Also read in

সরকারি বালক বিদ্যালয় আর সিভিল হাসপাতালের অবস্থা দেখে অসন্তুষ্ট রাজ্যপাল জগদীশ মুখি

ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড দেওয়ার পক্ষে মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল জগদীশ মুখি। তিনি বলেন অন্যদেরও উচিত তবে বিশেষ করে অপ্রাপ্তবয়স্কদের যারা ধর্ষণ করে তাদের এই শাস্তির খুবই প্রয়োজন। শিলচর এসে বিভিন্ন স্কুল কলেজ, সিভিল হাসপাতাল পরিদর্শন করে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে ধর্ষকদের বিরুদ্ধে এভাবেই নিজের কড়া মনোভাব ব্যক্ত করেন রাজ্যপাল জগদীশ মুখি। তিনি আরো বলেন শুধু অসমে নয়, গোটা ভারতবর্ষে ধর্ষণের সংখ্যা বেড়েছে। আগেও অনেক ধর্ষণকান্ড ঘটত। তা বেশি প্রকাশ হতো না। ইদানিং কালে সংবাদমাধ্যমের দৌলতে তা প্রকাশ হয়ে যায়। সেটা খুব ভালো বিষয় বলে মন্তব্য করেন রাজ্যপাল। রাজ্যপালের মতে ৯০ শতাংশ ধর্ষণকান্ড ঘটে আত্মীয় পরিজনের মধ্যে। তাই ধর্ষণকান্ড রুখতে জনসচেতনতা বাড়াতে হবে বলে মনে করেন রাজ্যপাল মুখি।

৪ দিনের ঠাসা কর্মসূচি নিয়ে বৃহস্পতিবার বরাক সফরে আসেন রাজ্যপাল। শিলচর এসে স্বচ্ছ ভারতের অধীনে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সরকারি হাসপাতালগুলো কতটুকু পরিছন্ন তা সরেজমিনে খতিয়ে দেখেন তিনি। শিলচর সতীন্দ্র মোহন দেব সিভিল হাসপাতালের হাল হকিকৎ দেখে মোটেই সন্তুষ্ট নন রাজ্যপাল জগদীশ মুখি। সতীন্দ্র মোহন দেব সিভিল হাসপাতালে ঢুকে রাস্তার হাল দেখে চটে যান রাজ্যপাল। জেলাশাসকের কাছে তার জন্য জবাব চান রাজ্যপাল। অতি শীঘ্র হাসপাতালের ভিতরের রাস্তা ঠিক করতে নির্দেশ দেন তিনি। এরপর হাসপাতালের ভিতরে গিয়ে রোগীদের সঙ্গে কথা বলেন রাজ্যপাল। খোঁজ নেন সুবিধা অসুবিধার কথা। রোগীরা রাজ্যপালকে জানান হাসপাতাল থেকে যে সব খাওয়ার দেওয়া হয় তা ভালো নয়। যার জন্য বাইরে থেকে খাওয়ার আনতে হয়। তা শুনেই হাসপাতাল সুপারের উপর বিরক্তি প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। দেখেন হাসপাতালের বাথরুমও। বাথরুম দেখেও অসন্তুষ্টি প্রকাশ করেন রাজ্যপাল। সব কিছু দেখার পর ক্ষুব্ধ হয়েই হাসপাতাল থেকে ফিরে গেলেন রাজ্যপাল জগদীশ মুখি।

শিলচর এসে প্রথমে রাজ্যপাল কাছাড় কলেজে যান। সেখানে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে কাঁধে হাত দিয়ে তাদের পড়াশুনার খোঁজ খবর নেন তিনি। বেশ কয়েকজন পড়ুয়ার সঙ্গে মত বিনিময় করেন। ছাত্রদের সঙ্গে মত বিনিময় করার পর শিক্ষক শিক্ষিকাদের সঙ্গেও নানা বিষয়ে কথা বলেন। রাজ্যপাল কিছুদিন আগে একটি নির্দেশ জারি করেছেন এডহক পোষ্টে কোনো নিযুক্তি হবে না। পোষ্ট খালি থাকলে স্থায়ী নিযুক্তি দিতে হবে। কাছাড় কলেজের অধ্যক্ষকে সরাসরি নির্দেশ দেন পদ খালি থাকলে বিজ্ঞাপন দিতে। আর স্থায়ীভাবে নিযুক্তি প্রদান করতে। কলেজের এই বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানিয়ে গেলেন রাজ্যপাল মুখি।

 

কাছাড় কলেজ থেকে সরাসরি চলে যান সরকারি বালক বিদ্যালয়ে। সেখানে গিয়ে স্কুলের ভগ্ন দশা দেখে রীতিমতো স্তম্ভিত হয়ে যান রাজ্যপাল। প্রায় পাঁচ মাস আগে একটি গাছ পড়ে স্কুলের অফিস রুমের একটি অংশ ভেঙে পড়ে গিয়েছিল। তারপর কোনো সংস্কার হয়নি। তা শীঘ্রই সংস্কার করার জন্য নির্দেশ দেন। এরপর শুনতে পান গোটা স্কুলে একটি মাত্র বাথরুম রয়েছে এবং তা ব্যবহার করেন স্কুলের সমস্ত পড়ুয়া থেকে শিক্ষক শিক্ষিকারা সবাই। তা শুনেই জেলাশাসকের উপর ক্ষুব্ধ হয়ে পড়েন। বাথরুম ছাড়াও জলের ও প্রচন্ড সমস্যা। সব শুনে জেলশাসককে কড়া নির্দেশ দেন ১৫ দিনের মধ্যে আরো একটি বাথরুম নির্মাণ করতে এবং জলের সমস্যা সমাধান করতে। ১৫ দিন পর তাকে সরাসরি রিপোর্ট করতেও জেলাশাসককে নির্দেশ দেন।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং সিভিল হাসপাতাল পরিদর্শন করে জেলাশাসকের সভাকক্ষে প্রথমে জেলার নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে বৈঠক করেন। এরপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধি সহ শহরের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গেও বৈঠক করেন রাজ্যপাল জগদীশ মুখি।

 

Comments are closed.