কারফিউ চলাকালীন শিলচরে কাশ্মীরি শ্রমিকদের উপর আক্রমনের অভিযোগ, ভাইরাল ভিডিও অসত্য,পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বলে জানালেন পুলিশ সুপার
সোশ্যাল মিডিয়ায় একটি ভাইরাল হওয়া ভিডিওকে কেন্দ্র করে জল ঘোলা হচ্ছে। গতরাতে আপলোড করা এই ভিডিওতে দাবি করা হয়েছে যে শ্রীকোনা এলাকায় কাশ্মীরি শ্রমিকদের ওপর স্থানীয় জনতা আক্রমণ করেছে। শুধু তাই নয়, ভিডিওটিতে আরও দাবি করা হয়েছে যে কাছাড় পুলিশ এই আক্রমণের ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেয়নি। যদিও এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন কাছাড়ের পুলিশ সুপার মানবেন্দ্র দেব রায়। তিনি জানান, ভিডিওটি যে বানিয়েছে তাকে আটক করা হয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, গতকাল রাত নটার সময় শ্রীকোণার আলমবাগ এলাকায় শ্রমিক ও স্থানীয় গ্রামবাসীদের মধ্যে ঝগড়া হয়। স্থানীয় এক বাসিন্দা যিনি মদ্যপান করেছিলেন, পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় হঠাৎ করে শ্রমিকদের সঙ্গে বচসায় জড়িয়ে পড়েন।এরপর স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যাপারটাতে ঢুকে পড়েন এবং হুলুস্থুল বেঁধে যায়। ফলে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হয়, জানালেন কাছাড়ের পুলিশ সুপার। তবে কাছাড় পুলিশ ও আসাম পুলিশের বিরুদ্ধে ভিডিওতে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে তা অসত্য বলে তিনি উল্লেখ করেন।অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও অন্যান্য সিনিয়র কর্মকর্তা সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি সামলান বলেও তিনি জানান।
জানা যায়, ৩৪ জন শ্রমিক আলমবাগ এলাকায় একটি ক্যাম্পে নিযুক্ত রয়েছেন। তারা এনইআর ২ ট্রান্সমিশনের অধীনে কাজ করছেন। এই ৩৪ জন শ্রমিকের মধ্যে ১৬ জন শ্রমিক কাশ্মিরের বলে জানা যায়। পুলিশ সুপার আরো জানান, ” তারা খুবই দক্ষ কর্মী এবং তাদের বেশিরভাগ কর্মীরা কাশ্মীরে ফিরে যেতে চান না, কারণ এখানে তারা কাজ করছেন।এই অবস্থায় তাদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে তাদেরকে রামনগরের আন্তঃরাজ্য বাস টার্মিনালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে।”
এদিকে কাশ্মীরের ৪৫ বছর বয়সী আব্দুল হামিদ গরি নামের এক শ্রমিক অভিযোগ করেছেন যে স্থানীয়রা তাকে নির্মম ভাবে লাঞ্ছনা করেছে। অন্যদিকে পুলিশ সূত্র থেকে বলা হয়েছে, তাকে এবং এক স্থানীয় গ্রামবাসী ২৪ বছরের জিতেন দাসকে মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চেকআপের জন্য পাঠানো হয়েছিল। কিন্তু তাদের শরীরে কোনো আঘাতের চিহ্ন না থাকায় মেডিকেল অফিসার তখনই তাদেরকে ছেড়ে দেন।
কাছাড়ের পুলিশ সুপারের মতে, রাজ্য সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনকে হেয় করার জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে এই ভিডিওটি বানানো হয়েছে। ঘটনাটি এমন কিছু ছিল না, সামান্য ঝগড়া মাত্র। পুলিশ খবর পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছায়। কাজেই ভিডিওটিতে যে দাবি করা হয়েছে তা কল্পিত। অপরাধীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে শ্রমিকরা এবং ‘ওয়ানী কনস্ট্রাকশন’র কন্ট্রাক্টর আরো একটি ভিডিও প্রকাশ করে বলেছেন যে আগের বানানো ভিডিওটিতে সত্যতা ছিলনা। আসাম সরকার তথা স্থানীয় পুলিশের বিরুদ্ধে আগের ভিডিওটিতে অবমাননাকর শব্দ প্রয়োগের জন্য নতুন ভিডিওটিতে ক্ষমা চাওয়া হয়েছে।
পুলিশ সুপার সবশেষে জানান, ব্যাপারটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ধরনের ভিডিও আপলোড করার পেছনে অন্য কোন উদ্দেশ্য রয়েছে কি-না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Comments are closed.