
অনলাইনে পড়াশোনা, পরীক্ষা দেওয়া : ব্যবস্থা করল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়; উদ্বোধন করলেন শিক্ষামন্ত্রী
বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়া-ভর্তি অনলাইনে, অর্থের অভাবে পুরো বদল নয় পরীক্ষায়
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া এবার অনলাইন মাধ্যমে হবে। এজন্য একটি বেসরকারি সংস্থাকে দিয়ে সমস্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে। একাংশ পরীক্ষাও ভার্চুয়াল উপায়ে করার উদ্যোগ নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়। আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলিতেও একই পদ্ধতি অনুসরণ করবে। তারাও পড়ুয়াদের ভর্তি ও পরীক্ষা নেটমাধ্যমেই নিতে পারবে। বুধবার এ বিষয়ে একটি ভার্চুয়াল বৈঠক করেছে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়। এই বৈঠকে বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিক-অধ্যাপক ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী-সহ অন্য মন্ত্রীরাও।
কোভিডের হানায় গত বছর থেকেই ক্ষতিগ্রস্থ উচ্চশিক্ষার পঠনপাঠন। গত দেড় বছরে সশরীরে কোনও পাঠদান হয়নি বিশ্ববিদ্যালয়ে। ব্যাপক সমস্যা হয়েছে পরিক্ষার সময়ও। এসব দূর করার লক্ষ্যে এবার ভর্তির ব্যবস্থা নেটমাধ্যমে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে অসমের শিক্ষামন্ত্রী রণোজ পেগু বলেন, রাজ্য সরকার প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠন ডিজিটাল পদ্ধতিতে করার পরিকল্পনা করছে। এজন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি, নয়া জাতীয় শিক্ষানীতি চালুতেও তা কাজে আসবে।
কলেজে দেখা যায়, এক পড়ুয়া অনেক সময়ই একাধিক স্থানে ভর্তি হয়। এর ফলে ওই পড়ুয়ার নামে কয়েকটি কলেজে আসন বরাদ্দ হয়ে যায়। এবার সে কেবল একটি নির্দিষ্ট কলেজেই পড়াশোনা করে। আর অন্যান্য স্থানের আসনগুলি এমনিতেই ফাঁকা পড়ে থাকে। সেখানে অন্য পড়ুয়াকে ভর্তি করাও সম্ভব হয় না। তবে নতুন ভর্তি পদ্ধতিতে তা অনেকটাই এড়ানো যাবে। কারণ নয়া ব্যবস্থা তৈরি করায় নিয়োজিত বেসরকারি সংস্থাটি জানিয়েছে, এবার থেকে গোটা ভর্তি প্রক্রিয়াকে নিরীক্ষণ করা সম্ভব। ফলে এক পড়ুয়ার একাধিক কলেজে আসন দখল করে অনায়াসেই আটকানো যাবে।
বন ও পরিবেশ মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় নতুন পদ্ধতি আনার ফলে পড়ুয়া-অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা অনেকটাই লাঘব হল। কাছাড়ের অভিভাবক মন্ত্রী অশোক সিংহল বলেন, নতুন পদ্ধতি সবার জন্যই এক ভাল পদক্ষেপ।
আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে মোট ৬৩টি কলেজ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রদোষ কিরণ নাথ বলেছেন, এর মধ্যে চৌত্রিশটি কলেজে নয়া পদ্ধতিতে ছাত্র ভর্তি হবে। বাকিগুলিতেও শিগগিরই একই ব্যবস্থা চালু হয়ে যাবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য দিলীপ চন্দ্র নাথ জানিয়েছেন, ভর্তির পুরো প্রক্রিয়াই অনলাইন উপায়ে হলেও নেটমাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য আরও কিছু ব্যবস্থার প্রবর্তন জরুরি। কিন্তু অর্থের অভাব থাকায় সবকিছু করা সম্ভব হচ্ছে না। যদিও বর্তমান বিজেপি সরকারের আমলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভূত উন্নতি হয়েছে বলে দাবি করেন উপাচার্য। এমনকী, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ডিজিটাল ইণ্ডিয়া উদ্যোগকেও প্রশংসায় ভাসিয়েছেন দিলীপ চন্দ্র নাথ।
গত বছর আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে কলেজগুলির পরীক্ষা নিয়ে বিস্তর বিতর্ক হয়েছিল। কিন্তু পরীক্ষায় এবারও পুরনো পদ্ধতি থেকে যাওয়ায় কোভিডের প্রভাব বহাল থাকলে যে ফের সমস্যা হবে, এ কথা বলাই বাহুল্য।
Comments are closed.