সোনাইয়ে ২০২১-য়ে প্রার্থী আমিনুলই, বরাকে অন্তত আরও তিনটি আসনে মুসলমান প্রার্থী খুঁজছে বিজেপি, ঘোষণা রাজদীপের
আগামী বছর বিধানসভা নির্বাচনে সোনাই সমর্থিত প্রার্থী হচ্ছেন আমিনুল হক লস্করই। এখানেই শেষ নয় বরাক উপত্যকায় আরও অন্তত তিনটি আসনে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে বিজেপি। তেমন মুখ চোখে পড়লে অবশ্যই তাদের প্রার্থী করে আগামী নির্বাচনে জয়ী করে বিধানসভায় পাঠানো হবে, এমনটাই বললেন বিজেপির রাজ্য কমিটি সাধারণ সম্পাদক তথা শিলচরের সাংসদ রাজদীপ রায়। রবিবার সোনাইয়ের উত্তর কৃষ্ণপুরে আউলিয়া বাজার সংলগ্ন এলাকায় একটি সভায় অংশ নিতে গিয়ে কথাগুলো বলেন তিনি। তার উপস্থিতিতে কংগ্রেস সহ বিভিন্ন দলের প্রায় পাঁচশো কর্মী বিজেপিতে যোগ দেন।
এদিন অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে রাজদীপ রায় কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ দলের বিরুদ্ধে গোপন আঁতাতের অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, “বরাক উপত্যকা সহ রাজ্যের অন্যান্য বাঙালি অধ্যুষিত এলাকায় কংগ্রেস এবং এআইইউডিএফ গোপনে আঁতাত চালিয়ে যাচ্ছে এবং এটা দীর্ঘ দিনের ইতিহাস। সদ্য সমাপ্ত বিটিসি নির্বাচনে তারা একইভাবে গোপন আঁতাত করেছিল তবে সেখানে তাদের এই ষড়যন্ত্র সফল হয়নি। কাছাড় জেলায় অতীতে আমরা দেখেছি কংগ্রেসকে সুবিধা পাইয়ে দিতে এআইইউডিএফ শিলচরে প্রার্থী দেয়নি, তবু তারা পরাজিত হয়েছে। তারা বারবার বিজেপিকে শুধুমাত্র হিন্দুর দল বলে প্রচার করে, অথচ আদতে তারাই সাম্প্রদায়িক। বিজেপি আমিনুল হক লস্করকে শুধু প্রার্থী করেনি তিনি জয়ী হওয়ার পর বিধানসভার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদে তাকে বসিয়েছে। বরাক উপত্যকা থেকে খুব কম মানুষই বিধানসভার উপাধ্যক্ষ পদে থাকার সুযোগ পেয়েছেন, এর মধ্যে অন্যতম হচ্ছেন বিধায়ক আমিনুল হক লস্কর। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছি তাকেই আবার সোনাই সমষ্টির প্রার্থী করা হবে এবং তিনি এবার আগের থেকে অনেক বেশি ভোটে জয়ী হবেন।”
তার দাবি, সোনাইয়ের ইতিহাসে সবথেকে সফল বিধায়ক হচ্ছেন আমিনুল হক লস্কর। তার সময় এলাকার যেমন পরিকাঠামোগত উন্নতি হয়েছে, জনগণের মধ্যে সৌহার্দ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ” সোনাইয়ে গত পাঁচ বছরে যেটুকু উন্নতি হয়েছে ৭০ বছরের ইতিহাসে কখনও এমন হয়নি। কারণ বিজেপি উন্নতির বিষয়ে রাজনীতি করে, সাম্প্রদায়িক উস্কানি দিয়ে নয়; অন্তত পাঁচবছরে এটা প্রমাণিত হয়েছে, তাই বিরোধীরা উল্টোপাল্টা কথা বলতে শুরু করেছেন। গত নির্বাচনে আমরা কাছাড়ের ছয়টি আসনে জয়ী হয়েছিলাম, এবার সবকটি আসনে আমাদের প্রার্থীরাই জয়ী হবেন। গত পাঁচ বছরে বরাক উপত্যকায় শুধুমাত্র রাস্তা বানানোর ক্ষেত্রে আড়াই হাজার কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। এরমধ্যে সোনাই সমষ্টির রাস্তাঘাটের জন্য খরচ হয়েছে ২২৮ কোটি টাকা। এটা শুধু আসাম নয় সারাদেশের ক্ষেত্রে একটি বিরল উদাহরণ। অন্যান্য ক্ষেত্রে হিসাব করতে গেলে দেখা যাবে এক একটা সমষ্টিতে অন্তত হাজার কোটির মত টাকা জনস্বার্থে ব্যয় করেছে বিজেপি সরকার। বিরোধীরা যতই কুৎসা রটান না কেন, সাধারণ মানুষ এসব বোঝেন, তাই তারা বিজেপির প্রার্থীকেই ভোট দেবেন। এই নির্বাচনে আমরা দেখিয়ে দেব বিজেপি উন্নতির রাজনীতি করে এবং বাকিদের সাম্প্রদায়িক রাজনীতিকে জনগন পছন্দ করেন না।”
আমিনুল হক লস্কর দাবি করেন, মইনুল হক চৌধুরীর পর সোনাই বিধানসভা সমষ্টিতে তিনি সব থেকে সফল বিধায়ক। পাশাপাশি কংগ্রেস দলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন উদাহরণ দিয়ে দেখিয়ে দেন তারা কতটুকু সাম্প্রদায়িক এবং মুসলমান-বিরোধী। তিনি বলেন, “সাধারণ মানুষ এসব জিনিস বোঝেন তাই সুস্মিতা দেব সোনাই এলাকায় এলে জনরোষের মুখে পড়তে হয়।”
Comments are closed.