
এবার জাপানি এনকেফেলাইটিসের শিকার অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রী সেলিনা সুলতানা
জাপানি এনকেফেলাইটিসে মৃত্যু হল অসম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইকোলজি বিভাগের প্রাক্তন ছাত্রী সেলিনা সুলতানার। ২০১৬ সালে একটি স্কলারশিপ পেয়ে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর পড়তে এসেছিলেন সেলিনা। তারপর অরুণাচল প্রদেশে কর্মরত ছিলেন এবং সেখানেই অসুস্থ হয়ে গত ১২জুলাই বাড়ি ফেরেন।
বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ জ্ঞান হারালে তাকে জোরহাট মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তারদের পরামর্শে উন্নত চিকিৎসার জন্য গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়ার পথেই তার মৃত্যু হয়।
২০১৮ সালে অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে স্নাতকোত্তর শেষ করে জোরহাটে নিজের বাড়িতে ফিরে গিয়েছিলেন সেলিনা। তার ছোট ভাই পারভেজ আলী সরকারি স্কলারশিপে কটন কলেজে পড়াশোনা করছে। পরিবার আর্থিকভাবে খুব একটা সচ্ছল নয়, তাই স্নাতকোত্তর শেষ করে সেলিনা কাজে যোগ দেন। আরণ্যক সোসাইটির প্রজেক্ট অফিসার হিসেবে অরুণাচলে কাজে চলে যান। বিভিন্ন দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় থাকতে হয়েছে তাকে। গত সপ্তাহে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং গায়ে জ্বর নিয়ে বাড়ি ফেরেন। তবে বাড়ি ফিরে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে খুব একটা মাথা ঘামাননি। এদিকে জ্বর প্রায় এক সপ্তাহ ধরেই বহাল ছিল, বৃহস্পতিবার দুপুরে হঠাৎ করে অজ্ঞান হয়ে পড়েন তিনি। সঙ্গে সঙ্গে পরিবারের লোকেরা তার পরিচিত বন্ধুদের খবর দেন। সবাই মিলে তাকে জোরহাটের সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ডাক্তাররা পরীক্ষা করে জানান তার অবস্থা খুব একটা ভালো নয়, জোরহাটে তার চিকিৎসা সম্ভব নয়, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গুয়াহাটিতে নিয়ে গেলে ভালো হয়।
পরিবারের লোকেরা এবং বন্ধুরা মিলে তাকে নিয়ে গুয়াহাটির উদ্দেশ্যে রওনাও দেন, তবে শেষ রক্ষা হয়নি, রাস্তায় তিনি প্রাণ হারান। গুয়াহাটি নিয়ে যাওয়ার পর ডাক্তাররা জানান তাকে মৃত অবস্থায় আনা হয়েছে। অত্যন্ত অল্প বয়সে এই ভাবে তার চলে যাওয়ায় পরিচিত মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
শুক্রবার অসম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইকোলজি বিভাগে তার মৃত্যুতে শোক পালন করা হয়। অনেকেই ফেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক মাধ্যমে নিজেদের শোক ব্যক্ত করেছেন। অনেকেই বলেছেন, জাপানি এনকেফেলাইটিস একশোর বেশি মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন রাজ্যে। তবু কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার এব্যাপারে কোনও বড় ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেনা, মানুষের স্বাস্থ্য নিয়ে কারও চিন্তা নেই। ফলে তরুণ প্রাণগুলো এই রোগের শিকার হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে।
Comments are closed.