Also read in

অল্প বয়সে চলে গেলেন বিজেপি নেত্রী পিয়ালী চৌধুরী, শোকস্তব্ধ দল সহ শহরবাসী

ভারতীয় জনতা পার্টির মহিলা মোর্চার কাছাড় জেলা কমিটির সহ-সভানেত্রী তথা জনপ্রিয় ব্যক্তিত্ব পিয়ালী চৌধুরীর মৃত্যুতে দলের প্রত্যেক স্তরের কার্যকর্তা সহ শহরবাসী শোকস্তব্ধ। পরিবার সূত্রের খবর অনুযায়ী বুধবার রাতে কোনও এক কারনে তার গায়ে আগুন ধরে যায়। শরীরের প্রায় ৮০ শতাংশ পুড়ে যায় তার। তড়িঘড়ি শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় এবং সেখানে এক সময় ভেন্টিলেশনে রেখে অক্সিজেনের সাহায্যে চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বৃহস্পতিবার শেষ রাতে তার মৃত্যু হয়। শুক্রবার দুপুরে শিলচর শ্মশানঘাটে তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে।

শিলচরের বিধায়ক দীপায়ন চক্রবর্তী থেকে শুরু করে প্রত্যেকেই তার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে নিজের অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে দীপায়ন চক্রবর্তী লিখেছেন, “আমি নির্বাক, নিস্তব্ধ। পিয়ালী নেই, সত্যি মৃত্যুটা মেনে নিতে পারছি না।” এছাড়া দলের প্রত্যেক স্তরের সদস্যরা নিজেদের অনুভূতি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে তুলে ধরেছেন।

মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৩৮ বছর। তার সুন্দর ব্যবহার এবং কর্মদক্ষতার জন্য পরিচিত মহলে ছিলেন অত্যন্ত জনপ্রিয়। তবে হঠাৎ করে কেন কেমন কাটলো, এব্যাপারে পরিবারের লোকেরা এখনও স্পষ্ট কিছু বলতে পারছেন না। তার স্বামী ধ্রুবজ্যোতি চৌধুরী শারীরিকভাবে কিছুটা অসুস্থ এবং শাশুড়ি বয়স্ক। এই ঘটনায় তারা একেবারেই ভেঙে পড়েছেন।

পরিচিত মহল সূত্রে জানা গেছে, সুভাষনগর এলাকায় ছোট থেকে বড় হয়েছেন পিয়ালি চৌধুরি। তার বাবা প্রাক্তন ব্যাঙ্ক কর্মী দিলীপ চক্রবর্তী। মনমোহন বালিকা বিদ্যালয়ে তিনি পড়াশোনা করেছেন, পরবর্তীতে গুরুচরণ কলেজে। একসময় ব্যবসায়ী বেনীমাধব চৌধুরীর ছেলে ধ্রুবজ্যোতি চৌধুরীর সঙ্গে তার প্রেম হয় এবং প্রায় ১২ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়।

একবার ভারতীয় জনতা পার্টির ব্যানারে তিনি শিলচর পুরসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। এছাড়া বহু বছর ধরে দলের একনিষ্ঠ কর্মী হিসেবে পরিশ্রম করেছেন। প্রত্যেক নির্বাচনে দলের মহিলা মোর্চার অন্যতম দক্ষ নেত্রী হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করেছেন।

বুধবার রাত তিনটে নাগাদ পরিবারের সদস্যরা হঠাৎ করেই দেখতে পান তার গায়ে আগুন। তার নিজের পরিবারের সদস্য ছাড়াও বাড়িতে রয়েছেন ভাড়াটে পরিবার। সবাই মিলে অনেক চেষ্টা করে আগুন সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। রাতেই তাকে শিলচর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। হাসপাতালের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন শরীরের প্রায় বেশিরভাগ অংশ আগুনে ঝলসে গেছিল। প্রথমে তাকে বার্ন ইউনিটে চিকিৎসা করা হয়, এরপর ভেন্টিলেশনে অক্সিজেনের সাহায্যে রাখা হয়। ধীরে ধীরে শরীরের অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ গুলো বিকল হতে থাকে এবং দ্রুত অক্সিজেনের মাত্রা নামতে থাকে। শেষমেষ বৃহস্পতিবার রাত তিনটে কুড়ি মিনিটে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।

মৃতদেহের পোস্টমর্টেমের পর সেটা শুক্রবার সকালে পরিবারের হাতে তুলে দেওয়া হয়। বাড়িতে অনেকেই এসে নিজের শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে গেছেন। এদিন দুপুরে শিলচর শ্মশানঘাটে মৃতদেহের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে। ঘটনায় পুরো এলাকার মানুষ স্তম্ভিত এবং শোকস্তব্ধ।

Comments are closed.

error: Content is protected !!