বিরোধিতা উড়িয়ে দিয়ে গান্ধীবাগে অ্যামিউজমেন্ট পার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন ৫ সেপ্টেম্বর, আসছেন পীযুষ হাজারিকা
শিলচরে এই প্রথম বড় মাপের একটি বিনোদন পার্ক গড়ে উঠতে চলেছে। স্বভাবতই বরাকবাসী মাত্রেরই খুশি হওয়ার কথা ছিল। সরকারের এ ধরনের কাজকে স্বাগত না জানানোর কোনও কারণই ছিল না। তা সত্ত্বেও এই অ্যামিউজমেন্ট পার্ক নিয়ে অনেক তর্ক-বিতর্ক চলছে, বিভিন্ন মহল থেকে বিরোধিতা করা হচ্ছে সরাসরি। যদিও সব ধরনের বিরোধিতাকে উড়িয়ে দিয়ে আগামী ৫ সেপ্টেম্বর গান্ধীবাগে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হতে চলেছে বহু আলোচিত এবং বহু বিতর্কিত এই বিনোদন পার্কের। উদ্বোধন করবেন আসামের নগর উন্নয়নমন্ত্রী পীযূষ হাজারিকা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, শিলচর পুরসভা এবং এপিডিএল’র যৌথ উদ্যোগে প্রথমবারের মতো শিলচরে অ্যামিউজমেন্ট পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। পার্কটিতে ওয়াটার রাইড, বোটিং, মাল্টিপারপাস হল এবং আরও অনেক আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য থাকবে। ছত্রিশ মাসের সময়সীমার মধ্যে এই পার্কটি গড়ে ওঠবে বলে জানানো হয়।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে বলা হয় যে গান্ধীবাগের সবুজ এলাকার ক্ষয়ক্ষতি না করেই এই পার্ক গড়ে তোলা হবে। একটি গাছও এই বিনোদন পার্ক গড়ে তুলতে কাটা হবে না বলে জোর দিয়ে জানান কর্তৃপক্ষ। পার্ক স্থাপনের ভালো দিক তুলে ধরে তারা এও উল্লেখ করেন যে এর ফলে অন্ততপক্ষে দু’শ আড়াইশো যুবক যুবতীর প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে অর্থ সংস্থানের ব্যবস্থা হবে।
এদিকে এই পার্ক স্থাপনের বিরোধিতা করে শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ সুস্মিতা দেব তার সঙ্গী সাথীদের নিয়ে বারবার জেলা উপায়ুক্তের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন। তাছাড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক মঞ্চ সহ বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক সংগঠন, শিলচরের বুদ্ধিজীবি মহল প্রতিনিয়ত এই অ্যামিউজমেন্ট পার্ক স্থাপনের বিরোধিতা করছেন। অনেকের মতে, গান্ধীবাগ হচ্ছে শিলচর শহরের অনেকটা ফুসফুসের মত। মানুষ প্রাণ খুঁজে পায় এখানে। শহরের হৃদপিন্ডে সবুজকে ধ্বংস করে এভাবে বিনোদন পার্ক গড়ে তোলাকে কিছুতেই মানতে পারছেন না তারা। এই মহল বিনোদন পার্কের বিরোধিতা করছেন না। তাদের শুধু আপত্তি গান্ধীবাগে এই বিনোদন পার্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। এক্ষেত্রে বিনোদন পার্কের স্থান হিসেবে অনেকে ভাবছেন রামনগরকে বেছে নেওয়া যায়। এমনকি দুধপাতিলেও এ ধরনের পার্ক গড়ে তোলা সম্ভব। তাহলে পার্ক স্থাপন যেমন সম্ভব হবে, তেমনি সবেধন নীলমণি দীর্ঘদিন ধরে শিলচরের ঐতিহ্য বহনকারী গান্ধীবাগের দেহটাতে কাটাচেরা করা বন্ধ করা যেতে পারে।
শিলচরের একাংশ অবশ্য বিনোদন পার্ক স্থাপনের সপক্ষেও কথা বলছেন। তারা মনে করছেন, এই বিনোদন পার্ক গড়ে তোলার মধ্য দিয়ে শিলচরের মান উন্নত হবে, পর্যটকদের আকৃষ্ট করা যেতে পারে।তাদের মতে, পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে কিংবা মানুষের আনন্দ প্রদানের ক্ষেত্রে যদি এই বিনোদন পার্ক সফল হয় তাহলে তাতে ক্ষতিই বা কি।
এখন দেখার বিষয়, কর্তৃপক্ষের কথা অনুযায়ী গাছ না কেটে এই অ্যামিউজমেন্ট পার্ক গড়ে তোলা সম্ভব কিনা কিংবা এই পার্ক গড়ে ওঠার পর সত্যি পর্যটকদের আকর্ষণ করা সম্ভব হয় কিনা।
Comments are closed.