সেরাম হেরাজিৎ সিংহকে গ্রেফতার করে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে, তাকে মুক্তি দিন, দাবি নর্থ ইস্ট ডেমোক্রেটিক ফোরামের
সেরাম হেরাজিৎ সিংহকে যেভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে তাতে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করা হয়েছে। তিনি যদি দেশ বিরোধী স্লোগান দিয়ে থাকেন, সেটা আদালতে প্রমাণ হওয়া উচিত, দোষী সাব্যস্ত হলে আদালত তাকে শাস্তি দেবে। তবে যতদিন দোষ প্রমাণিত হচ্ছে না, তার আগে তাকে পুলিশের এভাবে অপদস্ত করা চলবে না, এমনটাই বয়ান নর্থ ইস্ট ডেমোক্রেটিক ফোরাম সহ বেশ কয়েকটি সংগঠনের সদস্যদের। তারা নিজেদের দাবিগুলো নিয়ে জেলাশাসক এবং পুলিশ বিভাগের কাছে স্মারক পত্র প্রদান করেছেন। পাশাপাশি এই আওয়াজটি রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এবং দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে পৌঁছানোর পরিকল্পনাও রয়েছে।
সোমবার শিলচরে এক সাংবাদিক সম্মেলন আয়োজন করে তারা নিজেদের কথাগুলো তুলে ধরেন। নর্থ ইস্ট ডেমোক্রেটিক ফোরামের তরফে ইউ জেনিসন, ওয়াইএফপিএইচআর এর তরফে কেএইচ ফাজাতন, ওয়াইএসিপিআইপি এর তরফে টি শাদিসকান্ত, পিএইচআরসিসি সংস্থার তরফে ওয়াই কিরণ সিংহ, স্থানীয় আইনজীবী তথা মানবাধিকার কর্মী লোকনাথ সিংহ সহ অন্যান্যরা এদিন সাংবাদিক সম্মেলনে যোগ দেন। ইউ জেনিসন বলেন, কানাইয়া কুমার যখন দিল্লিতে বসে কাশ্মীরের মুক্তির ডাক দিয়েছিলেন, সেটা তার আবেগ থেকে এসেছিল। সেরাম হেরাজিৎ সিংহও একইভাবে আবেগতাড়িত হয়ে ভারতবিরোধী নাড়া দিয়েছেন। কানাইয়া কুমারকে প্রথম দিকে গ্রেফতার করলেও পরে আদালত তাকে ছেড়ে দেয়। আমাদের বিশ্বাস সেরাম হেরাজিৎ সিংহের আন্দোলনকেও একই ভাবে দেখা উচিত। আমরা উত্তর-পূর্ব ভারতে থাকি এবং এখানে উপজাতিদের নিজেদের অধিকার পেতে আন্দোলন করতে হয়। কা-এর পক্ষে বা বিপক্ষে আমরা আপাতত কোনো কথা বলতে চাই না। তবে সেরাম হেরাজিৎ সিংহ এর বিরুদ্ধে অবস্থান নেবেন বলে বিশ্বাস করেন, তাই আন্দোলন করছেন। কেউ আন্দোলন করলে তাকে বিনা দোষে গ্রেফতার করা যায় না। প্রত্যেক ব্যক্তির মানবিক অধিকার রয়েছে।
তাছাড়া যখন সেরাম হেরাজিৎ সিংহকে গ্রেফতার করা হয়েছে তখন তার বিরুদ্ধে কোন মামলা ছিল না। দুপুরে তাকে ডেকে এনে ফুসলিয়ে গ্রেফতার করে পুলিশ। অথচ তার বিরুদ্ধে সোনাই থানায় এজাহার জমা হয় রাত সাড়ে আটটায়। একজন ব্যক্তিকে বিনা দোষে এভাবে বন্দী রাখায় ভারতীয় সংবিধানের আর্টিকেল ২২ (১) এবং আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনের আর্টিকেল ৯ (২) ধারা উলঙ্ঘন হয়েছে। ইন্টার্নেশনাল কনফেরেন্স অন সিভিল অ্যান্ড পলিটিক্যাল রাইটস চুক্তিতে ভারত নিজে স্বাক্ষরকারী। তাই এদেশে এই চুক্তিটি লঙ্ঘন হতে পারে না। আমরা আপাতত জেলাশাসক এবং আসাম পুলিশের উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের এব্যাপারে আবেদন জানাচ্ছি। তবে যদি আমাদের কথা না শোনা হয় ভবিষ্যতে আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
Comments are closed.