'এবার বরাক উপত্যকায় হিমন্ত জুজু চলবে না', ভোট দিয়ে জানালেন আত্মবিশ্বাসী সুস্মিতা
হিমন্ত বিশ্বশর্মা মনে করেন বরাক উপত্যকার ভোটাররা তার পকেটে রয়েছেন। তিনি যা বলবেন, ভোটাররা তাই করবেন। তবে বরাক উপত্যকা এবার হিমন্তর চ্যালা-চামুন্ডাদের বরদাস্ত করবে না। এবার মহাজোট উপত্যকায় বাজিমাত করবে। সেই সঙ্গে একটা যোগ্য জবাব পাবেন হিমন্ত। এমনটাই জানালেন সর্বভারতীয় মহিলা কংগ্রেসের সভানেত্রী সুস্মিতা দেব।
পয়লা এপ্রিল দিনটি কংগ্রেস নেত্রীর জন্য এক আলাদা গুরুত্ব রাখে। কারণ এই দিনটি তার প্রয়াতঃ পিতা ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সন্তোষ মোহন দেবের জন্মবার্ষিকী। আর এবার এই দিনটিতেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে বিধানসভা নির্বাচন। তাই গুরুত্বপূর্ণ এই দিনটাতে প্রয়াতঃ পিতাকে স্মরণ করেই যাত্রা শুরু করেন সুস্মিতা। তারাপুর কালী মোহন রোড স্থিত বাসভবনে প্রয়াত সন্তোষ মোহন দেবকে শ্রদ্ধা জানিয়ে সুস্মিতা বলেন, ‘বাবা আজও আমার কাছে প্রেরণার উৎস।’
গত লোকসভা নির্বাচনে হারতে হয়েছিল তাকে। বরাক উপত্যকাতেও বাজে ফল করেছিল কংগ্রেস। তা সত্ত্বেও এবারের বিধানসভা নির্বাচন নিয়ে আত্মবিশ্বাসী সুস্মিতা। কিন্তু কেন? জবাবটা নিজেই ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ। সুস্মিতা বললেন, ‘এবার আমরা প্রতিটি আসনে যোগ্য প্রার্থী দাঁড় করিয়েছি। অন্যদিকে, ভারতীয় জনতা পার্টি যেসব প্রার্থীদের দাঁড় করিয়েছে তাদের অধিকাংশই কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই। এটা ভারতীয় জনতা পার্টির শীর্ষ নেতৃত্বের একটা রণকৌশল। ওরা জেনে শুনেই বরাক উপত্যকায় দুর্বল প্রার্থী দিয়েছে। যাতে করে রিমোট কন্ট্রোল টা শীর্ষ নেতৃত্বের হাতেই থাকে।’
প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে কংগ্রেস দলের মধ্যেও একটা সময় তীব্র অসন্তোষ ছিল। প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে অসম প্রদেশ কংগ্রেসের হাই কমান্ডের সঙ্গে মতানৈক্য দেখা দিয়েছিল সুস্মিতা। এনিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। এ নিয়ে প্রশ্ন করা হলে শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ বলেন, ‘যদি সত্যিই কোনো ইস্যু থাকতো তাহলে আমি সাংবাদিক সম্মেলন ডেকে পার্টির বিরুদ্ধে কথা বলতাম। কিন্তু, আমি এমন কোনো কিছুই করিনি। তবে হ্যাঁ, কয়েকটি ইস্যু নিয়ে আমার সমস্যা ছিল, সেগুলোর বিরুদ্ধে আমি মুখ খুলেছি। আর আমি বিশ্বাস করি কংগ্রেসের মতো একটা গণতান্ত্রিক পার্টি তে এমনটা করার আমার অধিকার রয়েছে।’
নির্বাচন প্রচারের সময় আরেকটি বিষয় নিয়েও সুস্মিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। সেটা হচ্ছে সিটিজেনশিপ আমেন্ডমেন্ট অ্যাক্ট (সিং এ এ) নিয়ে জনসমক্ষে এর বিরোধিতা করেননি শিলচরের প্রাক্তন সাংসদ। এ নিয়ে সরাসরি মুখ খুলতে চাননি সুস্মিতা। তবে তিনি বলেন, ‘সি এ এ দিয়ে লোকেদের বোকা বানাচ্ছে ভারতীয় জনতা পার্টি। সি এ এ তে একটা কলাম রয়েছে যেখানে আপনাকে উল্লেখ করতে হবে যে বাংলাদেশের কোন স্থান থেকে এসেছেন। তবে কোনো বাঙালি এটা বলবে না যে সে বাংলাদেশি। আর বাংলাদেশের কোন জায়গা থেকে এসেছে। আমাদের প্রথম এটা বুঝতে হবে যে সি এ এ শুধু বিদেশীদের জন্য। যারা ইতিমধ্যেই ভারতে রয়েছেন তাদের জন্য নয়।’
এদিকে, বৃহস্পতিবার বেলা ১:১৫ মিনিট পর্যন্ত নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুসারে শিলচরে প্রায় ৪৪.২১ শতাংশ ভোট দান হয়েছে। তবে কাছাড়ের ক্ষেত্রে সংখ্যাটা ৪৬.৯৮। এর অর্থ হচ্ছে জেলার তুলনায় ভোটদানের ক্ষেত্রে শহর শিলচর কিছুটা পিছিয়ে রয়েছে।
Comments are closed.