Also read in

ইউ এস এর 'বিতর্কিত' সভায় হাজির হয়ে নতুন বিতর্ক উস্কে দিলেন সভাপতি বাবুল, ডি এস এ সচিব বাদশা জানালেন, 'আমরা কাউকে পাঠাই নি'

বিতর্কের জন্য শিরোনামে থাকা উধারবন্দ স্পোর্টস অ্যাসোসিয়েশনের (ইউ এস এ) দ্বিবার্ষিক সাধারণ সভায় উপস্থিত হয়ে আরো বিতর্ক উস্কে দিলেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি বাবুল হোড়। অথচ সংস্থার সভাপতি যে ইউএসএ’র বৈঠকে গেছেন সে বিষয়ে নাকি কিছুই জানেন না শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং। বৃহস্পতিবার ইউএসএ’র বর্তমান কমিটি তাদের সাধারণ সভার ডাক দিয়েছিল। যা নিয়ে ইতিমধ্যেই বিতর্ক চলছে।

এই সভায় উপস্থিত থাকার জন্য শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব ও সভাপতিকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ইউ এস এর বর্তমান কমিটি। ঠিক একইভাবে যারা ইউএসএ কে নতুনভাবে গড়ে তোলার প্রক্রিয়ায় হাত দিয়েছেন, তারাও কিন্তু শিলচর ডিএস এর সভাপতি ও সচিবকে তাদের সাধারণ সভায় উপস্থিত থাকার আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। আগামী ১ আগস্ট তাদের সেই সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। এসবের মধ্যেই বৃহস্পতিবার ইউ এস এর বর্তমান কমিটির সভায় হাজির হন ডিএসএ সভাপতি বাবুল হোড়। তিনি একা নন, সঙ্গে ছিলেন অন্যতম সহ-সভাপতি সুজন দত্ত। এ নিয়ে যখন সংস্থার সচিব বিজেন্দ্র প্রসাদ সিং কে প্রশ্ন করা হয় তখন তিনি সাফ জানিয়ে দেন, সংস্থার পক্ষ থেকে কাউকেই বৃহস্পতিবার ইউএসএ’র সভায় যাবার জন্য বলা হয়নি। শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সচিব বলেন, ‘দেখুন, আমাদের পক্ষ থেকে কাউকেই ইউএসএ’র সভায় যেতে বলা হয়নি। আমিই বা কেন সংস্থার কোনো সদস্যকে এমনটা বলতে যাব?’ এখানেই না থেমে বিজেন্দ্র আরো বলেন, ‘যেহেতু ইউএসএ তে দুটো পক্ষ উঠে এসেছে, তাই আমাদের কোনো পক্ষের মিটিংয়েই যাওয়া উচিত নয়। আমায় এমনটাই পরামর্শ দিয়েছেন সংস্থার অন্যতম সহ-সভাপতি (প্রশাসন) ড: সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য। সেই অনুসারে আমি কাউকেই কোনো মিটিংয়ে যাওয়ার কথা বলিনি। অথবা কেউ আমায় এ বিষয়ে কিছু জিজ্ঞেস করেনি। এরপরও যদি কেউ গিয়ে থাকেন, তাহলে সেটা আমার জানা নেই। সংস্থারও জানা নেই। কারণ সংস্থার পক্ষ থেকে সচিব হিসেবে তো আমি কাউকেই বলিনি।’

এ নিয়ে সভাপতি বাবুল হোড়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘ওরা তো আমায় ব্যক্তিগতভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছিল। তাই আমি সেখানে গেছি। সেটা তো আমি যেতেই পারি। এছাড়া আমি তাদের সভা শেষ হবার পর গিয়েছিলাম।’ এখানে স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠতে পারে ইউএসএ নিয়ে যখন একটা বিতর্ক চলছে, দুটো পক্ষ উঠে এসেছে, সেখানে শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি হিসেবে বাবুল হোড় কি শুধু ব্যক্তিগত আমন্ত্রণের ভিত্তিতে এমন একটা বিতর্কিত সভায় যেতে পারেন? তাও আবার সংস্থার সচিবকে কিছু না জানিয়ে? এতে কি বার্তা গেল ক্রীড়ামহলে?

মনে রাখবেন শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থা কিন্তু সচিব কেন্দ্রিক। সভাপতি কেন্দ্রিক নয়। এ কথাটা কিন্তু সংস্থার সভাপতি বাবুল বাবু নিজেই জোর গলায় বলে থাকেন। ‌ সত্যি যদি এমনটা হয়, তাহলে তিনি আজ সচিবকে না জানিয়ে বিতর্কিত সভায় গেলেন কেন? সংস্থা যখন কাউকে অনুমতি দেয়নি, তখন তিনি ব্যক্তিগত আমন্ত্রণের ভিত্তিতে কিভাবে গেলেন। তাকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল সংস্থার সভাপতি হিসেবে। অথচ এক সূত্র অনুসারে কদিন আগে যখন ডিএসএস সচিব দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি মীমাংসার করার পরিকল্পনা নিয়েছিলেন, তখন নাকি ‘এই বিতর্কে তার থাকাটা ঠিক হবে না’ এই বলে বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছিলেন সভাপতি বাবুল। একজন অভিভাবক হিসেবে এই বিতর্কিত ইস্যু সমাধানের কোনো উদ্যোগই তিনি নেননি। তাহলে আজ কেন তিনি সেই বিতর্কিত সভায় উপস্থিত হলেন।

তাহলে কি সভাপতি বাবুল শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থাকে আলাদাভাবে নিজের মত করে চালাতে চাইছেন? যে ইস্যু নিয়ে সভাপতি হিসেবে তিনি এতদিন কোনো উদ্যোগ নেননি, আজ হঠাৎ করে কেন সভায় উপস্থিত হয়ে গেলেন। শিলচর ডি এস এতে যে ফাটল রয়েছে তা আজকের ঘটনায় পরিষ্কার হয়ে গেছে। এখানে কিন্তু রাজনীতির বিষয়টাও উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। ইউ এস এর বর্তমান কমিটির এক সদস্য (যিনি ডি এস এর অন্যতম শাখা সচিব) কংগ্রেসের লোক। তাকে সমর্থন করার জন্য কি আজকের সভায় উপস্থিত হয়েছিলেন কংগ্রেসী বাবুল হোড়? তাহলে বিষয়টা কি কংগ্রেস বনাম বিজেপির?

আরও একটা বিষয় হচ্ছে, ইউ এস এর বর্তমান কমিটির সভায় উপস্থিত থেকে বাবুল বাবু কি এই কমিটিকেই স্বীকৃতি দিতে চাইছেন? ইউএসএ নিয়ে যখন দুটো পক্ষ উঠে এসেছে, তখন এ নিয়ে সিদ্ধান্ত নেবার কথা তো শিলচর জেলা ক্রীড়া সংস্থার। ‌ এমনকি দুপক্ষের বৈঠকে অবজারভার হিসেবে কাউকে পাঠাতে চাইলে সে ব্যাপারে সংস্থার সিদ্ধান্ত হওয়া উচিত। তাহলে কেন ডিএসএর গোটা কমিটিকে অন্ধকারে রেখে ইউ এস এর সভায় হাজির হয়ে তাদের স্বীকৃতি দিতে গেলেন বাবুল বাবু? সংস্থার সচিব যখন সাফ জানিয়ে দিয়েছেন ডিএসএ থেকে কাউকে পাঠানো হয়নি, তাহলে সভাপতি সেই সভায় কিভাবে উপস্থিত থাকতে পারেন?

আজকের ঘটনায় আরও একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে, তা হচ্ছে ডিএস এর লবিবাজি। এখন দেখার বিষয় আগামী দিনে পরিস্থিতি কোন দিকে মোড় নেয়?

Comments are closed.