Also read in

আসাম বিশ্ববিদ্যালয়কে পাঁচগ্রাম কাগজকলের মতো ধ্বংসের পথে যেতে দেবনা - বিডিওয়াইএফ

বরাকের আপামর জনসাধারণের দীর্ঘ সংগ্রামের ফসল আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিস্থিতির ক্রমাগত অবনতি হচ্ছে। এর থেকে উত্তরণের জন্য অবিলম্বে পদক্ষেপ নিতে হবে নতুবা আবার আন্দোলন গড়ে তোলার হুমকি দিল বরাক ডেমোক্রেটিক যুব ফ্রন্ট।

আজ এক প্রেস বার্তায় বিডিওয়াইএফ-এর মূখ্য আহ্বায়ক কল্পার্ণব গুপ্ত বলেন যে, একই সময়ে যাত্রা শুরু করেছিল আসাম ও তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু জাতীয় র‍্যাঙ্কিং অনুযায়ী তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয় চার নম্বরে অবস্থান করলেও আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাঙ্কিং ১৪৯। প্রকৃতপক্ষে ১০০ এর উপর হলে কোন র‍্যাঙ্কিং দেবার নিয়মই নেই। এর থেকেই আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান দুরবস্থা অনুমেয়। তিনি বলেন বরাক উপত্যকার ছাত্র-ছাত্রীরা তেজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হচ্ছেন এমন খবরও তাদের কাছে রয়েছে। এর চেয়ে লজ্জাজনক আর কি হতে পারে ?

যুবফ্রন্টের মূখ্য আহ্বায়ক বলেন যে আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ের মানের এই অবনয়নের মূলে রয়েছে শাসকদলের রাজনীতিকরণের উদ্যোগ । তিনি বলেন বর্তমান তথা পূর্ববর্তী উপাচার্য বছরের অর্ধেক দিনই শিলচরের বাইরে থাকেন। আর যে কয়দিন থাকেন তার অধিকাংশই বিভিন্ন অনুষ্ঠান ইত্যাদিতে কেটে যায়। ফলে অভিভাবক হীন হয়ে পড়েছে এই শিক্ষায়তন। এর সুযোগ নিয়ে একাংশ শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মচারী নির্বিচারে কাজে ফাঁকি দিচ্ছেন যার ফলে পরীক্ষা অনিয়মিত,প্রশ্নপত্রে ভূল, ফলাফল প্রকাশে বিলম্ব, রেজাল্ট শীটে ভুল ইত্যাদি বহুবিধ উপসর্গ দেখা যাচ্ছে। উপাচার্য, রেজিস্ট্রার,কন্ট্রোলার এই তিন পদেই অদক্ষ ব্যাক্তিরা কাজ করছেন। এদের অবিলম্বে না সরালে এই অবস্থা থেকে উত্তরণের সম্ভাবনা নেই বলে মন্তব্য করেন তিনি ।

কল্পার্ণব এদিন আরো বলেন যে বিশ্বের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠার ইতিহাস তার ফাউন্ডেশন কোর্সে পড়ানোর নিয়ম রয়েছে। কিন্তু একমাত্র আসাম বিশ্ববিদ্যালয়ই এর ব্যাতিক্রম। প্রতিষ্ঠার ২৯ বছর পরও এই নিয়ে কোন প্রামান্য বই প্রকাশিত হয়নি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে। সুভাষ সাহা উপাচার্য থাকাকালীন এরজন্য অধ্যাপক সুবীর করকে সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে একটি কমিটি তৈরি করা হয় ও আর্থিক অনুদান বরাদ্দ করা হয়। এবং নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সেই কমিটি একটি বই তৈরি করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সমঝেও দেন । কিন্তু কোন রহস্যজনক কারণে আজ অব্দি তা প্রকাশ করা হয়নি। কল্পার্ণব বলেন তাদের কাছে খবর আছে যে রেজিস্ট্রার প্রদোষ নাথ এই ব্যাপারে উপাচার্য দের ভুল বুঝিয়ে এই বই প্রকাশে বাধা দিচ্ছেন এবং দিশপুরের জাতিয়তাবাদীদের পক্ষে কাজ করছেন। এভাবে এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পেছনে বরাকবাসীর সুদীর্ঘ লড়াইকে ভুলিয়ে দেবার চেষ্টা চলছে। তাই অবিলম্বে এই রেজিস্ট্রারকে অপসারিত করার দাবি জানাচ্ছে বিডিওয়াইএফ।

কল্পার্ণব ও যুবফ্রন্টের আরেক আহ্বায়ক বাহার আহমেদ চৌধুরী বলেন যে তারা দাবি জানাচ্ছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতিকল্পে অবিলম্বে সমস্ত প্রাক্তন উপাচার্য, বরাকের সমস্ত কলেজের অধ্যক্ষ ও বরাকের বিশিষ্ট শিক্ষাবিদদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করার উদ্যোগ নিতে হবে বর্তমান উপাচার্যকে। এবং একটি নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এই কমিটির সব পরামর্শ বাস্তবায়ন করতে হবে। তারা বলেন যে বরাকের ৪০ লক্ষ মানুষের সংগ্রাম ও স্বপ্নের ফসল এই বিশ্ববিদ্যালয়কে কোন অবস্থায় পাচগ্রাম কাগজকলের মতো ধ্বংসের পথে যেতে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে এজন্য দ্বিতীয়বার আন্দোলন গড়ে তুলবে বিডিওয়াইএফ।

বরাক ডেমোক্রেটিক যুব ফ্রন্টের পক্ষ থেকে এক প্রেস বার্তায় এই খবর জানিয়েছেন আহ্বায়ক দেবায়ন দেব।

Comments are closed.