অবশেষে আসছে দুর্গাপূজো নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগের এসওপি, সোমবার হবে ঘোষণা, থাকবে নানা ক্ষেত্রে ছাড়
দুর্গোৎসবের মাত্র ৯ দিন বাকি রয়েছে এবং এখন পর্যন্ত পরিষ্কার এসওপি জারি হয়নি, আয়োজক থেকে সাধারণ মানুষ প্রত্যেকেই অপেক্ষায় রয়েছেন। কিভাবে পুজো উদযাপন করার অনুমতি থাকবে সেটা জানতে চাইছেন প্রত্যেকেই। কাছাড় জেলা প্রশাসন ২ অক্টোবর যে এসওপি জারি করেছিল সেটা নিয়ে জনমনে ব্যাপক ক্ষোভ দেখা দেয়। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিক, প্রত্যেকেই কাছাড় জেলা প্রশাসনের স্বৈরাচারী সিদ্ধান্তে অখুশি ছিলেন। এক সময় কিছুটা পরিবর্তন করে আবার এসওপি জারি করার কথা ভেবেছিলেন জেলাশাসক কীর্তি জল্লি। কিন্তু এতে রাজি হননি স্বাস্থ্য বিভাগ, তারা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে নিজেই এসওপি বানাবেন বলে জানিয়ে দেন। প্রত্যেক জেলাকে সেই এসওপি অনুযায়ী চলতেই হবে এমনটাও বলে দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি রাজ্যের প্রত্যেক জেলাশাসককে নিয়ে একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক করেছেন স্বাস্থ্য বিভাগের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা। এরপর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে সোমবার আনুষ্ঠানিকভাবে দুর্গাপুজোর জন্য রাজ্যস্তরের এসওপি জারি করা হবে। সূত্রমতের খবর অনুযায়ী, প্রায় সব ক্ষেত্রেই ছাড় দেওয়া হবে, কিন্তু সঙ্গে কড়া বার্তা দেওয়া হবে, কেউ যেন কোভিড প্রটোকল না ভাঙ্গেন। এই ক্ষেত্রে কড়া নীতি অবলম্বন করবে স্বাস্থ্য বিভাগ।
২ অক্টোবর কাছাড় জেলা প্রশাসন দুর্গাপূজা উদযাপন নিয়ে একটি এসওপি জারি করেছিলেন। হঠাৎ করে মূর্তির সাইজ ছোট করা থেকে শুরু করে প্যান্ডেল বানানো যাবেনা, মাইক বাজানো যাবেনা ইত্যাদি বেশ কিছু উদ্ভট নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। অথচ এর দুই সপ্তাহ আগে, ১৬ সেপ্টেম্বর রাজ্যের মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণা বিভাগীয় স্তরে একটি নির্দেশ পাঠিয়েছিলেন, যেটা তখন জনসমক্ষে তুলে ধরা হয়নি। কাছাড়ের প্রশাসন সেই নির্দেশ অমান্য করেই নিজস্ব এসওপি তৈরি করেছিলেন। পরবর্তীতে জনরোষ দেখা দেওয়ায় ১৬ সেপ্টেম্বরের মুখ্যসচিবের নির্দেশটি জনসমক্ষে তুলে ধরে প্রশাসন। এরপর জানানো হয় স্বাস্থ্যবিভাগের তরফে এসওপি এলেই কাছাড় জেলা প্রশাসন নিজস্ব নিয়মাবলী বানাবে।
কাছাড় জেলা প্রশাসন দুর্গাপূজা উদযাপন নিয়ে তড়িঘড়ি সিদ্ধান্ত নেওয়ার চেষ্টা করলেও হাইলাকান্দি এবং করিমগঞ্জ জেলা প্রশাসন রাজ্য সরকারের নির্দেশের অপেক্ষায় ছিল। দুই জেলার জেলাশাসক জানিয়েছেন, তারা স্থানীয় জনগণের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের মতামত রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দিয়েছেন। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে সারা রাজ্যের জন্য যে নির্দেশ জারি করা হবে তারা সেটাই মান্য করবেন।
সোমবার স্বাস্থ্য বিভাগের নির্দেশাবলী জনসমক্ষে এলে আয়োজকরা সিদ্ধান্ত নেবেন তারা কিভাবে পুজো উদযাপন করবেন। দীর্ঘদিন লকডাউনের ফলে স্বভাবতই এবছর পুজোয় খুব একটা আরম্ভর হবেনা বলেই আশা ছিল। তবে বছরের সবথেকে বড় উৎসবকে জৌলুসহীনভাবে উদযাপন করবেন না বরাক উপত্যকার মানুষ এটাই স্বাভাবিক।
Comments are closed.