Also read in

তারাপুরে আবার দিনের আলোয় তিন লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিল বাইক-আরোহী দুষ্কৃতীরা

গত সপ্তাহে তারাপুর থানার সামনে থেকে পৌনে তিন লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছিল কালো পালসার বাইকে চড়ে আসা দুই দুষ্কৃতী। সোমবার দুপুরে তারাপুর এলাকায় ছিনতাইবাজদের শিকার হলেন ৮০ বছর বয়সের প্রজেশ চন্দ্র ঘোষ নামের প্রাক্তন রেলকর্মী। ঘরের কাজের প্রয়োজনে তারাপুর ইউবিআই থেকে তিন লক্ষ টাকা তুলেছিলেন তিনি। ব্যাংক থেকে বাড়ি যাওয়ার জন্য অটোতে বসেছিলেন। বাড়ির সামনে এসে অটো থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গেই দুষ্কৃতীরা তার ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করেন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তিটি, তবে শেষ রক্ষা করতে পারেননি, দুষ্কৃতীরা থাকে নানান ভাবে আঘাত করে এবং টাকা ছিনিয়ে নিয়ে যায়।

প্রজেশ চন্দ্র ঘোষ রেল বিভাগের অবসরপ্রাপ্ত ইঞ্জিনিয়ার। তার বাড়ি তারাপুর রেলগেটের পাশে । পুরো ঘটনা নিয়ে তিনি বলেন, “বাড়িতে কাজ চলছে তাই জমানো টাকা থেকে তিন লক্ষ তুলতে হয়েছিল। তারাপুর ইউবিআই থেকে টাকা নিয়ে বাড়ির সামনে এসে অটো থেকে নামার সঙ্গে সঙ্গে হঠাৎ করে মুখে কাপড় বাঁধা দুই যুবক বাইকে আমার পাশে এসে দাঁড়ায়। নানান ঘটনা শুনে আমি সাবধান থাকতে চেয়েছি তাই ব্যাগটি হাতের মধ্যে শক্ত করে বেঁধে নিয়েছিলাম। তারা ব্যাগে টান দিয়ে আমাকে কিছু রাস্তা ছেঁচড়ে নিয়ে যায়, শেষমেষ হাত থেকে ব্যাগটি ছাড়াতে সমর্থ হয় এবং পালিয়ে যায়। তাদের মুখ চেনা বা বাইকের নম্বর দেখার মত অবস্থায় আমি ছিলাম না। আমার অবস্থা দেখে অনেকেই এগিয়ে আসেন এবং রাস্তা থেকে তুলে আনেন, কিন্তু ঘটনায় শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চোট পেয়েছি। আমি রেল বিভাগের প্রাক্তন ইঞ্জিনিয়ার, জীবনে এমন ঘটনার মুখোমুখি কখনো হইনি।”

গত সপ্তাহে তারাপুর থানার পাশে ছিনতাই হওয়ার পর পুলিশ সুপার বলেছিলেন এলাকায় টহলদারি বৃদ্ধি করা হবে। পাশাপাশি কোনও ব্যক্তির চাইলে টাকা তুলতে ব্যাংকে যাওয়ার সময় তার সঙ্গে পুলিশ পাঠানোর আশ্বাস দিয়েছিলেন বিএল মিনা। তবে দুষ্কৃতীরা পুলিশের কোনও মন্তব্যেই ভয় পাচ্ছে না, একেবারেই তোয়াক্কা করছে না, এটা আবার প্রমাণিত হয়েছে। যেদিন তারাপুর থানার সামনে ছিনতাই হয়েছিল সেই সন্ধ্যায় অম্বিকাপট্টি এলাকায় আরেক ব্যক্তির দুই লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছিল, রাতে উকিলপট্টিতে ছিনতাইবাজদের আক্রমণের শিকার হয়েছিলেন প্রকাশক মিতা দাস পুরকায়স্থ। সবগুলো ঘটনার মধ্যে একটা ব্যাপারে যোগসূত্র দেখা গেছে, সেটা হচ্ছে দুষ্কৃতীরা কালো পালসার বাইকে আসে, তাদের নম্বর-প্লেটে কাদা মাখানো থাকে এবং মুখে কাপড় বেঁধে হেলমেট লাগিয়ে আসে তারা। বিভিন্ন ঘটনায় সিসিটিভি ফুটেজ পাওয়া গেলেও তাদের কোনোভাবেই আটকাতে পারছিনা পুলিশ। প্রত্যক্ষদর্শীরা ঘটনার যে বিবরণ দিচ্ছেন এতে আরেকটা ব্যাপার স্পষ্ট হচ্ছে, দুষ্কৃতীরা অত্যন্ত পটু এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। এদের কাছে শহরের পুলিশ একেবারে হাল ছেড়ে দিয়েছে, এমনটাই বলছেন সাধারণ মানুষ।

ব্যাংক থেকে টাকা তোলার সঙ্গে সঙ্গে দুষ্কৃতীদের কাছে খবর চলে যায় কোন ব্যাগে কোন ব্যক্তি টাকা নিয়ে কোথায় ফিরছেন। তারা সেই ব্যক্তির পিছু নেয় এবং সুযোগ পেলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। প্রতিবাদ করতে গেলে তারা হামলা চালায় এতে নিরীহ মানুষ টাকা হারানোর পাশাপাশি আক্রান্ত হয়ে বাড়ি ফিরছেন।

Comments are closed.