
মহাসড়কের ক্লক-টাওয়ারের পাশেই বসবে প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ীর মূর্তি, বিজেপির জমি পরিদর্শন সমাপ্ত
গতমাসে জেলা বিজেপির তরফে ঘোষণা করা হয়েছিল মহাসড়কের জিরো পয়েন্টে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ির ১০ ফুটের ব্রোঞ্জের মূর্তি বসানো হবে। যদিও এখনও মহাসড়কের কাজ শেষ হয়নি এবং এনিয়ে কিছু সামাজিক সংগঠন প্রতিবাদ জানিয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার কাছাড় জেলা বিজেপির তরফে এলাকা পরিদর্শন করে স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। মহাসড়কের জিরো পয়েন্টে ক্লক-টাওয়ারের পাশে যে খালি জায়গা রয়েছে, সেখানেই বসবে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর মূর্তিটি। জেলা বিজেপির সভাপতি কৌশিক রাই সহ অন্যান্য বরিষ্ঠ নেতারা বুধবার জমি পরিদর্শনে যান। কৌশিক এব্যাপারে বলেন, ‘আমরা স্থান নির্ধারণ করে নিয়েছি, সময়মতো মূর্তিটি বসানো হবে।’
প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর স্বপ্নের প্রকল্প ইস্ট-ওয়েস্ট করিডর শিলচর সহ সমগ্র বরাক উপত্যকাকে সারাদেশের সঙ্গে সরাসরি জুড়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে। সারাদেশে প্রকল্প শেষ হয়ে গেলেও বরাক উপত্যকা এখনও এর আওতায় পুরোপুরিভাবে আসেনি, কারণ মহা সড়কের প্রায় ৩২ কিলোমিটার কাজ ডিমা হাছাও জেলায় অসম্পূর্ণ। মূল প্রকল্পের অধীনে মহাসড়ক শেষ হয়েছে রংপুরে, সেটাকে জিরো পয়েন্ট বলে ঘোষণা করা হয়েছে।
প্রকল্পটির কথা প্রথমবার জনসমক্ষে এনেছিলেন সাংসদ রাজদীপ রায়। তিনি জানিয়েছিলেন, কলকাতায় মূর্তি নির্মাণের কাজ চলছে এবং আগামী ২৫ ডিসেম্বর শিলচরে মূর্তি স্থাপন করা হবে। বড় মাপের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এসে এই মূর্তি উন্মোচন করবেন, তবে এখনও তার নাম প্রকাশ্যে আনার সময় হয়নি।
রাজদীপ রায় এব্যাপারে বলেন, ‘প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারি বাজপেয়ী যখন এত বড় প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন, তখন শিলচরের কথা মাথায় রেখেছিলেন। এর ফলে সরাসরি আমরা দেশের উন্নততম সড়কের মানচিত্রে স্থান পেয়েছিলাম। তার আদর্শকের সামনে রেখে যখন আজ সারাদেশে বিজেপি শাসন করছে, আমরা তার প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর কোনও সুযোগ হাতছাড়া করতে চাই না। দলের তরফে বাজপেয়ীজির মূর্তি স্থাপনের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর কলকাতায় দশ ফুটের ব্রোঞ্জের মূর্তি বানানোর জন্য অর্ডার দেওয়া হয়েছে। মূর্তিটি প্রায় বানানো হয়ে গেছে।’
সম্প্রতি নর্থইস্ট ইন্ডিয়া কালেক্টিভ নামের সামাজিক সংগঠন দাবি জানিয়েছিলো, আগে মহাসড়কের কাজ শেষ করে তবেই মূর্তি বসানো হোক। সংগঠনের সদস্যরা বলেছিলেন, প্রয়োজনে তারা মূর্তি স্থাপন করে দেবেন, সরকার আগে মহাসড়কের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ করুক।
এব্যাপারে সাংসদ রাজদীপ রায়কে প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘মহাসড়কের কাজ চলছে, বিভিন্ন সমস্যা কাটিয়ে আমরা এখন অনেক দূর এগিয়ে এসেছি। আগামী বছর ডিসেম্বর মাসে মহাসড়কের অসম্পূর্ণ কাজ শেষ হয়ে যাবে। এটা নিয়ে শুধু রাজ্য সরকার নয় কেন্দ্র সরকারও অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পরিবহনমন্ত্রী নীতিন গাডকারি নিজে কাজটি দেখছেন। আমরা বেশ কয়েকবার এলাকা পরিদর্শন করেছি এবং পুজোর মরসুমে আবার সবাই সেখানে যাব, নিজের চোখে কাজ খতিয়ে দেখব এবং সেটা জনসমক্ষে তুলে ধরব। গণতন্ত্রে প্রত্যেকের প্রতিবাদ করার অধিকার রয়েছে, তবে সম্পূর্ণ তথ্য না জেনে এমন কথা বলার কোন মানে হয়না।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রয়াত প্রধানমন্ত্রীর অনুরাগীরা যদি এই কাজে আর্থিক যোগদান দিতে চান সেটা সম্ভব। জেলা বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ করে তারা চেক জমা দিতে পারেন, তবে এখনো অনলাইনে এই প্রক্রিয়াটি শুরু হয়নি। আমরা ভাবছি আগামীতে অনলাইনে সাধারণ মানুষকে এই সুযোগটি করে দেবো। এটি শুধুমাত্র শিলচর শহর নয় সারা উত্তর-পূর্বের কাছে একটি গৌরবের স্থান হয়ে থাকবে।’
অতীতে রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্র সরকারের মধ্যে মতবিরোধের ফলে মহাসড়কের কাজ পিছিয়ে গেছে। ১৯৯৮ সালে অটল বিহারী বাজপেয়ী ইস্ট ওয়েস্ট করিডর প্রকল্প ঘোষণা করেছিলেন। শিলচর থেকে গুজরাটের সৌরাষ্ট্র পর্যন্ত ফোর-লেন রাস্তা ঘোষণায় বরাক উপত্যকার ভবিষ্যৎ পাল্টে যাবে বলেই আশা করেছিলেন অনেকে।
Comments are closed.