভে যাওয়ার পর সবথেকে বড় চ্যালেঞ্জ হবে এই বিল্ডিংকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা, অথবা ভেঙে দেওয়া। কারণ এর চারপাশে রয়েছে আরও বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি এবং গোদাম। জেলার দুর্যোগ মোকাবেলা বিভাগের আধিকারিকরা এলাকায় রয়েছেন, তবে তারা এই মুহূর্তে এই বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে চাইছেন না।

এলাকা পরিষ্কার হওয়ায় দেখা গেছে আশেপাশের বিল্ডিংগুলো আগুনের তাপে বেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শনিবার রাতেই এলাকার প্রত্যেক বিল্ডিং থেকে সিলিন্ডার সহ অন্যান্য দাহ্য বস্তু তড়িঘড়ি সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল। তবে মানুষ ঘর ছেড়ে যাননি, আশে পাশেই ছিলেন এবং লাগাতার নিজেরাও ঘরের জিনিসপত্র জলে ভিজিয়ে রেখেছেন যাতে আগুন কোনভাবেই ছড়িয়ে না পড়ে।

শনিবার সন্ধ্যে সাতটা নাগাদ পানপট্টির এক জুতার দোকানে আগুন লেগেছিল এবং সেটা ধীরে ধীরে ভেতরের গোদামঘর পর্যন্ত পৌঁছে যায়। গোদামঘরে বিরাট পরিমাণের জুতোর স্টক ছিল, ফলে মাত্রা ছাড়ায় আগুন। পুলিশ এবং সুরক্ষা বাহিনীর রাতভর তৎপরতায় আগুন এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারেনি, কিন্তু জুতোর গোদাম পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। ভোররাত পর্যন্ত ভেতর থেকে লাল আগুনের শিখা চোখে পড়ছিল, কিন্তু সকালে সেটা প্রচন্ড ধোঁয়ায় পরিণত হয়ে যায়। দিনভর এলাকা পরিষ্কার করার পাশাপাশি গোদামের বিল্ডিংয়ের ভেতর ঢোকার চেষ্টা করেন সুরক্ষা বাহিনীরা। শেষমেষ সন্ধ্যে হওয়ার আগে তারা জানিয়েছেন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে।

গোদাম ঘরটি যেভাবে বানানো হয়েছে এতে একেবারেই কোনও সুরক্ষা ব্যবস্থা রাখা হয়নি। শিলচর শহরের সবথেকে জনবহুল এলাকায় এভাবে একটি ঘর গড়ে তোলা হল এবং পুরসভা বা প্রশাসন বাধা দিল না, এটা কেমন করে হয়! অনেকেই এই প্রশ্ন তুলছেন।

Comments are closed.