
টাকা ছিনতাই করতে গিয়ে শিলচরে আটক বিহারের রবি সিং; "ধরা পড়তে পারে পুরো গ্যাং," বলছে পুলিশ
জেলায় যখন একের পর এক প্রকাশ্যে টাকা ছিনতাইয়ের ঘটনা শুধু বেড়েই চলেছে, অনেকে বলছেন এতে অভিজ্ঞ এবং প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ছিনতাইবাজের দল কাজ করছে। সাধারণ পোশাকে ব্যাংকের আশেপাশে ঘুরে এক দুষ্কৃতীকে ধরতে সমর্থ হয়েছে পুলিশ। আশা করা যাচ্ছে এই সূত্র ধরে পুরো গ্যাংকে আটক করা সম্ভব হবে। রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট সংলগ্ন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে সোমবার দুপুরে এক ব্যক্তি তিন লক্ষ টাকা তুলে বেরোনোর পর এক দুষ্কৃতী বেহুশ করার ঔষধ ছিটিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে সেখানে আগে থেকেই সাধারণ পোশাকে পুলিশের আধিকারিকরা ঘোরাফেরা করছিলেন। সাধারন মানুষের সহযোগিতায় তারা দুষ্কৃতীকে আটক করতে সমর্থ হন।
রাঙ্গিরখাড়ি থানার ইনচার্জ প্রণব কুমার ডেকা বলেন, “সম্প্রতি কয়েকটি ঘটনার পর পুলিশের তরফে বিভিন্ন পদ্ধতি হাতে নেওয়া হয়েছে। অতীতে দিনের বেলা যে সময়ে ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটেছে, সেই সময় ধরে শহরের ব্যাংকগুলোর আশেপাশে সাধারণ পোশাকে পুলিশের অভিজ্ঞ আধিকারিকরা ঘোরাফেরা করেছেন। সোমবার হাতেনাতে ধরা পড়েছে এক দুষ্কৃতী, অবশ্যই সাধারণ মানুষ এই প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছেন বলেই সাফল্য পাওয়া গেছে। রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট সংলগ্ন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংক থেকে এক ব্যক্তি তিন লক্ষ টাকা তোলেন, কোনওভাবে দুষ্কৃতী সেই খবর সংগ্রহ করে।
টাকা নিয়ে বেড়োনোর সময় দুষ্কৃতী সেই লোকটির ওপর একটি বিশেষ স্প্রে ছড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে লোকটির বিচক্ষণতার ফলে তার নাকে মুখে স্পেস ছড়িয়ে পড়েনি, শরীরের অন্যান্য অংশে লেগে যায়। সেখানে পাহারায় ছদ্মবেশে থাকা পুলিশ আধিকারিক এবং সাধারণ মানুষ এগিয়ে আসেন, দুষ্কৃতীকে আটক করা হয়। উপস্থিত সাধারণ মানুষ তাকে কিছুটা উত্তম-মধ্যম দিয়েছেন। এখন সে আমাদের অধীনে রয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদ চলছে এবং আমাদের ধারণা তার সূত্র ধরে পুরো গ্যাং আটক হবে।”
গত কয়েক মাস ধরে শহরের বিভিন্ন এলাকায় প্রকাশ্যে তাণ্ডব চালিয়ে যাচ্ছে টাকা ছিনতাইকারী গ্যাং। সোমবার দুপুরে তারাপুরে এক ব্যক্তির তিন লক্ষ টাকা ছিনতাই হয়েছে। প্রায় একই সময়ে রাঙ্গিরখাড়ি পয়েন্ট সংলগ্ন পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকে চিন্তায় করতে গিয়ে আটক হয়েছে বিহার থেকে আসে দুষ্কৃতী রবি সিং, তবে সৌভাগ্যবশত সে টাকা ছিনতাই করতে পারেনি বরং পুলিশের জালে ধরা পড়ে।
হয়ত জিজ্ঞাসাবাদে তার কাছ থেকে এমন অনেক তথ্য বেরোবে যার সাহায্যে আগামীতে দুষ্কৃতীদের ধরতে সমর্থ হবে পুলিশ। এদের আটক করলেও যে টাকাগুলো তারা ছিনতাই করেছে, সেটা আদৌ উদ্ধার হবে কিনা এব্যাপারে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।
ঘটনায় আরেকটা প্রশ্ন উঠছে, দুষ্কৃতীরা কিভাবে আগে থেকে খবর পায় কোন ব্যক্তি বড় অঙ্কের টাকা ব্যাংক থেকে তুলছেন? সোমবার দুপুরে যদি দুষ্কৃতীকে আটক করে না যেত, তাহলে সে তিন লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হতে পারত। তবে কি শহরের ব্যাংকগুলোর ভেতরেই এমন কিছু লোক রয়েছে যাদের সঙ্গে ছিনতাইবাজ দলের সরাসরি যোগাযোগ থাকছে? তারাই আগে থেকে খবর বাইরে পাঠিয়ে দিচ্ছে এবং ছিনতাই বাজরা সেইমতো পরিকল্পনা করে টাকা লুটে নিতে সমর্থ হচ্ছে? পুলিশের আধিকারিকরা বলছেন তারা সবগুলো সম্ভাবনা খতিয়ে দেখছেন এবং আসল রহস্য কোথায় রয়েছে সেটা আগামীতে বেরিয়ে আসবে।
Comments are closed.