Also read in

বনধে ব্রহ্মপুত্রে ব্যাপক প্রভাব, শিলচর করিমগঞ্জ স্বাভাবিক হলেও হাইলাকান্দিতে রেল অবরোধের প্রচেষ্টা, স্থানে স্থানে বিক্ষোভ

নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল,২০১৬-এর বিরুদ্ধে ৬০টি সংগঠনের ডাকা ‘আসাম বন্ধে’ বরাক উপত্যকা প্রায় স্বাভাবিক রয়েছে। উপত্যকার প্রধান শহর শিলচরে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক; দোকানপাট খুলেছে – ব্যাঙ্ক, অফিস-আদালতে উপস্থিতি ও স্বাভাবিক। ইন্ডিজেনাস পিপলস প্রটেকশন ফোরাম এর সদস্যরা আজ সকালে ৩৭ নং জাতীয় রাজপথ এবং এয়ারপোর্টের রাস্তায় ২ ঘণ্টা ধরে অবরোধ সৃষ্টি করেছিল। পরে পুলিশ এসে এদের হটিয়ে দেয়।

করিমগঞ্জ থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে যে, সীমান্ত শহরেও জীবনযাত্রা স্বাভাবিক রয়েছে। আমাদের হাইলাকান্দি প্রতিনিধি জানিয়েছেন, অসম বনধের তেমন কোন প্রভাব পড়েনি হাইলাকান্দি জেলায়ও।  অফিস, আদালত, বাজার, হাট, ব্যাঙ্ক, যানবাহন চলাচল সবই স্বাভাবিক রয়েছে।  যদিও সকালে মোহাম্মদপুর রেল স্টেশনে কৃষক মুক্তি ও ছাত্র মুক্তির সদস্যরা জড়ো হয়ে বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে ভৈরবী- শিলচর যাত্রীবাহী ট্রেন অবরোধ করে। কিন্তু পুলিশ তাৎক্ষণিকভাবে অবরোধকারীদের সরিয়ে  দেয় এবং ঘটনাস্থল থেকে কেএমএসএসের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন লস্কর সহ মোট তেরোজনকে আটক করে লালা থানায় নিয়ে আসে।

হাইলাকান্দি পুলিশের ডিএসপি বর্মন, লালা থানার ওসি মনিরুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশ সিআরপিএফ বাহিনী বনধ সমর্থকদের সরিয়ে দিয়ে রেল চলাচল স্বাভাবিক করে তুলে। রেল অবরোধ স্থলে ব‍্যানার নিয়ে দাঁড়িয়ে কৃষক মুক্তি ও ছাত্র মুক্তির নেতা জহির উদ্দিন লস্কর, আব্দুল মালিক,  ফরিদ উদ্দিন লস্কর, আফজল হোসেন তাপাদার,  কবির উদ্দিন লস্কর, খায়রুল ইসলাম, হানিফ আহমেদ মজুমদার, জহিরুল ইসলাম,  ইকবাল হোসেন বড়ভুইয়া,  কায়ুম উদ্দিন লস্কর
প্রমুখ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ জানিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। পুলিশ তাদের প্রত্যেককে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

Business as usual in Silchar

এদিকে এদিন দুই সংগঠনের বিভিন্ন আঞ্চলিক কমিটির পক্ষ থেকে লালার আব্দুল্লাপুর, সুদর্শনপুর, বন্দুকমারা, ভটরবাজার,  নতুনবাজার, চিপরসাংগন,  সামারিকোনা, আলগাপুর,  চন্দ্রপুর বাইপাস ইত্যাদি এলাকায় টায়ার জ্বালিয়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের প্রতিবাদ জানানো হয়। কৃষক মুক্তির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক জহির উদ্দিন জানান, পুলিশ লালায় তেরোজন এবং আলগাপুরে সাতজন পিকেটারকে গ্রেফতার করেছে। যদিও জেলার অন্য কোথাও গ্রেফতারের খবর নেই।  হাইলাকান্দি জেলা সদর সহ লালা, কাটলিছড়া, মনিপুর, সাহাবাদ, কৃষ্ণপুর, জামিরা, পাঁচগ্রাম, আলগাপুর,  মাটিজুরী ইত্যাদি এলাকায় জনজীবন সম্পুর্ন স্বাভাবিক রয়েছে। বনধের ফলে  কোথাও কোন অপ্রীতিকর ঘটনার খবর নেই। তবে রাস্তা ঘাটে, হাট বাজারে জনতার উপস্থিতি তুলনামূলক ভাবে কম। জেলার বিভিন্ন স্থানে পুলিশ সিআরপিএফ বাহিনী টহল দিচ্ছে।

 

এদিকে, ব্রহ্মপুত্র উপত্যকায় বনধের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, জনজীবন প্রায় স্তব্ধ। রাজধানী গুয়াহাটি মহানগরী সহ রাজ্যের বিভিন্ন স্থানে টায়ার জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল প্রায় স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে। টু হুইলার এবং কয়েকটা ব্যক্তিগত যানবাহন চলাচল করছে। ফেন্সি বাজার এবং বেলতলা এলাকায় কয়েকজন বিক্ষোভকারীকে ইতিমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য পরিবহণ নিগমের বাসগুলো সশস্ত্র প্রহরায় চলাচল করছে। স্থানে স্থানে রেল অবরোধের প্রচেষ্টা চলছে। সরকারি সাবধান বাণী সত্ত্বেও অফিস-আদালতেও উপস্থিতির হার নগণ্য।

কৃষক মুক্তি সংগ্রাম সমিতি এবং অসম জাতীয়তাবাদী যুব ছাত্র পরিষদের সমর্থক-কর্মীরা বনধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করছেন। কংগ্রেস দল এই বনধকে সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছে। রাজ্যের কোন স্থান থেকেই
বড় ধরনের কোনো অপ্রীতিকর ঘটনার খবর পাওয়া যায়নি।

Comments are closed.