
শিলচরের নতুন একটি পালক : অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আন্তর্জাতিক তাইকোন্ডো প্রতিযোগিতা
শিলচর তথা বরাক উপত্যকা বাসীর জন্য সুসংবাদ। আগামী নভেম্বর মাসে প্রথম বারের মত শিলচরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে আন্তর্জাতিক তাইকোন্ডো প্রতিযোগিতা। ডিস্ট্রিক্ট তাইকোন্ডো অ্যাসোসিয়েশন ও ক্রীড়া ভারতী কাছাড় জেলা ইউনিট যৌথভাবে এই প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে। ‘ফার্স্ট ইন্ডিয়া কাপ অপেন ইন্টারন্যাশনাল তাইকোন্ডো চ্যাম্পিয়নশিপ’টি শুরু হবে আগামী ১৬ নভেম্বর, চলবে ১৮ নভেম্বর পর্যন্ত।
তিনদিন ব্যাপী এই প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে তারাপুরের ইন্ডিয়া ক্লাব ইনডোর স্টেডিয়ামে। এই প্রতিযোগিতায় মোট সাতটি দেশ অংশগ্রহণ করবে। ভারত ছাড়াও প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করবে ভুটান, বাংলাদেশ, নেপাল, আফগানিস্তান, কোরিয়া ও মালয়েশিয়ার প্রতিযোগিরা। ভারতের কুড়িটি রাজ্য থেকে প্রতিযোগিরা অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। খেলা পরিচালনার জন্য আন্তর্জাতিক স্তরের রেফারিদের আনা হচ্ছে।
এখানে উল্লেখ্য, শিলচরে এই প্রথম আন্তর্জাতিক তাইকোন্ডো প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এখানে আরও উল্লেখ করা যায়, কিছুদিন আগেই শিলচরে আন্তর্জাতিক দাবা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
কাছাড় ডিস্ট্রিক্ট তাইকোন্ডো অ্যাসোসিয়েশনের সেক্রেটারি, রুপালি দাস আমাদের বলেন, পুরো বিশ্বে তাইকোন্ডো ফুটবলের পর দ্বিতীয় জনপ্রিয় খেলা। তাই এক বিরাট সংখ্যক প্রতিযোগি এতে অংশগ্রহণ করতে চাইছেন। কিন্তু যেহেতু এটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা,তাই সেই মানদন্ড বজায় রাখতে ৬০০ জনকে অংশগ্রহণের অনুমতি দেয়া হবে। তিনি আরো জানান, শিলচরের প্রতিযোগীদের বাছতে পুজোর পর একটি নির্বাচনী ক্যাম্প অনুষ্ঠিত হবে।
রুপালি দাস আমাদের প্রতিনিধিকে জানান, “ এই প্রতিযোগিতার আরো একটি বিশেষত্ব হচ্ছে, এই টুর্নামেন্টটা ম্যানুয়াল প্রসেসে হবে না, বরং যেভাবে ওয়ার্ল্ড চ্যাম্পিয়নশিপ-অলিম্পিকে হয়, সেভাবেই ইলেকট্রনিক বডি পর্টাল, যেটাকে পি এস এস বলে সেটার মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে। ফলে কোনও পার্শিয়ালিটি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। আমরা আসলে আন্তর্জাতিক মানের মানদণ্ড টা রাখতে চাইছি। যদিও প্রথম বার এত বড় প্রতিযোগিতা হচ্ছে, তাই সব ইকুপমেন্ট আমরা কিনতে পারছি না, দামি ইভিপি গুলোে আমরা ভাড়া আনছি। কিন্তু আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার যে মানদণ্ডটা থাকে সেটা আমরা বজায় রাখার সম্পূর্ণ চেষ্টা করছি।তাছাড়া আমরা কিছু ব্যাপারে বিশেষভাবে চোখ রাখছি, সবচেয়ে প্রথমে খেলার টেকনিক্যাল দিকে যেন কোনো ত্রুটি না থাকে। তারজন্য আমরা আন্তর্জাতিক রেফারি বেশি রাখছি। আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার ক্রাইটেরিয়া বজায় রেখে আমরা ১৫ জন আন্তর্জাতিক রেফারিকে নিযুক্ত করছি। ওদেরকে সহযোগিতা করবেন ৩৫ জন জাতীয় স্তরের রেফারি।”
জেলা প্রশাসন যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়েছে তাতে রুপালি দাস খুশি ব্যক্ত করে বলেন,কাছাড়ের ডিসি, এসপি ছাড়াও সুধাংশু শেখর ভট্টাচার্য, পূর্ণেন্দু দাস, বিবেক পোদ্দার সহ অনেকে যেভাবে এগিয়ে এসেছেন সাহায্যের জন্য তা প্রশংসনীয়। সবার সহযোগিতায় এই আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাকে আমরা সফল করে তুলতে পারব বলে আশা প্রকাশ করছি।”তাইকোন্ডো ব্ল্যাক বেল্ট, ফার্স্ট ড্যান ও ক্যারেটে ব্ল্যাক বেল্ট রুপালি দাসের মতে তাইকোন্ডো যেহেতু একটি অলিম্পিক গেম, তাই চাকরির ক্ষেত্রে, ক্যারিয়ার গড়ার ক্ষেত্রে কিংবা নিজেকে শারীরিকভাবে সুস্থ ও ফিট রাখার জন্য এটি এখন খুবই সময়োপযোগী। বিশেষভাবে মেয়েদের আত্মরক্ষার ক্ষেত্রে তাইকোন্ডো বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। যা এখনকার যুগের জন্য খুবই জরুরি।তাই মেয়েদেরকে তাইকোন্ডো শিখতে তিনি আহ্বান জানান ।
Comments are closed.