
বিল্ডিং লিফ্টিংয়ের একটি সহজ উপায় শিলচরে, জলমগ্ন হওয়া থেকে মুক্তি, সঙ্গে সুনিশ্চিত সুরক্ষা
শিলচর শহর এবং আশেপাশের অঞ্চলগুলোতে আবাসনগুলোর ভেতরে জল জমে যাওয়া একটি সাধারণ সমস্যা। নর্দমার অভাব এবং রাস্তার উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় কষ্ট করে উপার্জন করা টাকায় তৈরি বাড়িগুলো জলের নিচে যাওয়ার উপক্রম। এতে বিরক্ত হয়ে অনেক বাড়ির মালিকরা নিজেদের বাড়ি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং অ্যাপার্টমেন্ট ফ্ল্যাট কিনছেন।
কম্পোজ বিল্ডিং লিফটার এই সমস্যার সু-সমাধান নিয়ে এসেছে, যার সদরদপ্তর হচ্ছে হরিয়ানাতে। আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তারা বিল্ডিংটি না ভেঙ্গেও বিল্ডিং উত্তোলন করতে পারে। গতবছর তারা বিলপারে প্রভাত পালের বাসভবনটি ছয় ফুট উপরে তুলেছিল।
” আমরা অনেকগুলো জ্যাক ব্যবহার করি, যা বিল্ডিং উত্তোলন বা লিফ্টিংয়ের জন্য খুব প্রয়োজনীয়। উত্তোলনের পর আমরা বাড়িটি আগে যেরকম ছিল সেই একই অবস্থায় মালিকের কাছে হস্তান্তর করি”, জানালেন ইঞ্জিনিয়ার পবন শিসোদিয়া, যিনি ব্যক্তিগতভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি তদারকি করছেন।

প্রানেশ পালের হাতে কাজ শেষ করে তার বিল্ডিংটি হস্তান্তর করার পর, সম্প্রতি তাদের বিবেকানন্দ রোডের অন্য একটি বিল্ডিংয়ের উত্তোলনের কাজ চলছে। বিল্ডিংয়ের মালিক প্রানেশ পাল গত ২৮ নভেম্বর কম্বোজ বিল্ডিং লিফ্টারকে কন্ট্রাক্ট দেন। তারা বিল্ডিংটি পাঁচ ফুট উপরে তুলেছে এবং বর্তমানে বিল্ডিংয়ের কাজ শেষ করা হচ্ছে। “আমরা জানুয়ারি মাসের প্রথমভাগে তাদের কাছে বিল্ডিংটি হস্তান্তর করব।” জানালেন শিশোদিয়া।
পবন পাল, যিনি কম্পোজ বিল্ডিং লিফ্টারকে কন্ট্রাক্ট দিয়ে তার বিল্ডিংটি উত্তোলন করিয়েছেন তিনি জানালেন যে বিল্ডিংয়ের উচ্চতা বাড়ানো ছাড়াও প্রক্রিয়াটি মালিকদের জন্য অবশ্যই লাভ দায়ক।
” বিল্ডিংয়ের আয়ু কমপক্ষে ১০০ বছর বৃত্তি পেয়েছে। এটির কারণ হচ্ছে, তারা বিল্ডিংকে সাপোর্ট দিতে যে পিলারগুলো বানিয়েছেন সেটা মূলত যে পিলারগুলো রয়েছে তার থেকে অনেক বেশি শক্তিশালী।”

উচ্চতা বেড়ে যাওয়ার পর এবং মেঝে নির্মিত হওয়ার পর এটি পুরো আগের মতই দেখাচ্ছে। তবে বিল্ডিংয়ের উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মালিকরা ‘রি-সেলের’ ক্ষেত্রে আরো ভালো দাম পাবেন”, জানালেন পবন পাল।
হরিয়ানা থেকে ৩৫ জন প্রশিক্ষিত শ্রমিকসহ দুজন ইঞ্জিনিয়ার এ কাজের জন্য এসেছেন। যে বাড়িটির লিফ্টিং বা উত্তোলন করা হয় তারা সেই বাড়িতেই থাকেন।” কেবলমাত্র গ্রাউন্ড ফ্লোরের মেঝেতে কাজ করা হয়, বিল্ডিংটির বাকি অংশ পুরো প্রক্রিয়া চলাকালীন অক্ষত থাকে। “যখন এক্ষেত্রে মালিকরা দ্বিধাগ্রস্ত বোধ করেন তখন আমরা কন্ট্রাকট বা চুক্তির সময় একটি লিগেল ডকুমেন্টে সাইন করি। আমরা যখন বিল্ডিংটি উত্তোলন করি তখন যাতে বিল্ডিংটির কোনো ক্ষতি না হয় সে দায়িত্ব আমাদের। বিল্ডিংটি যদি ভেঙ্গে পড়ে তবে আমরা আমাদের নিজস্ব ব্যয়ে পুরো বিল্ডিংটি আবার তৈরি করে দেব”, শিশোদিয়া জানিয়েছেন।
স্কয়ার ফুটের ভিত্তিতে কাম্বোজ বিল্ডার তাদের বিল বানান। প্রত্যেকটা ফ্লোর আলাদা করে মাপা হয়। উদাহরণস্বরূপ, ফার্স্ট ফ্লোরটি যদি ১৪০০ স্কয়ার ফুটৈর হয়, সেকেন্ড ফ্লোর যদি ১৬০০ স্কয়ার ফুট এবং থার্ড ফ্লোর যদি অর্ধেক নির্মাণ করা হয় এবং এই ফ্লোরে যদি ৮০০ স্কয়ার ফুট জুড়ে ছাদ থাকে তাহলে কম্বোজ বিল্ডার সব মিলিয়ে ৩৮০০ স্কয়ার ফুটের বিল বানাবে।

লিফ্টিংয়ের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে বাসিন্দাদের বাড়িটি খালি করতে হবে।” আমরা প্রয়োজনীয় উপকরণ গুলির একটি তালিকা তৈরি করে মালিককে দেব এবং মালিককে এগুলো আমাদের সরবরাহ করতে হবে। এই কাজের জন্য শ্রমিকদের ব্যবস্থাপনা থেকে শুরু করে পুরো কাজ সম্পন্ন হওয়া পর্যন্ত যাবতীয় দায়িত্ব আমাদের”, জানালেন শিশোদিয়া।
পবন পাল যিনি তার বাড়িটি উত্তোলন করিয়েছেন তিনি বিশ্বাস করেন যে রাস্তার উচ্চতা যেহেতু বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাই অন্য আরও অনেক মালিকরা এই প্রযুক্তির মাধ্যমে বিল্ডিং লিফ্টিংয়ের সুবিধা ব্যবহার করতে পারেন।” যখন তারা আমাদের বাড়ি লিফ্টিং করছিল, যেহেতু এটি জ্যাক এর উপর ছিল তখন দুটো তীব্র ভূমিকম্প হয় কিন্তু তাতে বিল্ডিং এর কোনো ক্ষতি হয়নি। উত্তোলন বা লিফ্টিংয়ের কাজ শেষ হওয়ার পরও বিল্ডিংটি দুটো ভূমিকম্প সহ্য করে। সেই কারণেই আমি আমার আত্মীয় প্রানেশ পালের কাছে প্রস্তাব রেখেছিলাম। এর ফলস্বরূপ বর্তমানে তার বিবেকানন্দ রোডের বাড়ির লিফ্টিং এর কাজ চলছে।
এক্ষেত্রে আগ্রহী মালিকরা অবশ্যই
৮২২২৯০৬০৮৭/৯৮১২৪০৬০৮৭ নম্বরে অনু কাম্বোজ
অথবা
৯৪৬৬৩৬৩৩২৬/৯৮১৩১৬৭৪৪০ নম্বরে পবন কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
Comments are closed.